খুলনায় বিল্ডিং কোড ছাড়াই নির্মিত হচ্ছে মৃত্যুফাঁদ
কেসিসির ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাস করছেন মানুষ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বিল্ডিং কোড উপেক্ষা করে ভবন নির্মাণ এবং খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কেডিএ) অনুমোদিত নকশা অমান্য করায় খুলনায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিয়ে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) উদ্যোগে চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ বসবাস করায় বড় ধরনের ভূমিকম্পে প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে অর্ধশত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা করেছে কেসিসি। কেসিসি সূত্র জানিয়েছে, নগরীর প্রায় ৭৭ হাজার হোল্ডিংয়ের মধ্যে ৩১টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১৭টি অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ভবনের অনেকগুলোতে লাল পতাকা টাঙিয়ে বসবাসের অনুপযোগী ঘোষণা করা হলেও বাসিন্দারা তা মানছেন না। কেসিসির এস্টেট অফিসার গাজী সালাউদ্দিন জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বাড়িগুলো বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের আওতাভুক্ত। প্রতিষ্ঠানগুলোকে বারবার পদক্ষেপ নিতে বলা হলেও তারা উদাসীন। ফলে ভূমিকম্প হলে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া প্রায় আটটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কিছু অংশ অপসারণ করা হয়েছে।
এদিকে নগরীর নির্মাণ কাজ তদারকি নিয়ে রয়েছে গুরুতর অভিযোগ। অভিযোগ উঠেছে, কেডিএর প্ল্যান নেওয়া হলেও নির্মাণকালে বহু ক্ষেত্রেই তা অমান্য করা হচ্ছে এবং মানসম্মত সামগ্রীর ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে খুলনার মাটির দুর্বল গঠন। তাছাড়া বিল্ডিং কোড মানার কথা থাকলেও অধিকাংশ বাড়ির মালিকরাই এটা মানছে না। যার ফলে ভবনগুলোতে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। এ বিষয়ে আসলে সরকারিভাবে মনিটরিং নেই খুলনায়। কেডিএর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানায়, প্রতিবছর গড়ে এক হাজারের মতো বাড়ি কোড মেনে তৈরি করে না। আমরা এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না। কারণ সরকারিভাবে তেমন কোনো মনিটরিং নেই এ বিষয়ে। কুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, খুলনা কম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে (জোন-৪) থাকলেও এখানকার মাটির স্তর ভালো নয়। অন্য অঞ্চলে বড় ভূমিকম্প হলে খুলনার ভবনগুলো দেবে যাওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। এছাড়া দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি বাড়াতে চলেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। খুলনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে উদ্ধার কাজের জন্য খুলনায় একটি টার্ন টেবিল ল্যাডার (TTL) গাড়ি প্রস্তুত আছে, যা ৬-৭ তলা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ করতে সক্ষম। এছাড়াও, অত্যাধুনিক হ্যামার ড্রিল, স্লাপ কাটার ও ভাইব্রেটর মেশিনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম বিভিন্ন ফায়ার স্টেশনে মজুদ রয়েছে।

