Logo
Logo
×

আনন্দ নগর

অর্ধবছরে ওটিটিতে আসেনি প্রত্যাশিত কনটেন্ট

ওটিটি (ওভার দ্য টপ) বিনোদনমূলক কনটেন্ট উপভোগের এক জনপ্রিয় মাধ্যম। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও এর বাজার তৈরি হয়েছে। তাতে করে বাড়ছে শিল্পীদের কাজের পরিধি, আশার ফুল ফুটেছে বিনোদনের বাগানে। নাটক, সিরিজের পাশাপাশি এখন ওটিটির জন্য নির্মিত হচ্ছে সিনেমা। বলা যায়, প্রেক্ষাগৃহের বাইরেও হাতের মুঠোফোন দিয়েও দর্শক পাচ্ছেন সিনেমা দেখার সুযোগ। জনপ্রিয়তার সঙ্গে সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশেও বাড়ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা। গত ছয় মাসে ওটিটিতে এসেছে নতুন সব কনটেন্ট। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার পরই নজর থাকে সেই কনটেন্টের দিকে। কতটা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারল ওটিটির সেই কনটেন্টগুলো? বিস্তারিত রয়েছে এ প্রতিবেদনে।

Icon

রিয়েল তন্ময়

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলো বছরের বেশিরভাগ সময় থাকে সিনেমাহীন। এই ফাঁকে দর্শকদের মনোরঞ্জনে জায়গা দখল করে নিয়েছে ওয়েব সিরিজ ও ওয়েব ফিল্ম। চলতি বছরের ছয় মাসে পেইড ভার্সনের বিভিন্ন অ্যাপ্সভিত্তিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এসেছে প্রায় দুই ডজনের বেশি কনটেন্ট। তবে এসবের মধ্যে কিছু কনটেন্ট আলোচিত হলেও, হতাশ করেছে এমন সংখ্যাও কম নয়। বলা যায়, সর্বোপরি প্রত্যাশিত কনটেন্ট ছয় মাসে আসেনি।

জানুয়ারির শুরুতেই ব্যর্থ পূজা

বছরের শুরুতেই দেখা দেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পূজা চেরী। ‘ব্ল্যাক মানি’ নামে একটি ওয়েব সিরিজ নিয়ে প্রথমবার ওটিটিতে হাজির হন তিনি। এ ছাড়া এ সিরিজ দিয়েই দীর্ঘদিন পর অভিনয়ে ও প্রথম ওটিটিতে ফিরেছিলেন চিত্রনায়ক রুবেল। তাই এ জুটি নিয়েও দর্শক প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। রায়হান রাফি নির্মিত বছরের প্রথম সিরিজ হিসাবে শুরুতেই হতাশ হতে হয়েছে। প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন পূজা ও রুবেল। এ মাসে মুক্তি পায় নুহাশ হুমায়ূন পরিচালিত চার পর্বের সিরিজ ‘২ষ’। এটি দিয়েই প্রত্যাবর্তন হয় নাটকের এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুমাইয়া শিমুর। কিন্তু তিনিও সেভাবে জ্বলে উঠতে পারলেন না, যতটা তার থেকে দর্শক আশা করেছিলেন। এদিকে এ মাসেই মুক্তি পায় অভিনেতা মোশাররফ করিম ও অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম অভিনীত ওয়েব ফিল্ম ‘অন্ধকারের গান’। এটি নির্মাণ করেছেন ভিকি জাহেদ। এ কনটেন্টটি দর্শক আগ্রহ কিছুটা হলেও পূরণ করতে পেরেছে। তবে হুমড়ি খেয়ে পড়ার মতো কোনো অবস্থা সৃষ্টি না হলেও, অভিনয় ও গল্পে বেশ প্রশংসিত একটি ফিল্ম ছিল এটি। জানুয়ারিতেই আসে ওয়েব সিরিজ ‘ফেউ’। এটি নির্মাণ করেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান। পর্দায় গল্প বলার ধীরগতি এ কনটেন্টের কপালে একে দিয়েছে দুঃখের রেখা।

ফেব্রুয়ারিতে প্রশংসিত তানজিন তিশা

এ মাসেই মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ঘুমপরী’ ওয়েব ফিল্ম দিয়ে আলোচনায় ছিলেন তানজিন তিশা। জাহিদ প্রীতমের পরিচালনায় নির্মিত এ ফিল্মটি গল্প, সংলাপ, গান ও নির্মাণ সবকিছু মিলিয়েই ছিল দর্শকদের পছন্দের তালিকায়। এতে অভিনয়ের জন্য পুরস্কৃতও হন তিশা। এতে অভিনয় করে প্রশংসিত হন গায়ক প্রীতম হাসান ও পারশা মাহজাবীন পূর্ণি। এ মাসেই আসে মেহজাবীন চৌধুরীর ওয়েব ফিল্ম ‘নীল সুখ’। এটি নিয়ে দর্শকদের প্রত্যাশা ছিল বেশি। ভিকি জাহেদ নির্মিত এ ফিল্মটি মুক্তির পর সেভাবে আলোচনায় আসতে পারেনি। তবে এককভাবে মেহজাবীন তার অভিনয় নিয়ে ছিলেন প্রশংসিত স্থানে।

