শিক্ষকদের অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর হোক
সেলিম আল রাজ
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বেসরকারি শিক্ষকরা যে অনেক কষ্টে আছে তা মুখে বলতে হয় না, চোখ দেখলেই অনুভব করা যায়। তাদের চোখেমুখেই ফুটে উঠেছে অর্থনৈতিক বৈষম্যের প্রতিচ্ছবি। গতিময় জীবনে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে আছেন। মানসিকভাবেও হয়ে পড়েছেন বিপর্যস্ত। সরকার কি তাদের কান্না দেখবেন না, তাদের কথা শুনবেন না? আন্দোলনরত শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাওয়ার আশায় আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সারা দেশের হাজার হাজার শিক্ষক জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দিনরাত পার করছেন। তাদের একটাই উদ্দেশ্য শিক্ষাব্যবস্থায় জাতীয়করণ চান। এটা জাতি গড়ার কারিগরদের ন্যায্য দাবি, এটা সময়ের দাবি।
বারবার প্রশ্ন উঠছে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণে সরকারের সদিচ্ছা ও সুষ্ঠু নীতিমালার অভাব। এক্ষেত্রে আরেক অন্তরায় শিক্ষা ক্যাডারের গুটিকয়েক শিক্ষকের প্রতিবন্ধকতা। অথচ প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মাসিক বেতন, টিউশন ফি ও আনুষঙ্গিক বাবদ যা আয় হয় তার উপযুক্ত ব্যবহার করলেই জাতীয়করণ সম্ভব। এ বিষয় সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান প্রধানমন্ত্রীকে এক সাক্ষাতে জানিয়েছিলেন, দেশের ৩০ হাজার বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা জাতীয়করণ হলে সরকারের অতিরিক্ত এক হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা প্রদান অসম্ভব কিছু নয়। যেখানে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত ও ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশে ১৯৭৩ সালে ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন। বর্তমান সরকার ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২৭১টি কলেজ জাতীয়করণ করেছেন। করোনা মহামারিতে চিকিৎসা সংকট কাটাতে আট হাজার ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ দেন। দুঃখজনক বিষয় দেশের এমপিওভুক্ত প্রায় ছয় লাখ শিক্ষক কর্মচারীকে জাতীয়করণে কোনো উদ্যোগ নেই, যা হতাশাজনক। এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে জীবনযাপনে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন। স্নাতক পর্যায়ে সরকারি বিধিমোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত ননএমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবস্থা আরও করুণ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ জরুরি। তাই সরকারের কাছে অনুরোধ, জাতীয়করণের মাধ্যমে মহান পেশায় নিয়োজিত সব স্তরের শিক্ষকদের সম-অধিকার নিশ্চিত করা হোক।
প্রভাষক, গৌরীপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ, ময়মনসিংহ
