Logo
Logo
×

রাজধানীর খবর

ঢামেকের ফুটপাত হকারের দখলে

১৫ দিনের আশ্বাস, এক মাসেও হয়নি সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ

মো. জহিরুল ইসলাম

মো. জহিরুল ইসলাম

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঢামেকের ফুটপাত হকারের দখলে

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চারপাশের ফুটপাত ও সড়ক এখনো হকারদের দখলে রয়েছে। ছবি: যুগান্তর

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চারপাশের ফুটপাত ও সড়ক এখনো হকারদের দখলে রয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) পরিচালিত উচ্ছেদ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শেষ হলেও মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আগের মতো দোকানপাট ফিরে এসেছে। হাসপাতালসংলগ্ন এলাকার ফুটপাত এখনো দখলমুক্ত হয়নি, বরং নতুন করে আরও অস্থায়ী দোকান বসিয়েছেন হকাররা।

সরেজমিন মঙ্গলবার দেখা যায়, জরুরি বিভাগের গেট থেকে নতুন ভবন পর্যন্ত ফুটপাত ও সড়কজুড়ে সারি সারি দোকান বসানো হয়েছে। রঙিন ছাতার নিচে ফল, জুস, চা-সিগারেট, প্রসাধনী, কাপড়সহ নানা পণ্য বিক্রি হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগীর স্বজন ও পথচারীরা দোকানগুলোয় ভিড় করছেন। জরুরি বিভাগের প্রবেশপথ ঘেঁষে রয়েছে চা-সিগারেট, স্যুপ, কাটা ফল ও ঠান্ডা পানির দোকান। সামনের দিকে গরম ভাত-তরকারি, পরোটা, ফল, কাপড় ও প্রসাধনীর দোকান। এছাড়াও হাসপাতালের চারপাশের হোটেল, রেস্তোরাঁ ও হ্যান্ডি-ফুডের দোকানগুলোয় খাবার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি ও পরিবেশন করা হচ্ছে। রান্নার স্থান অপরিচ্ছন্ন, টেবিলে রাখা খাবারের ওপর ধুলোবালি জমে ও মাছি পড়ছে। এসব খাবার কিনে খাচ্ছেন হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা, যা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কের এক পাশে ব্যাটারিচালিত রিকশা, অন্য পাশে দোকান ও ক্রেতার ভিড়ে পুরো রাস্তা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এতে রোগী বহনকারী রিকশা ও অ্যাম্বুলেন্সও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না। বিক্রেতাদের হাঁকডাক, রিকশার হর্ন ও মানুষের গুঞ্জনে হাসপাতাল এলাকা এক অঘোষিত হাটে পরিণত হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দোকানি বলেন, আমরা গরিব মানুষ। অভিযান হলে কিছু সময়ের জন্য দোকান গুটিয়ে যাই, কিন্তু কোথাও বসার জায়গা নেই, তাই আবার ফিরে আসি।

একজন পথচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রোগী নিয়ে ঢামেক হাসপাতালে ঢোকা এখন দুর্ভোগের ব্যাপার। ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় হাঁটাও কষ্টকর, অ্যাম্বুলেন্সও ঢুকতে পারে না।

১৩ অক্টোবর যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার জানিয়েছিলেন, ঢামেক হাসপাতালসংলগ্ন ফুটপাত ও সড়ককে স্থায়ীভাবে দখলমুক্ত করে ১০-১৫ দিনের মধ্যে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ সম্পন্ন করা হবে। তিনি তখন আরও বলেন, এলাকা নতুনভাবে সাজানো হবে। ল্যান্ডস্কেপিং, ঝরনাযুক্ত লাইট, গোলাকার বেঞ্চ ও স্থায়ী বসার স্থান নির্মাণের মাধ্যমে পুরো এলাকাকে সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও পরিবেশবান্ধব করা হবে।

কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও এখনো সেই কাজ হয়নি। শুধু রাস্তার পাশে এলোমেলোভাবে কয়েকটি ফুল ও গাছের চারা রাখা হয়েছে। বাকিটা আগের মতোই অপরিচ্ছন্ন।

স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনের অভিযান শেষ হলেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হকাররা আবার ফিরে আসে। স্থায়ী সমাধান না হলে এই দখলদারি চলতেই থাকবে বলে জানিয়েছেন একজন দোকানমালিক।

ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. মাহবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ প্রায় ৪৫ শতাংশ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আমরা ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো এলাকায় সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শেষ করে উদ্বোধন করব। তিনি আরও বলেন, পুরো এলাকায় স্থায়ী বসার স্থান, বেঞ্চ, ল্যান্ডস্কেপিং, ঝরনাযুক্ত লাইট ও গোলাকার বসার বেঞ্চসহ সৌন্দর্যবর্ধনের বিভিন্ন জিনিসপত্র বসানো হবে। উদ্বোধনের ৭-৮ দিন আগে থেকে আমরা পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে এসব স্থাপন করব।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম