Logo
Logo
×

বাংলার মুখ

পদ্মা সেতু প্রকল্পরক্ষা বাঁধে ভাঙন

জাজিরায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক

Icon

কে এম রায়হান কবীর, শরীয়তপুর

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শরীয়তপুরের জাজিরার মাঝিরঘাট এলাকায় সোমবার বিকেল থেকে পদ্মা সেতু প্রকল্পরক্ষা বাঁধে হঠাৎ ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে বসতবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অন্তত ২০টি স্থাপনা বিলীন হয়েছে। প্রয়োজনীয় শ্রমিক না থাকায় অনেকেই তাদের ঘরবাড়ি হারাচ্ছেন চোখের সামনে। অতিদ্রুত ভাঙন ঠেকাতে না পারলে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে রাস্তাঘাট, হাটবাজারসহ শতাধিক ঘরবাড়ি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে ভাঙন কবলিত স্থান পরিদর্শন শেষে জিওব্যাগ ডাম্পিংয়ের কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ওই স্থানে মঙ্গলবার দুপুর থেকে বালুভর্তি জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলার কাজ শুরু করা হয়। স্থানীয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০১০-২০১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতু থেকে মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। আর এতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা। গত বছরের ৩ নভেম্বর থেকে বাঁধের নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকার ধস শুরু হয়। ১৬ নভেম্বর বিকাল পর্যন্ত বাঁধটির প্রায় ১শ মিটার ধসে পড়ে নদীতে। এতে কংক্রিটের সিসি ব্লকগুলো তলিয়ে যায় পানিতে। এ ছাড়াও এলাকাটির আশপাশে দেখা দেয় ফাটল। পরে বাঁধটি সংস্কারে দায়িত্ব দেওয়া হয় পাউবোকে। গত বছর ওই বাঁধের যে ১শ মিটার

অংশ বিলীন হয়েছিল, দুই কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই স্থানে বালু ভর্তি জিওব্যাগ ও সিসিব্লক ফেলা হয়। তা কোনো কাজে আসে নাই বলে মাঝিরঘাট এলাকার কুদ্দুস মাঝি, আমিরুল হকসহ স্থানীদের অভিযোগ। এদিকে ঈদের দিন ভোরে সংস্কার করা বাঁধের ২শ মিটার অংশসহ পাশের আরও একটি স্থানে ভাঙন শুরু হয়। একদিনের মধ্যে বাঁধের ২৫০ মিটার অংশ নদীতে তলিয়ে যায়। এর পরই ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে নতুন করে জিওব্যাগ ডাম্পিং করে পাউবো। এদিকে সেই ক্ষত কাটতে না কাটতেই সোমবার বিকেলে নতুন করে ভাঙন দেখা দেয় রক্ষা বাঁধে। মাত্র দুই ঘণ্টার ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় ১০টি বসতবাড়ি ও ১০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়া ভাঙনের আশঙ্কায় সরিয়ে নেওয়া হয় আরও ২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। মাঝির ঘাট এলাকার হাসান মিয়া বলেন, দুপুরে নদীর অবস্থা স্বাভাবিক দেখেছি। বিকালে মাইকিংয়ে শুনতে পাই নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। বিকালে নদীর পাড়ে এসে দেখি চোখের সামনে বেড়িবাঁধসহ বেশকিছু বাড়িঘর নদীতে চলে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা সোহাগ মাঝি বলেন, নদী ভাঙন কোথায় গিয়ে ঠেকবে আমরা জানি না। লোকজন বাড়িঘর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিচ্ছে। আমরা চরম আতঙ্কের ভেতরে আছি। মিজানুর রহমান বলেন, এখনো বর্ষার পানি বাড়ে নাই। তাতেই এমন আকস্মিক ভাঙন শুরু হয়েছে। জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায় বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের তালিকা করে, তাদের সরকারি সাহায্য করবো। পাউবোর ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শাজাহান সিরাজ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভাঙনের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। বেশকিছু ঘরবাড়ি নদীতে চলে গিয়েছে। কিছু জিও ব্যাগের কাজ শুরু হয়েছে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম