Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

গাছ লাগানোর এখনই সময়

Icon

নূরজাহান নীরা

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রতিনিয়তই বাড়ছে পৃথিবীর উষ্ণতা। এ উষ্ণতার প্রভাবে সৃষ্টির স্বাভাবিক নিয়মের পরিবর্তন হচ্ছে। যে নিয়মের মধ্যে আমাদের জীবন ও জীবিকা জড়িত। জড়িত আমাদের পরিবেশ পরিস্থিতি। জড়িত আমাদের বেঁচে থাকা। এ উষ্ণতা কমাতে আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। লাগাতে হবে প্রচুর গাছ। গাছ অক্সিজেন দিয়ে যেমন বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা কমিয়ে রাখে, তেমনি বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করেও বায়ুমণ্ডলের দূষণ কমায়। তাই গাছ লাগানোর বিকল্প নেই। গ্রীষ্ম-বর্ষা-শরৎ, এ তিন ঋতুতে থাকে মৌসুমি ফলের সমাহার আর এ ফলের বীজ থেকে আমরা সহজে কম খরচে চারা উৎপাদন করে গাছ রোপণ করতে পারি। যদি আমরা সবাই নিজের জায়গা থেকে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিই তাহলে অনেক গাছ রোপণ সম্ভব। একটি দেশের জন্য যে পরিমাণ বনভূমি থাকা দরকার, আমাদের দেশে রয়েছে তার চেয়ে অনেক কম। দেশের আয়তনের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা উচিত। আমাদের দেশে সম্ভবত ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ বনভূমি আছে। দিনে দিনে এ হার কমেই যাচ্ছে। আর এই কমে যাওয়ার ভয়াবহতা আমরা এবার অনেকটা অনুভব করতে পেরেছি, ৪১ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়তে দেখা গেছে যা বাংলাদেশের মানুষের জন্য খুবই কষ্টের এবং আতঙ্কের। তীব্র দাবদাহের কারণে হিটস্ট্রোক করে বিভিন্ন স্থানে মানুষ মারা যাওয়ার খবরও শোনা গেছে। অসুস্থ হয়েছে শিশু-বৃদ্ধসহ সব বয়সি মানুষই। একটা সময় ছিল, তখন বৃষ্টি এলেই বাচ্চারা ভিজত, বৃষ্টিতে খেলত। বর্ষা মানেই তখন অন্যরকম আনন্দ ছিল। গ্রাম বাংলার বর্ষার রূপ নিয়ে লেখা সাহিত্য এখনো মনকে দোলা দিয়ে যায় পরম মায়ায় ও উদ্দীপনায়। অথচ এখন বৃষ্টি হলে বজ পাতের ভয়ে বৃষ্টি শেষ হওয়ার আধাঘণ্টা পর ঘর থেকে বের হওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কেননা বজ পাতে মানুষ মারা যাওয়ার সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বজ পাতে মৃত্যু আতঙ্ক যেন ছায়ার মতো পিছু নিয়েছে। বৃষ্টিমুখর আনন্দ আজ আতঙ্কে রূপ নিয়েছে। দিনে দিনে জলবায়ুর এ পরিবর্তন আমাদের জন্য অশনিসংকেত। অসময়ে অতিবৃষ্টি, বর্ষাকালে খরা, বন্যা, শিলাবৃষ্টি, অধিক বজ পাতসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। এখনই সজাগ না হলে পরিণতি হতে পারে আরও ভয়াবহ। তাই ব্যাপক হারে বৃক্ষ রোপণ করতে হবে আমাদের। একই সঙ্গে নদী-নালা, খাল-বিল রক্ষা করতে হবে। নদী মাতৃক দেশ আমাদের। সুজলা সুফলা এ দেশ অপরিকল্পিত ও অপরিণামদর্শী কর্মের কারণে তার রূপ হারাতে বসেছে। খাল-বিল ভরাট, বাঁধ দেওয়া ও নদী দখলের কারণে অনেক নদীই শুকিয়ে গেছে, হয়েছে গতির পরিবর্তন। যার কারণে অসময়ে বন্যা, অধিক খরা বিগত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে। নদীগুলো খনন করে এর গতি ফেরাতে হবে। খাল-বিলের বাঁধ সরিয়ে স্বাভাবিক গতিতে আনতে হবে। সব জলাশয় পুনরুদ্ধার করতেই হবে। প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণ থেকে আমাদের ফিরতে হবে, না হলে মরুভূমির মতো বিপর্যয়কর পরিস্থিতি ধেয়ে আসবে আমাদের দিকে।

ভাইস চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ

 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম