Logo
Logo
×

দৃষ্টিপাত

স্মার্টফোন রাখুন শিশুদের নাগালের বাইরে

Icon

মো. জাকারিয়া

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বর্তমান যুগে স্মার্টফোন একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস। এ যুগে স্মার্টফোন ছাড়া চলার কথা কল্পনাও করা যায় না। সব শ্রেণী ও পেশার মানুষকেই স্মার্টফোন ব্যবহার করতে দেখা যায়। কিন্তু সাম্প্রতিককালের গবেষণাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে স্মার্টফোন ব্যবহারের হার বেশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটা সময় ছিল, যখন শিশুরা মাঠে খেলাধুলা করত, টেলিভিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপভোগ করত, বিশেষ করে বিটিভিতে সিসিমপুর, মিনা কার্টুন ইত্যাদি বিভিন্ন কার্টুন সিরিজসহ অন্যান্য বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান অবসর সময় কাটাত।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খেলার মাঠের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে মোবাইল ও কম্পিউটার গেমসের কারণে শিশুরা মাঠে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। বর্তমানে শিশুরা সহজেই স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারে। তাই তারা বিভিন্ন ধরনের গেমস নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাছাড়া ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় ও স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার সহজ হওয়ায় শিশুরা তা ব্যবহার করছে। তারা ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন কার্টুন, মজাদার ভিডিও, নাটক, সিনেমা ইত্যাদি দেখছে। ফলে তাদের অনেকটা সময় এগুলোর পেছনে ব্যয় হচ্ছে।

শিশুরা অনেক দুষ্টুমি করে। শিশুদের শান্ত রাখতে মা-বাবা অনেক সময় তাদের হাতে ফোন তুলে দেন। ফোন হাতে পেলে তারা শান্ত থাকে। বিশেষ করে শিশুদের খাওয়ার সময় প্রায়ই তাদের হাতে ফোন তুলে দেয়া হয়। ধীরে ধীরে তারা স্মার্টফোনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে।

ফোনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গেলে শিশুরা আর অন্যদের সঙ্গে মিশতে চায় না। এটি তাদের সামাজিকীকরণে প্রভাব ফেলছে। তারা একাকিত্ব বোধ করে। তাদের মধ্যে খিটখিটে মেজাজ ও একঘেয়েমি কাজ করে। তারা তুলনামূলক কম ঘুমায় ও ফোন নিয়ে বেশি সময় ব্যয় করে, যা একজন মানুষের স্বাভাবিক ঘুমচক্রে ব্যাঘাত ঘটায়। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত ফোন ব্যবহারের ফলে তাদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারে শিশুর শরীরের ওজন কমে যায়, মাথাব্যথা ও চোখে সমস্যাসহ ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।

আমেরিকান একাডেমি অব প্যাডিয়াট্রিক ২ থেকে ৫ বছরের শিশুদের জন্য স্মার্টফোনের স্ক্রিনের সময়সীমা ৬০ মিনিট নির্ধারণ করেছে। তাই সবার উচিত, এ বিষয়ে সচেতন থাকা ও আশপাশের সবাইকে সচেতন করা; বিশেষ করে পিতামাতা শিশুদের যত্নসহকারে বুঝিয়ে তাদের হাত থেকে স্মার্টফোন যথাসম্ভব দূরে রাখার পাশপাশি শিশুদের সময় বেধে দেবেন, যাতে তারা অতিরিক্ত সময় স্মার্টফোন ব্যবহার না করতে পারে।

শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম