অ্যাপ এড়ানো খেপেই স্বাচ্ছন্দ্য চালকের
বন্ধের পথে রাইড শেয়ারিং
নিবন্ধিত ১৫টি কোম্পানির বার্ষিক লাইসেন্স নবায়ন হয়েছে ২টির * ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে ১০ প্রতিষ্ঠান
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশ রাইড শেয়ারিং যুগে অ্যাপের মাধ্যমে প্রবেশ করলেও এখন সেই অ্যাপ থেকেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন চালকরা। অ্যাপের বদলে কন্ট্রাক্টে রাইড শেয়ার দেওয়াতেই যেন বেশি স্বাচ্ছন্দ্য তাদের। রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোর কেটে নেওয়া কমিশনকে অতিরিক্ত মনে করায় অ্যাপ ব্যবহারে এ অনীহা বলে জানান চালকরা। অন্যদিকে অ্যাপে রাইড পেতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা এমনকি চালক খুঁজে না পাওয়ায় যাত্রীরাও অ্যাপ ব্যবহারে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
ফলশ্রুত্তিতে একসময় তুমুল জনপ্রিয় বাইক-রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কোম্পানিগুলো মুখ থুবড়ে পড়ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান বাধ্য হচ্ছে তাদের পরিষেবা বন্ধ করতে। এমনকি নিবন্ধিত ১৫টি কোম্পানির মধ্যে ১৩টির বার্ষিক লাইসেন্সই নবায়ন হয়নি। এরমধ্যে তিনটি রাইড শেয়ারিং কোম্পানি লাইসেন্স নবায়নের জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছে আবেদন জানিয়েছে। আর বাকি ১০ প্রতিষ্ঠানের কিছু ইতোমধ্যেই তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে।
বাইক চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের অনেকেই ৭-৮ মাস আগে অ্যাপ ব্যবহার করেছিলেন। আবার কোনো কোনো বাইক চালক অ্যাপ চালু করার দুই-তিন দিন পর্যন্ত ব্যবহার করে এরপর পুরোপুরি ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন।
বাইক চালকরা অ্যাপ ব্যবহার না করায় শুধু যে রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা নয়। অসচেতনতা বাড়ছে বাইক চালকদেরও। গ্রাহক সেবা নিয়ে কোনো জবাবদিহি নেই বলে যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে দরদাম করার সময় কটূক্তি করা, যাচ্ছেতাই ভাবে গাড়ি চালানো, ত্রুটিযুক্ত বাইকে রাইড দেওয়াসহ নানা বিষয়ে ঝুঁকি বাড়ছে। যাত্রী বা চালক কেউ কাউকে না চেনায় বিভিন্ন অপরাধও প্রায়ই ঘটতে দেখা যায়।
এদিকে কন্ট্রাক্টে যাওয়া কিছু যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে অ্যাপ ব্যবহার না করার কারণ হিসাবে জানা যায়, রাইড শেয়ারিং অ্যাপগুলোতে এখন পর্যাপ্ত রাইডার পাওয়া যায় না। সময় নিয়ে রাইডার খুঁজে পেলেও যাত্রীর গন্তব্য পছন্দ না হলে কিংবা দূরে হলে চালকরা সেটা ক্যান্সেল করে। ফলে ধীরে ধীরে যাত্রীদের অ্যাপ ব্যবহারের আগ্রহ কমছে। অনেক সময় অতিরিক্ত যানজট থাকলে কোনো কোনো রাইডার নির্ধারিত গন্তব্যের আগেই যাত্রীকে নামিয়ে দিতে চান, কিন্তু টাকা দাবি করেন অ্যাপে নির্ধারিত টাকাই। যাত্রী তা করতে অস্বীকৃতি জানালে শিকার হতে হয় খারাপ ব্যবহারের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেগাসিটিগুলোতে যানজট এড়াতে দ্রুত পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ও অলস পড়ে থাকা গাড়ি দিয়ে বাড়তি আয় করা রাইড শেয়ারিংয়ের উদ্দেশ্য। কিন্তু বাংলাদেশে লাখো বেকার যুবক রাইড শেয়ারিংকে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসাবে নিয়েছেন। তবে সরকারের নজরদারি না থাকায় সম্ভাবনার এ খাতে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।

