Logo
Logo
×

বাংলার মুখ

সুন্দরগঞ্জে সেতুর কাজ অসমাপ্ত

চূড়ান্ত বিল তুলে লাপাত্তা আওয়ামী লীগ নেতা

Icon

সিদ্দিক আলম দয়াল, গাইবান্ধা

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চূড়ান্ত বিল তুলে লাপাত্তা আওয়ামী লীগ নেতা

আশরাফুল আলম সরকার। ফাইল ছবি

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম সরকার ছিলেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান। কিন্তু অবৈধ পথে টাকা বানাতে গিয়ে তিনি পরিষদের এডিপির টাকা বেপরোয়াভাবে উত্তোলন করতে থাকেন। প্রভাব খাটিয়ে এডিপি প্রকল্পের কাজ বাগিয়ে নিতে তিনি তার স্বজনদের কাজে লাগান। তারপর নামে-বেনামে এডিপির কোটি কোটি টাকার দরপত্র ও কোটেশন ভাউচার দেখিয়ে অর্থ উত্তোলন করেন। একটি কংক্রিটের সেতুর কাজ শেষ না হতেই অর্ধেক ভেঙে পড়ে। তারপর প্রকৌশলীর সঙ্গে দফারফা করে সেতুর কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ২৮ লাখ টাকার ফাইনাল বিল তুলে গা ঢাকা দিয়েছেন। আজও তিনি কাজ ফেলে লাপাত্তা।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী তপন কুমার সরকার বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিপির ২৭ লাখ ৫০ হাজার ২৫০ টাকা ব্যয়ে ১০৫ মিটার কংক্রিট ও কাঠের ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। মেসার্স শাহানুর ইসলাম নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও নেপথ্যে ঠিকাদার ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম সরকার। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রকৌশলীকে ম্যানেজ করে ব্রিজের নামে কাজ শেষ দেখিয়ে ২০২৩ সালে ১৮ জুন চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করা হয়। পরে স্থানীয় জনগণের চাপে ২০২৪ সালের ১৫ মে ২০টি আরসিসি পিলারের ওপর দায়সারাভাবে কাঠের ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ দেখানো হয়। কিন্তু ওই বছরের ২০ জুন রাতে ব্রিজটির ৬টি আরসিসি গার্ডার পিলার দেবে গিয়ে পানির স্রোতের টানে অর্ধেক অংশ ভেঙে পড়ে। তখন প্রকৌশল হিসাবে সুন্দরগঞ্জে ছিলেন না। সেতু নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই ১ মাসের মধ্যে পানির স্রোতে ভেসে যায় সেতুর অর্ধেক অংশ।

এ ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর একাধিক তদন্ত টিম গঠন করা হয়। কিন্তু তদন্ত টিমের রিপোর্ট ফাইল চাপা পড়ে যায়। ইতোমধ্যে সুযোগ বুঝে ভেঙে পড়া সেতু ওই অবস্থায় রেখে আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম সুন্দরগঞ্জ থেকে পালিয়ে যায়। তদন্তে অনেক ফাঁক ফোকর ধরা পড়লেও ঠিকাদার ও আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুই পারের ২০ গ্রামের মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তাদের চরাঞ্চলের ২০টি গ্রামের চাকরিজীবী, মহিলা, শিশু, শিক্ষার্থীসহ সবাই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

বাধ্য হয়ে যোগাযোগ রক্ষায় নিজেরা চাঁদা তুলে ভেঙেপড়া সেতুর অর্ধেক অংশের সঙ্গে বাঁশ কাঠ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে। কিন্তু সাঁকো দিয়ে অসংখ্য মানুষের চলাচলের কারণে এখন আবারও চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পথচারী ও হাটুরে নিজাম উদ্দিন বলেন, আমাদের কষ্ট দেখার মানুষ নেই। কাজ করে অন্য নামে আর টাকা তোলে আওয়ামী লীগ নেতা। টাকা তুলে নিয়ে গায়েব হয়ে গেলেন তা কেউ দেখে না।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম