জ্বালানি খাত নিয়ে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার
১৭ কোটি টাকার ৫ গ্যাসক্ষেত্র থেকে আয় ৬ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় এবং তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট তৎকালীন বিদেশি শেল অয়েল কোম্পানির কাছ থেকে ৫টি গ্যাসক্ষেত্র ক্রয় করা হয়েছিল।
এগুলো হলো-তিতাস (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), বাখরাবাদ (কুমিল্লা), হবিগঞ্জ, রশিদপুর ও কৈলাসটিলা (হবিগঞ্জ)। বঙ্গবন্ধুর কেনা এই ৫টি গ্যাসক্ষেত্র দিয়েই দেশে জ্বালানি নিরাপত্তার অন্যতম ভিত্তি স্থাপন করা হয়।
চেয়ারম্যান বলেন, ৪৮ বছর পর বঙ্গবন্ধুর এ অসামান্য অবদান ধরে রাখার জন্য ৫টি গ্যাসক্ষেত্রে তার অবদানবিষয়ক স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী ও রাষ্ট্রনায়কোচিত এমন সিদ্ধান্তের জন্য জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে তার অবদান স্বীকার করবে। তিনি বলেন, পঁচাত্তরের পর এই প্রথম বঙ্গবন্ধুর নামফলক বসানো হলো।
পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট ১৭.৮৬ কোটি টাকায় এই ৫টি গ্যাসক্ষেত্র ক্রয় করে রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন। ক্রয়কালীন ৫টির মধ্যে ২টি গ্যাসক্ষেত্রের ৬টি কূপ থেকে দৈনিক ৬২.৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন এবং ৫টি গ্যাসক্ষেত্রের মোট মজুত ৫.৫৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) ধরা হয়েছিল। সর্বশেষ পুনর্মূল্যায়নে এই ৫টি গ্যাসক্ষেত্রের মোট গ্যাস মজুত প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৫.৫৮ টিসিএফ।
ক্রয়ের পর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১০.২৬ টিসিএফ গ্যাস উৎপাদন করা হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৬ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। ৪৮ বছর ব্যবহারের পরও এখনো মজুত আছে ৫.২৩ টিসিএফ গ্যাস, যার বর্তমান আর্থিক মূল্য প্রায় ৩ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা।
সম্প্রতি যুগান্তরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য ২০২৫ সালের মধ্যে মোট ৪৬টি কূপ খনন, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার সম্পন্ন করা হবে। এজন্য সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও ডিপিপি প্রণয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মনিটরিং ও নির্দিষ্ট সময় পরপর সমন্বয় সভা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৯টি কূপ খনন, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ভোলা জেলায় ইলিশা নামে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।
এই কূপের প্রাথমিক মজুত ২০০ বিসিএফ নির্ধারণ করা হয়েছে। ৪৬টি কূপের মধ্যে রাশিয়ান কোম্পানি গ্যাজপ্রম ২টি, বাপেক্স ১টি কূপ খনন এবং বিজিএফসিএল ১টি ওয়ার্কওভার সম্পন্ন করেছে। এর মাধ্যমে ৪৮ এমএমসিএফডি গ্যাসের উৎপাদন নিশ্চিত করা হয়েছে। জনেন্দ্র নাথ সরকার ৪ জানুয়ারি পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান পদে যোগদান করেন। এর আগে তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব পদে কর্মরত ছিলেন। বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ১১তম ব্যাচের এই কর্মকর্তা চাকরিজীবনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগে বিভিন্ন পদমর্যাদায় দায়িত্ব পালন করেছেন।
পেট্রোবাংলায় যোগদানের পর ৮ মাসে তার উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে বাপেক্সের রিগগুলোর শতভাগ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। কোম্পানির নিজস্ব ৫টি রিগ দিয়ে ১৮টি কূপ খননের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি অনুসন্ধান, ৫টি উন্নয়ন ও ১০টি ওয়ার্কওভার কূপ রয়েছে। বাকি কূপগুলোর মধ্যে ১৬-১৮টি বিদেশি সংস্থা, যাদের বাংলাদেশে খননের অভিজ্ঞতা আছে এবং যাদের রিগ আছে, তাদের দিয়ে খনন করা হবে। এজন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইনে প্রক্রিয়াকরণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ভোলা এলাকার গ্যাজপ্রমের মাধ্যমে ৫টি কূপ খননের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া বাপেক্সকে শক্তিশালী করার জন্য ১টি নতুন রিগ কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান বলেন, এলএনজি আমদানির জন্য কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি ও ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। কাতার এনার্জি থেকে অতিরিক্ত ১.০-২.০ এমটিপিএ এলএনজি আমদানির (১৫ বছর মেয়াদে প্রতিবছর ২৪ কার্গো এলএনজি) নেগোসিয়েশন সম্পন্ন করে সরকারের অনুমোদন গ্রহণ করে চুক্তি সই করা হয়েছে। ওকিউ ট্রেডিং থেকে এলএনজি আমদানি (১০ বছর মেয়াদে ০.২৫ থেকে ১.৫ এমটিপিএ) বৃদ্ধির বিষয়ে নেগোসিয়েশন সম্পন্ন করে চুক্তি সই করা হয়েছে। সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে মহেশখালীতে তৃতীয় এফএসআরইউ (ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিঅ্যাকশন ইউনিট) স্থাপন কার্যক্রমের নেগোসিয়েশন সম্পাদন করা হয়েছে। সরকারের অনুমোদন পাওয়া গেলে চুক্তি সই করা হবে।
এছাড়া এক্সিলারেট এনার্জির মাধ্যমে পটুয়াখালীর পায়রায় গভীর সমুদ্রে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের জন্য টার্মশিট বিষয়ে নেগোসিয়েশন সম্পন্ন হয়েছে। অনুমোদনের পর টার্মশিট সই করা হবে। তাদের মহেশখালীতে স্থাপিত ভাসমান টার্মিনালের ক্ষমতা ১০০ এমএমসিএফডি বাড়িয়ে ৬০০ করার প্রস্তাব নেগোসিয়েশন করা হয়েছে। সরকারের অনুমোদন পেলে চুক্তি সই হবে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে ১০০০ এমএমসিএফডি ক্ষমতাসম্পন্ন স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ভূমির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। ফিজিটিলিটি স্টাডি সম্পন্ন করা হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে নেগোসিয়েশন শুরু হবে।
মালয়েশিয়া থেকে এলএনজি আমদানির বিষয়ে নেগোসিয়েশন করা হচ্ছে, যা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। ক্রসবর্ডার পাইপলাইনের মাধ্যমে এইচ এনার্জি থেকে দেশে ২৫০ এমএমসিএফডি হারে এলএনজি আমদানির জন্য নেগোসিয়েশন করা হয়েছে। এটিও চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম আরও গতিশীল করার উদ্দেশ্যে পিএসসি অফসোর মডেল অনুমোদনের খসড়া চূড়ান্তকরণ করে অর্থনৈতিক বিষয় মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করা হয়েছে। বিডিং ডকুমেন্ট তৈরি করা হচ্ছে। সরকারি সিদ্ধান্ত পেলে দ্রুত বিডিং রাউন্ড শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ খাতের কার্যক্রমের গতিশীলতা আনয়নের জন্য পেট্রোবাংলা ও কোম্পানিগুলো থেকে দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে গ্যাস অনুসন্ধান, গ্যাস উৎপাদন/সঞ্চালন/বিতরণ ও খনি উন্নয়নবিষয়ক ৩টি কোর কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কোর কমিটি প্রতিমাসে বা সময়ে সময়ে আলোচনাসভা করে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে। পেট্রোবাংলা ও কোম্পানিগুলোর অভিজ্ঞদের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে গ্যাস অনুসন্ধান, উৎপাদন, সঞ্চালন ও এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে জ্বালানি সম্পর্কিত কার্যক্রমকে স্মার্ট করার কাজ শুরু হয়ে গেছে। ধীরে ধীরে বিদেশি পরামর্শকনির্ভরতা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের গ্যাস সঞ্চালন ও সরবরাহ পাইপলাইনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য ‘প্রাকৃতিক গ্যাস নিরাপত্তা বিধিমালা ১৯৯১’-এর আওতায় কার্যক্রম সংরক্ষণ, সংস্কার ও মনিটরিংয়ের জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন কর হয়েছে। পেট্রোবাংলা থেকে পাইপলাইনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইতঃপূর্বে পাইপলাইন সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার কোনো সামগ্রিক উদ্যোগ ছিল না। ২০২৩ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত দেশে গ্যাসের ডিমান্ড ও সাপ্লাই পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার আলোকে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি এলএনজি আমদানির জন্য টার্মিনাল স্থাপন এবং এলএনজি আমদানি চুক্তির ভারসাম্য রাখার মনিটরিং করা হচ্ছে। গ্যাসের সংকট নিরসনের জন্য দেশের অভ্যন্তরে ৬টি উৎস থেকে জিটিসিএল কর্তৃক গ্যাস গ্রহণ করা হচ্ছে। ৬টি বিতরণ কোম্পানির মাধ্যমে তা বুঝিয়ে দেওয়া সব অফটেক ও ইনটেকে মিটারিং স্থাপন করে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে দায়বদ্ধতা তৈরি করা হয়েছে। এতে গ্যাসের সিস্টেম লস কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া তিতাসসহ ৫টি বিতরণ কোম্পানির সিস্টেম লস কমিয়ে আনার জন্য তদারকি ও মনিটরিং বাড়ানো এবং কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে সিস্টেম লস কমিয়ে আনা হবে বলেও তিনি জানান।
জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, গঠিত কোর কমিটির মাধ্যমে দেশের টুডি ও থ্রিডি সিসমিক ডেটা পর্যালোচনা করে আরও কূপ খননের জন্য চিহ্নিতকরণ এবং প্রয়োজনে আরও সিসমিক সার্ভের সুপারিশের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫-২৭ মাসের জন্য এবং ২০৩০ সালের জন্য সম্ভাব্য কূপ চিহ্নিতকরণ করা হচ্ছে। পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান বলেন, ভোলা এলাকার গ্যাস সিএনজি হিসাবে এনে সেই গ্যাস স্বল্পচাপে শিল্পে সরবরাহ করার কাজ শুরু হয়ে গেছে। ঢাকা, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল জেলার পার্শ্ববর্তী কিছু শিল্প, যেগুলো পাইপলাইনের শেষ প্রান্তে অবস্থিত ভোলা থেকে সিএনজি করে গ্যাস এনে এসব প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হবে; ইতোমধ্যে ইন্ট্রাকো সিএনজি লি. নামক একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি সই হয়েছে। চলতি সেপ্টেম্বর থেকে সিএনজি আকারে গ্যাস সরবরাহ করার কথা রয়েছে তাদের।
প্রশাসনিক কার্যক্রম : পেট্রোবাংলার আওতাধীন কোম্পানিগুলোর বিভাগীয় মামলার আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যা নিরসনে বিভাগীয় মামলা পরিচালনা কর্তৃপক্ষ ও আপিল কর্তৃপক্ষ নির্ধারণে নির্দেশনামূলক পত্র পাঠানো হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পেট্রোবাংলার বিভাগীয় মামলাগুলো নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোম্পানিগুলোর বিভাগীয় মামলার ত্রুটিবিচ্যুতিগুলো চিহ্নিত করে তা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অফিসে আগমন ও প্রস্থান নিশ্চিতকরণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পদ শূন্য হওয়ামাত্রই ফিডার পদধারী কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে দ্রুত পদোন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের আর বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। পেট্রোবাংলা এবং এর আওতাধীন ১৩টি কোম্পানিতে ৯ম ও ১০ম গ্রেডে কর্মকর্তা বাছাই কেন্দ্রীয়ভাবে পেট্রোবাংলার মাধ্যমে সম্পাদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যোগ্য প্রার্থীদের একাধিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পরিবর্তে একাধিক কোম্পানির পদে নিয়োগ লাভের সুযোগ তৈরি হয়েছে। পেট্রোবাংলার আওতাধীন ৩টি কোম্পানি টিজিটিডিসিএল, জিটিসিএল ও আরপিজিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালক (অর্থ) ও পরিচালক (অপারেশন) পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের জন্য জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। পেট্রোবাংলা ও এর আওতাধীন ১৩টি কোম্পানিতে যথানিয়মে চলতি দায়িত্ব ও অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদানের জন্য বিশেষ নির্দেশনা প্রদান এবং চলতি দায়িত্বের পরিবর্তে পদোন্নতি প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পেট্রোবাংলার আওতাধীন ১৩টি কোম্পানিতে কর্মচারী নিয়োগে অপেক্ষমাণ তালিকা যথানিয়মে প্রণয়নের ও সংরক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রাত্যহিক কাজে প্রশাসনিক, আর্থিক ও কারিগরি জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি সপ্তাহের রোববার লার্নিং সেশন চালু করা হয়েছে। সংস্থার সাংগঠনিক কাঠামো হালনাগাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কর্মচারীদের চাকরি প্রবিধানমালা হালনাগাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যথাসময়ে অফিসে আগমন ও প্রস্থান নিয়ন্ত্রণের জন্য বায়োমেট্রিক যন্ত্র স্থাপন ও মনিটরিং বৃদ্ধিকরণ করে অফিসের কর্মঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। বাপেক্সের বিদ্যমান মামলাজট কাটিয়ে উপ-মহাব্যবস্থাপক পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মহাব্যবস্থাপক পদে পদোন্নতি প্রদান। তিতাস, কর্নফুলী, পশ্চিমাঞ্চলসহ সব কোম্পানির পদোন্নতির জটিলতা দূর করে পদোন্নতি নিশ্চিত করা হয়েছে। পেট্রোবাংলার জনবল কাঠামোর দীর্ঘদিনের জটিলতা কাঠিয়ে ৬৫২টি পদের যথাযথ অনুমোদন সম্পন্ন করা হচ্ছে। নতুন চাকরি প্রবিধানমালা ও বিধিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। দ্রুত অনুমোদনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পেট্রোবাংলা অফিসের নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তার জন্য ই-গেট স্থাপন করা হচ্ছে। ২য় কনফারেন্স রুমটি নতুনভাবে সজ্জিত করে চালু হচ্ছে।