মার্চ ছিল তমা মির্জা ও জয়া আহসানের

ঢাকাই সিনেমার নায়িকা তমা মির্জা। মার্চে হাজির হয়েছিলেন তার ‘আমলনামা’ নিয়ে। রায়হান রাফি নির্মিত এ ওয়েব ফিল্মে তমা জুটি বেঁধেছেন অভিনেতা জাহিদ হাসানের সঙ্গে। মুক্তির পর ফিল্মটি ছিল আলোচনায়। গল্প, নির্মাণ ও অভিনয়-প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই প্রশংসা কুড়ায় এটি। জাহিদ হাসানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন তমা মির্জা। দুজনের অভিনয়নৈপুণ্যতা এ ফিল্মকে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়। জয়া আহসানও পিছিয়ে ছিলেন না। এ মাসেই তিনি হাজির হয়েছিলেন ‘জিম্মি’ নামের একটি সিরিজ নিয়ে। আশফাক নিপুনের পরিচালনায় এটিই ছিল জয়ার বাংলাদেশে অভিনীত প্রথম ওটিটি কনটেন্ট। তবে জয়ার প্রথম কাজ হিসাবে কনটেন্টটি নিয়ে যতটা প্রত্যাশা ছিল, সেভাবে আলোচনা তৈরি করতে পারেনি। রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা এলেন ‘অ্যালেন স্বপনে’ সিরিজের দ্বিতীয় কিস্তি ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে। তবে প্রথম কিস্তির মতো দ্বিতীয়টি সেভাবে জমাতে পারেনি। প্রত্যাশা তুঙ্গে ছিল জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও তাসনিয়া ফারিণ অভিনীত ওয়েব ফিল্ম ‘হাউ সুইট’ নিয়ে। কাজল আরেফিন অমি নির্মিত এ ফিল্মটি আগাগোড়ায় হতাশ করেছে। এ ছাড়া এ মাসে মুক্তি পায় দুটি সিনেমা ‘কিস্তিমাত’ ও ‘ছায়া’। তবে সেগুলো নিয়ে দর্শকদের মধ্যে কোনো ধরনের আগ্রহ দেখা যায়নি।

এপ্রিল ছিল জাকিয়া বারি মমর দখলে

এ মাসে মুক্তি পায় জাকিয়া বারি মম অভিনীত ‘ননসেন্স’ নামে একটি সিরিজ। রাকেশ বসু নির্মিত শহরকেন্দ্রিক পারিবারের গল্পের এ সিরিজটি নিয়েও আলোচনা করার মতো কিছু নেই। মন্দের ভালো চলছে এটি। আশাও নেই, হতাশাও নেই। এ মাসে আলোচনা করার মতো আর কোনো কনটেন্ট নজরে পড়েনি।

মে মাসে ছিল মোশাররফ করিমের আধিপত্য

‘মির্জা’ নামের একটি ওয়েব ফিল্ম মুক্তি পায় এ মাসে। এতে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। একজন গোয়েন্দা চরিত্রে বেশ প্রশংসিত হন এ অভিনেতা। সুমন আনোয়ারের নির্মিত এ ফিল্মটি খুব একটা হইচই ফেলতে না পারলেও, মে মাসে এটিই ছিল একমাত্র কনটেন্ট যা নিয়ে দর্শকের ইতিবাচক মন্তব্যই বেশি ছিল। এদিকে মুক্তি পেয়েছে ‘গুলমোহর’ নামে একটি সিরিজ। আহমেদ শাওকীর নির্মাণে এতে অভিনয় করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। এটি খুব একটা আলোচনা তৈরি করতে পারেনি। এ মাসের আরও দুটি কনটেন্ট ‘ফ্যাকড়া’ ও ‘প্রিয় সত্যজিৎ’ নিয়ে বলার মতো তেমন কিছু নেই।

জুন ছিল ঈদ কনটেন্টে সয়লাব

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে এ মাসে একাধিক কনটেন্ট মুক্তি পায়। তবে ঈদের কনটেন্ট হিসাবে একটিও সেভাবে জমাতে পারেনি। মন্দের ভালো কিছুটা জমিয়েছে ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’ ওয়েব সিরিজটি। অমিতাভ রেজা চৌধুরী নির্মিত এ সিরিজে মোশাররফ করিমের বিপরীতে অভিনয় করেছেন আট অভিনেত্রী। মুক্তির পর এটি নিয়ে দর্শক প্রতিক্রিয়া ছিল মিশ্র। এ ছাড়া এ মাসে মুক্তি পায় ওয়েবফিল্ম ‘পার্টি’। যা কোনো আশার আলো জাগাতে পারেনি। রুনা খান অভিনীত সিনেমা ‘নীল পদ্ম’ ও সিরিজ ‘পাপ কাহিনি’ দর্শক আগ্রহে ছিল না। এ ছাড়া মুক্তি পায় সিনেমা ‘জলরং’। যা নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। পুরোটাই ব্যর্থ। তানজিন তিশা ও প্রার্থনা ফারদিন দীঘিকে দেখা গেছে মাহমুদুর রহমান হিমি নির্মিত ‘হাইড এন সিক’ ওয়েব ফিল্মে। এটি নিয়েও রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম