হ্যালো...
দিনশেষে ভালো কাজটিই টিকে থাকবে
নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। দেশের সীমানা পেরিয়ে কলকাতায়ও বেশ জনপ্রিয়। নাটকের পাশাপাশি এখন সিনেমা এবং ওটিটি কনটেন্টেও নিয়মিত। এ সময়ের টিভি নাটকের মান, অভিনয় শিল্প, ওটিটি প্ল্যাটফর্মসহ নানা বিষয় নিয়ে আজকের ‘হ্যালো...’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি।
রিয়েল তন্ময়
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
* অভিনয়ের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে জানতে চাই, কেমন হচ্ছে এখনকার টিভি নাটক?
** সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুর পরিবর্তন হচ্ছে, এটাই স্বাভাবিক। ডিরেকশন, অভিনয়, ক্যামেরা, লাইট, মেকআপ সব জায়গায়ই কিছু না কিছু পরিবর্তন এসেছে। আমি বলব না, সব খারাপ কাজ হচ্ছে। আবার সব ভালো কাজ হচ্ছে তাও বলব না। অনেক ভালো কাজ হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে অনেক এগিয়েছে আমাদের নাটকের শিল্প। আগে প্রচারের মাধ্যম কম ছিল। চ্যানেল ছিল একটি। এখন চ্যানেল বেড়েছে, অন্যান্য মাধ্যমও এসেছে। গল্প বলার ঢংয়ে পরিবর্তন এসেছে। কাজ করতে করতে আমার অভিজ্ঞতা বলে, দিনশেষে ভালো কাজটিই টিকে থাকবে।
* একসময় নাটক দেখার জন্য টিভিই ছিল একমাত্র ভরসা। এখন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এসেছে। এটিকে কীভাবে দেখেন?
** ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে আমি ইতিবাচক চোখে দেখি। একটু আগে পরিবর্তনের কথা বলেছিলাম। এটা হবেই। আমি জোর দেব গল্পে। গল্প শক্তিশালী হলে টিভি নাটক বলি, সিনেমা বলি অথবা ওটিটি বলি, দর্শক দেখবেই। তারা গল্প পছন্দ করেন। নতুন যা কিছু আসুক তাকে অভিবাদন জানাতেই হবে।
* আপনার দৃষ্টিতে টিভি নাটকের প্রধান সমস্যা কী?
** আমি মনে করি, টিভি নাটকের প্রধান সমস্যা বাজেট। একটা সময় কিন্তু নাটকের বাজেট এত কম ছিল না। অনেক বেশি বাজেট নিয়ে নাটক নির্মিত হতো। দিন দিন টিভি নাটকের বাজেট কমছে। দুই দিনে টিভি নাটকের শুটিং শেষ করতে হবে। কেন? বাজেটের স্বল্পতা। টিভি নাটকের বাজেট আরও বাড়ানোর দরকার।
* থিয়েটার দিয়ে অভিনয় শুরু করেছিলেন। এরপর টিভি নাটকে। অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে প্রতিষ্ঠা পেতে। কিন্তু, এখন শোবিজে এসেই অনেকে তারকা হতে চায়। এ প্রবণতার কারণ কী?
** শিল্পচর্চার জন্য সাধনা প্রয়োজন, এ কথা আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। শর্টকাটে শিল্পচর্চা হয় না। অভিনয় করা এত সহজ নয়। বছরের পর বছর শিখে তারপর একজন শিল্পীর জন্ম হয়। তারকা ভিন্ন কথা। কেউ কেউ দ্রুত কিছু পেতে চান। তাতে করে লাভ খুব হয় না। একটি চরিত্র ভেতরে লালন করে তারপর ডেলিভারি দিতে হয়। এতে করে নিজের ভেতরে আনন্দ কাজ করে। কেন এ প্রবণতা অনেকের মাঝে কাজ করে, তা জানি না। এ প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসা উচিত।
* খ্যাতির বিড়ম্বনাকে কী চোখে দেখেন?
** ভালোভাবেই দেখি। জনপ্রিয়তাকে ভালোবাসি। মানুষ আমাকে ভালোবাসেন, আমিও মানুষকে ভালোবাসি। এত মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য আমি নই। জনপ্রিয়তাকে নেগেটিভভাবে নিই না। ভালোবাসাকে সম্মান করি। হয়তো সব সময় মানুষের মন জুগিয়ে চলা যায় না। কেউ তা পারেও না।
* বহুমাত্রিক অভিনেতা বলা হয় আপনাকে। আপনার শেখার বিষয়গুলো মূলত কী?
** চারপাশে দেখে অভিনয় শিখি। বাইরে বের হলে রাস্তায় কত মানুষ দেখি! শুটিং করতে গ্রামে গিয়ে মাঠেঘাটে কত মানুষ দেখি। বাজারে গিয়ে মানুষ দেখি। ভিড়ের মধ্যে মানুষ দেখি। চরিত্রের তো অভাব নেই। সেসব দেখে চরিত্রটাকে মাথায় নিয়ে নিই।
* কোন জীবনটাকে বেশি মিস করেন?
** ফেলে আসা জীবন। থিয়েটারের জীবন। বেইলি রোডে দিনের পর দিন আড্ডা দিয়েছি থিয়েটারের মানুষদের সঙ্গে। আমার ছেলেবেলার কিছুটা সময় কেটেছে বরিশালে গ্রামের বাড়িতে। ওই দিনগুলোকেও অনেক মিস করি।
