মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত ছবি ইউটিউবে প্রকাশ
আনন্দনগর প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
অনলাইন মাধ্যম ইউটিউবে প্রকাশ করা একটি বাংলাদেশি ছবিতে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ইতিহাস বিকৃতি ও আদালতের আদেশ অমান্য করেছেন চিত্রপরিচালক এম.এন ইস্পাহানি- এমন অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক ও নাট্যনির্মাতা মাকসুদুল হক ইমু। ছবির নাম ‘বীর সৈনিক’।
এটি মুক্তি পেয়েছে ২০০৩ সালে। ছবিতে অভিনয় করেছেন মান্না, মৌসুমী ও হুমায়ুন ফরীদি। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এরইমধ্যে আইনি নোটিশও দিয়েছেন অভিযোগকারী। তার পক্ষে ৩ সেপ্টেম্বর নোটিশ পাঠিয়েছেন আইনজীবী মোস্তফা কামাল মুরাদ। নোটিশে বিবাদী করা হয়েছে ছবির প্রযোজক-পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, ইউটিউব কন্টেন্ট স্বত্বাধিকারী সিস মিডিয়ার কর্ণধার এম.এন ইস্পাহানি (ইস্পাহানি আরিফ জাহান) ও মো. জাহাঙ্গীরকে (লাভা মুভিজ)।
অভিযোগকারী ইমু বলেছেন, “বীর সৈনিক নামের এ ছবিতে ইচ্ছাকৃত ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। ছবিতে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে মেজর জিয়াউর রহমানের নাম ও ২৬ মার্চে তার ঘোষণার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ ২০০৯ সালের ২১ জুন হাইকোর্ট এক রায়ের মাধ্যমে বিতর্কিত এ বিষয়টির সমাধান করে দিয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে- ‘জিয়া নন, বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার ঘোষক’। সেই সঙ্গে আদালত জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক উপস্থাপন করে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, দলিলপত্র’-এর তৃতীয় খণ্ড বাতিল ঘোষণা করেছেন। যেহেতু ছবিটি ২০০৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল, তখন বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় ছিল।
কিন্তু ২০০৯ সালে আদালত যে রায় দিয়েছেন, সেটিকে অমান্য করে ছবির ইউটিউব কন্টেন্টের মালিক সিস মিডিয়ার কর্ণধার এমএন ইস্পাহানি বিকৃত ইতিহাসের ছবিটি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ইউটিউবে প্রকাশ করে আদালতের আদেশ অমান্য করেছেন অভিযুক্তরা।
পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ও ৭ মার্চের ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গেও জড়িত তারা।’ তিনি আরও বলেন, আমি তাদেরকে বিষয়টি সমাধানের জন্য বারবার বলা সত্ত্বেও তারা সেটি সমাধান করেননি। আমি ছবির পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু সাহেবের কাছে জানতে চেয়েছি। তিনি এজন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে কন্টেন্ট মালিক এমএন ইস্পাহানি ছবিটি ইউটিউব থেকে না সরানোর কারণে বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি।’
এদিকে আদালতের আদেশ অমান্য ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা কন্টেন্টসমৃদ্ধ ছবি ইউটিউবে আপলোড করা এবং সেটি অভিযোগ দেয়ার পরও না সরানো বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ব্যক্তি এমএন ইস্পাহানি বলেন, ‘ছবিটি আপলোড হওয়ার আগে তাতে কী ছিল আমি দেখিনি। আইনি নোটিশ পাওয়ার পর আমরা সেটি ইউটিউব থেকে নামিয়ে দিয়েছি।’
এদিকে ইস্পাহানি আরিফ জাহানের বিরুদ্ধে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ছবি ‘হৃদিতা’ নিয়েও জালিয়াতির অভিযোগ করেছেন মোহাম্মদ মিজানুর রহমান নামে এক প্রযোজক। তার দাবি, ‘হৃদিতা’ ছবিটি নির্মাণের অনুমতি লেখক আনিসুল হক তার প্রতিষ্ঠানকেই অফিসিয়াল প্যাডে লিখিত দিয়েছেন। ইস্পাহানি জালিয়াতি করে সেটি সরকারি অনুদানের জন্য জমা দেয়। বিষয়টি নিয়ে তিনি আইনি পদক্ষেপও নিচ্ছেন, যা বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন।
