শাহজাদপুরে নদীর ভাঙনে দিশেহারা মানুষ
শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শাহজাদপুর উপজেলার তিন ইউনিয়নের ৯টি গ্রামে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। গ্রামগুলো হচ্ছে-কৈজুরি ইউনিয়নের চর ঠুটিয়া, সোনাতনী ইউনিয়নের মাকড়া, ধীতপুর, কুড়সি, বারপাখিয়া, বড় চামতারা, বানতিয়ার, গালা ইউনিয়নের বৃহাতকোড়া ও মোহনপুর গ্রাম। চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাঙনের তাণ্ডবে এসব গ্রামের অধিকাংশ ফসলি জমি, বাড়িঘর, মসজিদ, মাদ্রাসা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অবশিষ্টটুকুও বিলীনের পথে। গত এক মাস আগেও যেখানে বাড়িঘর ছিল, এখন সেখানে অথৈ পানি। এখানকার জমিতে প্রচুর পরিমাণে পটোল, বেগুন, ধান, বাদাম, মাষকালাই, বাঙ্গি, ধনিয়াসহ সব ধরনের ফসল হয়ে থাকে। এছাড়া এখানকার কৃষকরা গরু লালন-পালন করে বাড়তি আয় করেন। ফলে যমুনা নদীবেষ্টিত সোনাতনী ইউনিয়নের মানুষ আগের চেয়ে অনেক সচ্ছল হয়ে উঠেছেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এখানে নতুন করে যমুনার ভাঙন শুরু হয়েছে। ফলে এ এলাকার অধিকাংশ ফসলি জমি ও বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে নতুন করে ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে এখানকার কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ বিষয়ে ধীতপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব কালু মোল্লা বলেন, ‘এ চরে প্রচুর পরিমাণে পটোল, বেগুন, ধান, বাদাম, মাষকালাই, বাঙ্গি, ধনিয়াসহ সব ধরনের ফসল হয়ে থাকে। ১৯৮৮ সাল থেকে এখানে ভাঙন শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত আমার বাড়ি ১১ ভাঙা দিছি। পটোলসহ নানা ফসল বুনে ভালোই চলছিলাম। এখন বাড়িঘর ও ফসলি জমি সবকিছু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় অন্যের জমিতে ঘর তুলে থাকি। এ ঘরটিও ভাঙনের কবলে পড়েছে। এ ভিটা ভেঙে গেলে কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেব, কি খাব তা নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েছি।’ ওই গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, গত এক বছরে সোনাতনী ইউনিয়নের শ্রীপুর থেকে বারোপাখিয়া পর্যন্ত ৫-৬টি গ্রামের ৩০০-৪০০ বাড়িঘর যমুনা নদীতে চলে গেছে। এ ভাঙনরোধে এখানে দ্রুত বাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেরিন আহমেদ বলেন, গত ছয় বছরে এ তিনটি ইউনিয়নের গ্রামগুলোর অন্তত ২৮০ হেক্টোর ফসলি জমি যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আবার এর বিপরীত পাশে ৯০ হেক্টেরের বেশি জমি জেগে উঠেছে। ফলে এ ইউনিয়নে জমির পরিমাণ কমেনি। তবে যেসব ফসলি জমি নতুন করে ভেঙে যাচ্ছে সেসব জমির মালিক তাৎক্ষণিকভাবে কিছুটা হলেও ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ভাঙন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ভাঙনরোধে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলে দ্রুত বস্তা ফেলার ব্যবস্থা করা হবে।
