Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

নারী স্বাধীনতার অন্তরায় বাল্যবিবাহ

Icon

মোশারফ হোসেন

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাধারণত অপ্রাপ্ত বয়সে অর্থাৎ বিয়ের উপযুক্ত বয়সের আগে অনুষ্ঠিত বিয়েকে বাল্যবিবাহ বলে। ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-বাংলাদেশে শতকরা ৬৬ ভাগ মেয়ের বিয়ে ১৮ বছরের আগেই হয়ে থাকে। একই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এক-তৃতীয়াংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে থাকে ১৫ বছরের আগেই। বাল্যবিবাহের কারণে কোমলমতি, মেধাবী লাখ লাখ মেয়ের জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। নারীর উন্নয়ন, নারী ক্ষমতায়ন, নারী অধিকার তথা স্বাধীনভাবে মুক্ত চিন্তা, প্রগতিবাদী চিন্তা করার ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তাতে ব্যক্তি, দেশ ও জাতির জন্য চরম মাশুল দিতে হয়। ভবিষ্যতের অমিত সম্ভাবনা কুঁড়িতেই বিনষ্ট হয়। যে সময়টাতে জীবন উপভোগ করার কথা, মুক্ত পাখির মতো উড়ে বেড়ানোর কথা, সেই সময়ই পরাধীনতার শিকলে আটকে যেতে হয়। বিপন্ন হয় শৈশব, বিবর্ণ হয় স্বপ্ন। পরাজিত সৈনিকের মতো জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। স্বাধীন চিন্তা, স্বাধীন চলাফেরা, স্বাধীনভাবে নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়া আর হয়ে ওঠে না। নারী হয়ে যায় খেলার পুতুল। দেশমাতৃকার জন্যও কোনো অবদান রাখতে পারে না। বাল্যবিবাহের কারণে আর্থসামাজিক উন্নয়নই শুধু ব্যাহত হয় না, নারীর যথাযথ উন্নয়ন তথা নারীর ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়াও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। নারী রাজনীতি, সমাজনীতি এবং অর্থনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে পূর্ণ সক্ষমতার ভিত্তিতে অধিকার পেতে অবদান রাখার সুযোগ হারায়। মতামত ব্যক্ত করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, ব্যক্তি পর্যায় থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সুযোগ গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হয়। দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তার মেধা-মননশীলতা, দক্ষতা, যোগ্যতাকে কাজে লাগানোর সুযোগ হারাতে থাকে। প্রকারন্তরে দেশের উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হয়।

অল্প বয়সে বিয়ে হওয়া কিশোরী নিজেও একজন শিশু, সে জন্ম দিয়ে থাকে আরেকটি শিশুর। তাতে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের মারাত্মক ঝুঁকি দেখা দেয়। কখনো আবার সংসারে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে পরিস্থিতি বিবাহবিচ্ছেদে পর্যন্ত গড়ায়। এতে সমাজের মধ্যে অনেক সময় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

প্রভাষক, সরকারি ইস্পাহানী ডিগ্রি কলেজ, কেরানীগঞ্জ

 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম