Logo
Logo
×

আনন্দ নগর

টিনএজ বয়সেই অবজ্ঞার শিকার হন নাটালি

Icon

আনন্দনগর ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বয়স তখন মাত্র ১৬ বছর। হলিউডের রঙিন দুনিয়ায় পথচলাও বেশিদিনের নয়। অভিনয় শিখছেন মাত্র। আর ওইটুকুন বয়সেই কট্টর সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল নাটালি পোর্টম্যানকে। তখন ঘটনাগুলো তাকে এতটাই মর্মাহত করেছিল যে, ওই সময় অভিনয় থেকে বিরতি নিয়েছিলেন এ অভিনেত্রী। ফিরে এসেছেন নিজেকে তৈরি করে। সম্প্রতি মার্কিন গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ক্যারিয়ারের উত্থান-পতনের স্মৃতিচারণ করে এসব বলেছেন এ অভিনেত্রী। মূলত ‘স্টার ওয়ার্স’র প্রিক্যুয়েলের পর নাটালি পোর্টম্যান অভিনয় থেকে বিরতি নিয়েছিলেন। কারণ সমালোচকরা বলেছিলেন যে তিনি অভিনয় করতে পারবেন না? ১৯৯৯ সালে ‘দ্য ফ্যান্টম মেনেস’ সিনেমাটি মুক্তির আগে ভক্তদের চাওয়ার পারদ ছিল অনেক বেশি। কিন্তু মুক্তির পর সিনেমাটি অভ্যর্থনা প্রত্যাশা অনুযায়ী ছিল না এবং দুটি সিক্যুয়েল খুব বেশি ভালো করতে পারেনি। এতে আমিদালা চরিত্রে অভিনয় করা নাটালি পোর্টম্যান কেবল তার ভূমিকার জন্যই নয়, বরং তার অভিনয়ের কঠোর সমালোচনার মুখোমুখি হন। সিরিজের একমাত্র প্রধান নারী চরিত্র হওয়া সত্ত্বেও, এ সমালোচনা এড়ানো তার জন্য বেশ কঠিন ছিল। মাত্র ১৬ বছর বয়সে পোর্টম্যান তার অভিনয়ের সমালোচনার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সংগ্রাম করেছিলেন, বিশেষ করে যখন অনেকেই অভিনেত্রী হিসাবে তার দক্ষতাকে উড়িয়ে দেন। খুব বেশিদিন হয়নি যে, তিনি হলিউড থেকে সরে এসে নিজেকে তৈরি করে ফের কাজে নামেন।

স্টার ওয়ার্স-এর প্রিক্যুয়েলগুলো বড় পর্দায় আসার পর, নাটালি পোর্টম্যান নিজেকে সমালোচনার ঝড়ের মাঝে আবিষ্কার করেন। ‘স্টার ওয়ার্স’-এর পর হলিউড কর্তৃক প্রত্যাখ্যাতও হন অভিনেত্রী। পরে এটি সর্বকালের সর্বাধিক আয়কারী ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে একটিতে থাকা সত্ত্বেও, পোর্টম্যানকে অবজ্ঞা করা হয়েছিল তখন। ‘সবাই ভেবেছিল আমি একজন ভয়ঙ্কর অভিনেত্রী’-তিনি নিউইয়র্ক ম্যাগাজিনের কাছে প্রকাশ করেছিলেন। ‘আমি দশকের সর্বাধিক আয়কারী সিনেমায় ছিলাম, তবুও কোনো পরিচালক আমার সঙ্গে কাজ করতে চাননি।’ সেই সময়ে হলিউড তাকে প্রতিভাবান শিল্পী হিসাবে দেখত না। কারণ, নির্মাতারা মূলত ‘স্টার ওয়ার্স’র সমালোচনার ওপর নির্ভর করেছিল। দুর্ভাগ্যবশত, পোর্টম্যানের আমিদালার চরিত্রটি সেই প্রতিক্রিয়ার প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল। বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি সত্ত্বেও, পরিচালকরা তাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের জন্য নির্বাচন করা থেকে এড়িয়ে চলেন।

মার্কিন গণমাধ্যমকে দেওয়ার এক সাক্ষাৎকারে, তিনি এত প্রতিক্রিয়ার লক্ষ্যবস্তু হওয়ার অনুভূতি সম্পর্কে খোলামেলাভাবে কথা বলেছিলেন। ‘এটি একটি হতাশাজনক বিষয় ছিল। মনে হয়েছিল দর্শকরা বেশ উত্তেজি এবং তারা চরম পর্যায়ের হতাশ’-তিনি স্বীকার করেন। তবে এ ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে, অভিনেত্রী নির্মাতাদের বা ভক্তদের দোষ দেননি। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন এত উচ্চ প্রত্যাশার সঙ্গে, সবার প্রত্যাশা পূরণ করা প্রায় অসম্ভব। ‘এটি কঠিন ছিল’-পোর্টম্যান বলেন, সেই সময়ে এটি কতটা কঠিন ছিল তা স্বীকার করে, বিশেষ করে তার অল্প বয়সে। ‘যখন কোনো কিছুর এত প্রত্যাশা থাকে, তখন এটি হতাশ করার আশঙ্কাই থাকে বেশি।’ শুধু অভিনয়ই নয়, সিনেমার সিজিআই এবং গল্পের লাইন, সবকিছুই তখন এলোমেলো ছিল বলে ভক্তদের অভিযোগ।

তবুও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে বদলে নিতে সক্ষম হয়েছে নাটালি। তিনি হয়তো সেই সময়ে সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিলেন, কিন্তু তারপর থেকে তার ক্যারিয়ার অসাধারণ ছিল। ‘লিওন : দ্য প্রফেশনাল’-এ তার আইকনিক ভূমিকা থেকে শুরু করে ‘ব্লাক সোয়ান’র জন্য অস্কার জেতা পর্যন্ত, পোর্টম্যান প্রমাণ করেছেন, ‘স্টার ওয়ার্স’র প্রিক্যুয়েলগুলো আসলেই তার যোগ্যতা বিচারের জন্য সহায়ক নয়। পরবর্তীতে ‘লিওন : দ্য প্রফেশনাল’র জন্য সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন অভিনেত্রী। একজন উদীয়মান শিল্পী হিসাবে এটি ছিল তার জন্য এক বিরাট পাওয়া। এ সিনেমাটিকে ক্যারিয়ারের অ্যালবাট্রসের মতো মনে হয়েছিল তার। পোর্টম্যান জানিয়েছেন, নিজের প্রতি বিশ্বাস ছিল তার। তার এই দৃঢ়তা সফল হয়েছিল এবং শিগগিরই তিনি আবারও ট্র্যাকে ফিরে আসেন, যা সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দেয়। এই ভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, হলিউড তখন বুঝতে পারেনি, তার ভেতরে কী আছে!

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম