নাজিরপুরে অডিটরিয়াম ভবন নির্মাণ
কাজ শেষ না করেই বিল তুলে পালিয়েছে ঠিকাদার
পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পিরোজপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নাজিরপুর উপজেলা অডিটরিয়াম ভবন নির্মাণ প্রকল্পে সরকারি অর্থের নয়ছয় করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ প্রকল্পে প্রায় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হলেও নিুমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ঠিকাদার শুধু অবকাঠামোগত কিছু কাজ করে সমুদয় টাকা তুলে পালিয়েছেন। বর্তমানে অডিটরিয়াম ভবনটি বখাটেদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে পিরোজপুর ও নাজিরপুরের এলজিইডির কর্মকর্তারা গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে রাজি হচ্ছেন না। তারা বলছেন, পূর্বের প্রকৌশলীরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। এছাড়া ৫ আগস্টের পর ঢাকা থেকে তদন্তের জন্য একটি টিম এসে প্রকল্পের সব নথিপত্র নিয়ে গেছে। এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২০২০ সালে নাজিরপুর উপজেলা অডিটরিয়াম ভবনের কাজ নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সিমরান মায়ান ট্রেড এন্টারপ্রাইজ ও এমএমটিআই (জেভি) নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সরেজমিন দেখা যায়, ভবনটি একটি জলাশয়ের মাঝে নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণ কাজে অত্যন্ত নিুমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ ডিজাইন অনুযায়ী তুলনামূলক কম রড দিয়ে পাইলিং করা হয়েছে এবং ভূগর্ভে পাইলিংয়ের পরিধি কম হওয়ায় ভবনের পশ্চিমপাশ হেলে পড়েছে। ভবন নির্মাণের আগে জলাশয়ের চারপাশে থাকা শতাধিক মূল্যবান মেহগনি গাছ বিনা টেন্ডারে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কেটে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে ওই ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে। সে গাছ দিয়েই ভবনের ২৪টি দরজার ফ্রেম তৈরি করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, কাজ শুরুর পরপরই পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার এবং নাজিরপুর উপজেলা প্রকৌশলীর যোগসাজশে ঠিকাদার বাকি কাজ শেষ না করেই সিংহভাগ টাকা উত্তোলন করে নেন। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা করেছে বলে জানা গেছে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি, উত্তোলিত অর্থ ভাগবাঁটোয়ারা করে ঠিকাদার পলাতক রয়েছেন। বর্তমানে ভবনটির বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফাটল দেখা দিয়েছে। অডিটরিয়াম ভবনটি তদারকির দায়িত্বে থাকা এলজিইডির কর্মকর্তারা এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। এদিকে নাজিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী দীর্ঘদিন ধরে অফিসে অনুপস্থিত রয়েছেন। মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. জিয়ারুল ইসলামকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলেও তিনি দাপ্তরিক কাজে অনুপস্থিত থাকছেন। অডিটরিয়াম প্রসঙ্গে জানতে তার অফিস কক্ষে বারবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া শাহানাজ তমা বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের যেসব কাজে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে সেগুলো আপাতত বন্ধ রয়েছে। তবে তদন্ত শেষে কাজগুলো দ্রুত শেষ করার জন্য তৎপর রয়েছে প্রশাসন।
