Logo
Logo
×

রাজধানীর খবর

নগরবাসী সাবধান!

Icon

আল ফাতাহ মামুন

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঈদের ছুটিতে নাড়ির টানে গ্রামে যায় মানুষ। ব্যস্ত রাজধানীর চেহারা তখন চেনাই যায় না। পুরো ফাঁকা হয়ে যায় রাজধানী ঢাকা। এ সুযোগটিই কাজে লাগায় একটি অসাধু চক্র। রাজধানীজুড়ে ছড়িয়ে আছে এ চক্রটি। কখনও একা কখনও দলবদ্ধভাবে ফাঁকা বাসা-বাড়িতে ঢুকে চুরি কিংবা ডাকাতির উৎসবে মেতে ওঠে তারা। প্রতি বছরই ঈদের ছুটি শেষে ঘরে ফিরে মাথায় হাত দিতে হয়েছে- এ নগরীতে এমন পরিবারের সংখ্যা উল্লেখ করার মতোই। মানুষ যখন উৎসবের আনন্দে মেতে থাকে, তখনই কারও কারও সর্বনাশের পাঠ চুকে যায়। তাই ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আগে সাবধান-সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে নগরবাসীকে।

ভালো করে দরজা-জানালা, বন্ধ না করলে বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে হবে আপনাকে। এমনটিই বলছিলেন পলাশী বাজারের বাসিন্দা আরমান রহমান। তিনি বলেন, গেল রোজার ঈদে ভ্যান্টিলেটর ও বাথরুমের জানালা দিয়ে চোর ঢুকে আমার বাসায়। তারপর সহযোগীদের সাহায্যে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, ল্যাপটপ নিয়ে যায়। খুব বড় ভুল করেছি ভ্যান্টিলেটর বন্ধ না করে। চাঁনখারপুলের নাজির আহমেদ বলেন, আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে গত বছর চুরি হয়। আমরা বাইরে ঘুরতে গিয়েছিলাম। এসে দেখি দরজা খোলা। তালা ভাঙা। ঘরের জিনিসপত্র এলোমেলো। ক্ষতি যা হওয়ার ততক্ষণে হয়ে গেছে আমার প্রতিবেশীর।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে যাত্রাবাড়ীর একটি চক্রের নেতা যুগান্তরকে বলেন, আমরা টার্গেট করেই বাসা-বাড়িতে ঢুকি। ঈদের ছুটি শুরু হলে কোন বাসা থেকে কারা ছুটিতে যাচ্ছে ছদ্মবেশে নজর রাখি আমরা। সুযোগ বুঝে ওই বাসায় অভিযান চালাই। নগদ যা পাই লুটে নিই। বেশির ভাগ দিন আমরা সকালের সময়টা বেছে নিই। তখন সবাই ঘুমে অচেতন থাকে। কাজে সুবিধা হয় আমাদের। ঈদকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোনো কৌশল আছে কি না জানতেই চাইলে ওই চক্রের নেতা বলেন, বিশেষ কৌশল তো আছেই। তবে তা বলা যাবে না। একটি কমন কৌশল আমরা ব্যবহার করি, তা হল- ফাঁকা বাসার প্রতিবেশীরা কখন বের হয়, সেদিকে আমাদের তীক্ষè নজর থাকে। যখন বাড়ি বা ফ্লোর পুরিপুরি ফাঁকা হয়ে যায়, তখন নিশ্চিন্ত কাজ করা যায়।

নগরীর আরসিন গেট এলাকার বাড়ির মালিক আহমেদ নাসির বলেন, ঈদের সময় রাজধানী ফাঁকা হয়ে যায়। তখন চুরি-ডাকাতি ভয়াবহ রকম বেড়ে যায়। যারা রাজধানীতে থাকে, তারাও বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে থাকে। দেখা গেছে, পাশের ফ্ল্যাটে ডাকাত পড়েছে। আমি দেখছি, কিন্তু কিছু বলা যাচ্ছে না। কারণ, কাকে বলব? কাকে ডাকব? আমার বাড়ি, পাশের বাড়ি মিলে তো ১০টা ফ্যামিলও পাওয়া যাবে না। আবার যারা আছে, তাদের অনেকেই বেড়াতে বা ঘুরতে বেরিয়ে গেছে।’ এরকম পরিস্থিতিতে পড়লে চেঁচামেচি করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। নিকটস্থ থানায় ফোন করে জানাতে হবে-০ বলেছেন জুরাইনের নাজ ভিলার মালিক কাশেম মাহবুব। তিনি বলেন, বছরতিনেক আগে ঈদের একদিন পর আমার বাসায় ডাকাত পড়ে। থানায় ফোন করলে পুলিশ এসে হাতেনাতে গ্রেফতার করে চক্রটিকে।

ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে বাসা ছাড়ার আগে অবশ্যই বিশেষ সতর্ক হতে হবে নগরবাসীকে। এ সময়ই চুরি-ডাকাতি বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হল, ভালো করে বাসা তালাবদ্ধ করা। প্রতিবেশীদের মধ্যে যারা ঢাকায় থেকে যাবে তাদের খেয়াল রাখার কথা বলা। বাসায় সিসি টিভি ক্যামেরা থাকলে তা টিকমতো কাজ করছে কি না খেয়াল রাখা। সম্ভব হলে মোবাইলের সঙ্গে সিসি ক্যামেরা কানেক্ট করে নেয়া। অর্থাৎ, ব্যক্তিগত সুরক্ষা যেন মজবুত হয় নগরবাসীর। আর যারা ঢাকায় থাকেন, অবশ্যই হাতের কাছে নিকটস্থ থানার ফোন নম্বর রাখবেন। কোনো বিরূপ পরিস্থিতির স্বীকার হওয়া মাত্রই পুলিশের সহায়তা নেবেন।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম