Logo
Logo
×

বাংলার মুখ

শিশু আব্দুল্লাহকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা

মামলার তদন্তে পুলিশের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট পরিবার

জুলাই অভ্যুত্থান

Icon

এ এম জুবায়েদ রিপন, কুষ্টিয়া

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গত বছরের ৫ আগস্ট বেলা ২টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার সামনে আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিল ১৩ বছর বয়সী শিশু আব্দুল্লাহ। সেখানেই তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। আব্দুল্লাহ শহরের চর থানাপাড়া এলাকার লোকমান হোসেনের ছেলে। কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিস গেট সংলগ্ন চায়ের দোকানে বাবার সঙ্গে কাজ করত সে। তবে ভালো নেই নিহত আব্দুল্লাহর পরিবার। তাই স্বজনদের আক্ষেপেরও শেষ নেই। আব্দুল্লাহর বাবা লোকমান হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, ‘ছেলে জুলাই আন্দোলনে আত্মত্যাগ করল। কিন্তু এক বছর হতে চলল, হত্যার বিচার পাইলাম না। আমার ছেলেকে হাজার হাজার মানুষের সামনে কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই সাহেব আলী গুলি করে হত্যা করেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা এখনো কীভাবে চাকরি করেন জানি না। ওই ঘটনায় এসআই মুস্তাফিজও জড়িত ছিল।’ তিনি বলেন, এসআই সাহেব আলীর ফাঁসি চাই। প্রকাশ্যে মার্ডার করে এখনো কীভাবে এসআই সাহেব আলী ও এসআই মুস্তাফিজ চাকরি করে? লোকমান হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার বা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের কোনো আগ্রহই লক্ষ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, অসুস্থ থাকায় আমি ওইদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আমার ছেলে আব্দুল্লাহও হাসপাতালে আমার কাছে ছিল। সে ভাত খাওয়ার কথা বলে হাসপাতাল থেকে বের হয়। এরপর কুষ্টিয়া মডেল থানার সামনে আন্দোলনে যুক্ত হয়। আন্দোলনরত অবস্থায় আমার ছেলেকে ধরে দুই হাত মুচড়ে ভেঙে দিয়েছিল এসআই সাহেব আলী। এরপর বুকে গুলি করে হত্যা করে। আওয়ামী লীগের হানিফ এমপি ও তার ভাই আতার নির্দেশে এসআই সাহেব আলী আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করে। সাহেব আলী আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি চালিয়েছে। তার গুলিতে অনেকে আহত এবং নিহত হয়েছেন। সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি, দ্রুত যেন এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়। আব্দুল্লাহ হত্যার ঘটনায় ১৫ আগস্ট রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিসহ মোট ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০-২০ জনকে। মামলার বাদী আব্দুল্লাহর বাবা লোকমান হোসেন। মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। এ সময় দলীয়ভাবে মামলাটি করা হয়েছিল। যার কারণে মামলায় কাদের আসামি করা হয়েছিল, আমি জানতাম না। তবে সে মামলায় আসামি হিসাবে এসআই সাহেব আলীর নাম ছিল না। পুলিশ তাকে আসামি

করতে দিচ্ছিল না। এরপর ট্রাইব্যুনাল থেকে লোক এসেছিল। তাদের কাছে চারজনকে আসামি করে মামলা করেছি। এসআই সাহেব আলী, আওয়ামী লীগের এমপি হানিফ, তার ভাই আতা ও মানব চাকির নামে অভিযোগ দিয়েছি। কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম