Logo
Logo
×

বাতায়ন

বাইফোকাল লেন্স

বর্ষপূর্তিতে বড় হামলা চালাবে কি রাশিয়া?

Icon

একেএম শামসুদ্দিন

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বর্ষপূর্তিতে বড় হামলা চালাবে কি রাশিয়া?

এ মুহূর্তে সিরিয়া-তুরস্কে হয়ে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও জীবনহানির জন্য পুরো বিশ্ব যখন গভীর শোকে মুহ্যমান, ঠিক তখনও মস্কো ও কিয়েভ একে অপরকে ঘায়েল করার রণকৌশল নিয়ে ব্যস্ত। রুশ সৈন্যরা ইউক্রেনের ভূমি দখলে ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে। ভূমিকম্প সিরিয়া ও তুরস্কে যে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে, তা বর্ণনাতীত। ধ্বংসাবশেষের ভেতর থেকে জীবিত ও মৃত শিশুসহ সব বয়সের মানুষ উদ্ধারের যে দৃশ্যাবলি টেলিভিশনে ভেসে ওঠে, তা সত্যিই মর্মান্তিক। এ দুর্যোগ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র, ইরান-ইরাক, সৌদি আরব ও ইসরাইল থেকে শুরু করে একযোগে শত্রু-মিত্র সব দেশই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে; এমনকি যুদ্ধে মুখোমুখি রাশিয়া এবং ইউক্রেনও এগিয়ে এসেছে। কেউ মেডিকেল সাপোর্ট দিয়ে, কেউ উদ্ধারের যন্ত্রপাতি দিয়ে, কেউবা আবার ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়ে সিরিয়া ও তুরস্কের পাশে দাঁড়িয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, ভয়াবহ মানবিক এ দুর্যোগ পুরো বিশ্বকে যেন ঐক্যবদ্ধ করেছে। আসলে কি তাই? বোধহয় না। এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে যে মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে, তা মোকাবিলায় সবাই একযোগে এগিয়ে এলেও রাজনৈতিক ভাবাদর্শে যে যার অবস্থানে অবিচল আছে। বাস্তবে তাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন হয়নি বলেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সফরে গিয়ে পার্লামেন্টে বক্তব্য দেওয়ার সময় রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যুদ্ধবিমান সাহায্য চেয়েছেন। যদিও যুক্তরাজ্য যুদ্ধবিমান দেবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল। যুক্তরাজ্যের আইনপ্রণেতাদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি রাশিয়ার সামরিক অভিযান মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য যেভাবে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে তিনি শিগ্গির ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান সরবরাহ করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, যুদ্ধবিমান পেলে রাশিয়ার অগ্রাভিযান রোধ করা সম্ভব হতো। বিবিসি জানিয়েছে, ইতঃপূর্বে যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেবে না বলে জানিয়ে দিলেও প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক নাকি তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন, ইউক্রেনকে দেওয়া যেতে পারে এমন কোনো যুদ্ধবিমান আছে কি না।

যুদ্ধবিমান না দিলেও যুক্তরাজ্য ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর সদস্যদের উন্নত ন্যাটো যুদ্ধবিমান চালানোর প্রশিক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পাশাপাশি নৌবাহিনীকেও যুক্তরাজ্যের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণের ফলে দেশটির বিমানচালকরা ন্যাটোর যুদ্ধবিমান চালাতে পারবেন। যুক্তরাজ্যের এ পদক্ষেপকে পশ্চিমা সামরিক সহায়তা বৃদ্ধির বড় ধরনের প্রতীকী পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত মাসে যুক্তরাজ্য প্রথম দেশ হিসাবে ইউক্রেনকে ট্যাংক সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। যুক্তরাজ্যের ট্যাংক দেওয়ার ঘোষণার পর দেখাদেখি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ ট্যাংক সরবরাহে সম্মত হয়।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা প্রথম পর্যায়ে ৭৩টি ট্যাংক দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে ব্রিটেন ১৪টি চেলেঞ্জার-২এস, জার্মানি ও পোল্যান্ড ১৪টি করে ২৮টি লেপার্ড-২এস ট্যাংক দেবে। যুক্তরাষ্ট্র দেবে ৩১টি এম-১ আব্রামস ট্যাংক। এ ছাড়াও জার্মানির অস্ত্র প্রস্তুতকারী কোম্পানি রাইনমেটাল আরও ১৩৯টি লেপার্ড ট্যাংক ইউক্রেনকে দেবে বলে নিশ্চিত করেছে। উল্লেখ্য, এক একটি ট্যাংক রেজিমেন্টে ১৪টি ট্যাংক নিয়ে একটি স্কোয়াড্রন গঠিত হয়। সে হিসাবে একটি রেজিমেন্টে থাকে রেজিমেন্ট সদরের ২টিসহ মোট ৪৪টি ট্যাংক। আধুনিক এসব ট্যাংকের ক্যাপাবিলিটি অর্থাৎ যুদ্ধের সামর্থ্য বা ক্ষমতা অনেক। একটি লেপার্ড-২ ট্যাংকের ওজন ৬০ টন। এটি অ্যান্টি ট্যাংক মিসাইল ও রকেট প্রপেলেড গ্রেনেডের (আরপিজি) আঘাত প্রতিহত করতে সক্ষম। অপরদিকে এম-১ আব্রামস ট্যাংকের ওজন ৭০ টন। চলন্ত অবস্থায় এ ট্যাংক শত্রুর ওপর ফায়ার করতে সক্ষম। নাইট ভিশন যন্ত্র আছে। ট্যাংকের প্রতিরক্ষা মেশিনগান ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পদাতিক শত্রুর ওপর ফায়ার করতেও সক্ষম। এছাড়া এর ডিজিটাল ব্যাটেলফিল্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম দূর থেকেই শত্রু-মিত্র চিহ্নিত করতে পারে। প্রতিশ্রুত সবকটি ট্যাংক যদি ন্যাটো পাঠায় তারপরও ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ঘিরে রাখা রাশিয়ান বাহিনীর অস্ত্রশস্ত্রের তুলনায় তা সামান্য। যেসব ট্যাংক ইউক্রেনকে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে; সেসব ট্যাংক যদি যথাসময়ে পৌঁছানো না যায়, তাহলে ইউক্রেনের জন্য প্রতিরোধ যুদ্ধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। তবে এমনও হতে পারে, যে সময় ধরে ইউক্রেনের সম্মুখসারির সেনারা ন্যাটোর প্রতিশ্রুত ট্যাংকের জন্য অপেক্ষা করবে, সেসময়ের মধ্যেই রাশিয়া তাদের টি-৯০ ট্যাংকের পুরো বহর যুদ্ধের ময়দানে নামিয়ে দেবে।

