রংপুরে প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
অর্ধশতাধিক ভবন অতি ঝুঁকিপূর্ণ
মাহবুব রহমান, রংপুর
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রংপুর নগরীতে প্রায় অর্ধশতাধিক ভবন মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে এসব ভবন ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে চিঠি চালাচালি হলেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এর মধ্যে সরকারি ১৭টি ভবন মারাত্মক ঝুঁকিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গণপূর্ত রংপুর বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী সাফিউল আলম। তিনি বলেন, এসব ভবনের প্রায় সবগুলোর নির্মাণকাল দেড়শ বছর পেরিয়ে গেছে। রংপুরের বেসরকারি ভবন সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে রংপুর সিটি করপোরেশনের নগরবিদ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তাদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ চলছে। পুরোনো হিসাবে প্রায় ৩০টির অধিক ভবন ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। আরও কিছু ভবন নির্মাণ ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় সেসব ভবন মালিকদের সতর্ক করা হয়েছে। রংপুরের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি হলো রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার হাসপাতাল। এটি ১৮৬৪ সালে নির্মাণ করা হয়। ১৯১২ সালে নির্মাণ করা হয়েছে পুলিশ সুপারের রান্নাঘর ও গৃহপরিচারিকার বাসভবন। এডিএম কোর্ট ভবন নির্মাণ করা হয়েছে ১৯৩১ সালে। এরকম রেকর্ডরুম (১৯১৬), জেলা জজের বাসভবন (১৯১৬), সিভিল সার্জন বাসভবন (১৯১৬), সিভিল সার্জন অফিস (১৯৬১), অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বাসভবন (১৯১২), পুলিশ সুপারের বাসভবন (১৯১২), রংপুর শিশু পরিবার বালক (১৯৮৬), ডিসি বাংলো পুলিশ গার্ড সেড (১৯২০) এ ভবনগুলো সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও সেসব ভবনে বিচারিক কাজ, কয়েদিদের চিকিৎসাসহ বসবাস করছেন সংশ্লিষ্টরা। রংপুর সিটি করপোরেশনের নগরবিদ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আমাদের সিটির পার্ক মার্কেট প্রায় ১০ বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো দোকান মালিক তাদের পজিশন ছেড়ে না যাওয়ায় সেখানে কোনো কাজ করা সম্ভব হয়নি। একইভাবে নগরিতে ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবন যা রংপুর কলেজ হোস্টেল বা মুসলিম ছাত্রাবাস হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তা প্রায় ১২ বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও সেখানে ছাত্ররা বসবাস করছেন। গণপূর্ত বিভাগ রংপুর অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী সাফিউল আলম জানিয়েছেন, আমাদের পক্ষ থেকে এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা প্রস্তুত করে অনেকবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখনো কোনো নির্মাণাদেশ না পাওয়ায় আমরা এসব ভবন ভেঙে ফেলে পুনঃনির্মাণ করতে পারছি না। বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অফিসের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক আনোয়ারুল হক জানিয়েছেন, যেসব ভবন নগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে-এসব ভবন মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হলেও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