ইউক্রেনে ট্যাংকসহ ভারী অস্ত্রশস্ত্র পাঠিয়ে পশ্চিমারা ন্যাটোকে কার্যত যুদ্ধে জড়াতে যাচ্ছে। পাশাপাশি যতটা সম্ভব এ যুদ্ধকে তারা আরও দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এদিকে সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুচিচ বলেছেন, পশ্চিমাদের এভাবে প্রধান ব্যাটেল ট্যাংক দেওয়ার বিষয়টি বড় ধরনের ‘রাজনৈতিক ভুল’ হচ্ছে। তিনি এর কারণ হিসাবে বলেছেন, এ পদক্ষেপের জন্য রাশিয়ানরা আরও ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, যা ইতিহাসে কখনো দেখা যায়নি। মস্কো ইতোমধ্যে হুঁশিয়ার করে বলেছে, এসব ট্যাংক ইউক্রেনে প্রবেশ করা মাত্র ধ্বংস করা হবে। অনুমান করা যাচ্ছে, ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর এমন পদক্ষেপের সমুচিত জবাব রাশিয়া শুধু যুদ্ধযানের মাধ্যমেই দেবে না; এর জবাব অন্যভাবেও দিতে পারে। তবে ধরে নেওয়া যায়, ইউক্রেনকে নতুন করে এত সামরিক সহায়তা দেওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর অন্য কোনো কৌশল থাকতে পারে। এখানে তারা সূক্ষ্ম ভারসাম্যমূলক কৌশল অবলম্বন করছে। তারা ইউক্রেনের সক্ষমতাকে এমনভাবে বৃদ্ধি করতে চাচ্ছে, যাতে রাশিয়ার আগ্রাসনকে মোকাবিলা করে নিজেদের ভূমি পুনরুদ্ধার করতে পারে। তাতে বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা চলছে, তা ভাঙবে। অপরদিকে পশ্চিমারা রাশিয়াকে সরাসরি এমন কোনো উসকানি দিতে চায় না, যাতে এ যুদ্ধ ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।

আসছে সপ্তাহেই রাশিয়া নতুন উদ্যোগে ও বড় আকারে আক্রমণ করবে, এমন ঘোষণা দিয়ে জেলেনস্কির ইউরোপের কয়েকটি দেশ সফরে বের হওয়াতে অনেকেই অনুমান করছেন, পশ্চিমা মিত্রদের বুঝিয়ে তিনি অন্যান্য সামরিক সহায়তার সঙ্গে যুদ্ধবিমানও আদায় করে ছাড়বেন। জেলেনস্কি ব্রিটেন ছাড়াও ফ্রান্স সফর ও বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন। সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে জেলেনস্কি সামরিক সহায়তার পাশাপাশি ইউক্রেনকে দ্রুত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য করার স্বপ্ন পূরণ করতে ব্রাসেলসের আরও ইতিবাচক সাড়া পাবেন বলে আশা করেছেন। এ ছাড়াও তিনি যত দ্রুত সম্ভব আধুনিক যুদ্ধবিমান দিতে বিশেষ অনুরোধ করেন। যুদ্ধবিমান চেয়ে জেলেনস্কি যে অনুরোধ করেছেন, তাতে ইউরোপের কোনো দেশই সাড়া দেয়নি। এর কারণও একটাই; ইউরোপের নেতারা রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির আশঙ্কায় যুদ্ধবিমান সরবরাহের প্রশ্নে দ্বিধায় ভুগছেন। তাদের ধারণা, আধুনিক যুদ্ধবিমান পাওয়ার পর ইউক্রেন এগুলোকে যে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ড আক্রমণে ব্যবহার করবে না, সে গ্যারান্টি কোথায়? অর্থাৎ পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনের ওপর পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছে না। এ কারণেই তারা একধরনের সূক্ষ্ম ভারসাম্যমূলক কৌশল অবলম্বন করছে বলে মনে হয়।

রাশিয়া ইউক্রেনে যে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি তার এক বছর পূর্ণ হবে। এরই মধ্যে ইউক্রেন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, বর্ষপূর্তিতে রাশিয়া বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে। তারা আশা করছে, পশ্চিমারা ইউক্রেনকে যে নতুন করে সামরিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা তা ত্বরান্বিত করবে। তবে ইউক্রেনীয়দের মনোবল উঁচু রাখার জন্য সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘পশ্চিমা মিত্রদের প্রতিশ্রুত সামরিক সরঞ্জাম সময়মতো না পৌঁছালেও রুশবাহিনীকে মোকাবিলা করার মতো যথেষ্ট সামর্থ্য ইউক্রেনের আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধসরঞ্জাম ও আপৎকালীন রিজার্ভ সৈন্য প্রস্তুত আছে। আমরা তাদের মোতায়েন করে রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করতে সক্ষম হব।’

ওদিকে পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস এলাকা পুরোপুরি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে রাশিয়া। ২০১৪ সালে দখলকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে স্থল করিডর বিস্তৃত করতে দক্ষিণাঞ্চলেরও নিয়ন্ত্রণ নিতে চাচ্ছে রাশিয়া। রাশিয়া এরই মধ্যে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে। ক্রেমিন্না শহরের কাছে প্রতিরক্ষা ভেদ করার চেষ্টাও চালাচ্ছে তারা। ১০ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের জাপোরিঝিয়া শহরে ১ ঘণ্টায় ১৭টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে রুশ সেনারা। গত বছর আক্রমণ শুরুর পর একদিনে সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে তারা। এছাড়া একই দিনে খারকিভেও হামলা চালানো হয়। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় জাপোরিঝিয়ার গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রুশ বাহিনী এ শহর দুটোতে মোট ৩৫টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। শহরগুলোকে লক্ষ্য করে আজভ সাগর থেকে ইরানের তৈরি ‘কামিকাজে ড্রোন’ ও কৃষ্ণসাগর থেকে ‘কালিব্র ক্রুজ’ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোসহ শহরের বেশকিছু অংশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইউক্রেনও স্বীকার করেছে পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে বেশ কয়েকটি উচ্চ ভোল্টেজ বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা চালানোয় বিঘ্ন ঘটেছে বিদ্যুৎ সরবরাহে।

প্রশ্ন হচ্ছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে বড় ধরনের হামলা কি চালাবে রাশিয়া? এ হামলা চালানোর আশঙ্কায় ইউক্রেন আগে থেকেই সোচ্চার ও সতর্ক হয়েছে। তারা এ আক্রমণের কথা বলে পশ্চিমা মিত্রদের কাছে ভারী ও হালকা অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জাম দ্রুত সরবরাহের অনুরোধ করেছে। ওদিকে রাশিয়াও বসে নেই। তারা মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের আরও কিছু ভূমি দখল করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের প্রতিশ্রুত মেইন ব্যাটেল ট্যাংক ইউক্রনে পৌঁছানোর পর যুদ্ধের চিত্র অনেকটাই পালটে যেতে পারে। কারণ, ট্যাংককে বলা হয় যুদ্ধের ময়দানে ‘কিং অব দ্য ব্যাটেল’। যে কোনো যুদ্ধে ট্যাংক শত্রু নিধন ও ভূমি দখল করতে প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে।

সন্দেহ নেই, যুদ্ধবিমান ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ভূমি দখলে গ্রাউন্ড ফোর্সকে ঘনিষ্ঠভাবে সহায়তা করে থাকে। মনে রাখতে হবে, যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র যত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই পালন করুক না কেন, ভূমি দখলে রাখতে হলে পদাতিক বাহিনী ও ট্যাংক রেজিমেন্টের বিকল্প নেই। পশ্চিমা বিশ্বের সরবরাহ করা ট্যাংক ও ক্ষেপণাস্ত্রের মতো ভারী অস্ত্রের কারণে এ যুদ্ধ আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলা যায়। কাজেই, পশ্চিমা বিশ্ব থেকে ট্যাংক এসে পড়ার আগে রাশিয়া জোরালো হামলা চালিয়ে যতদূর সম্ভব সুবিধা আদায় করে নেবে, তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। ইউক্রেনের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার অতি সাম্প্রতিক হামলার পেছনে এ কারণই কাজ করছে। রাশিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি আরও বড় কোনো হামলার পরিকল্পনা হয়তো করতে পারে; তবে তারা কেবল সেদিনের অপেক্ষায় বসে থেকে সময় নষ্ট করবে না; এখন থেকেই সব সেক্টরে পুনঃপুন হামলা চালিয়ে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবে।

একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, কলাম লেখক

রুশ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম