Logo
Logo
×

রাজধানীর খবর

দক্ষিণ সিটি করপোরেশন

কাউন্সিলর না থাকায় সেবা পেতে ভোগান্তি

ট্রেড লাইসেন্স পেতে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার

Icon

ডেমরা ও মতিঝিল (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ওয়ার্ডগুলোতে কাউন্সিলর না থাকায় নাগরিকসেবা পেতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বাসিন্দারা। এক্ষেত্রে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ, উত্তরাধিকার সনদ, বিভিন্ন প্রত্যয়নপত্র, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা প্রত্যয়নপত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা পেতেও সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডের ব্যবসায়ীরা ট্রেড লাইসেন্স পেতে আঞ্চলিক কার্যালয়ের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এক্ষেত্রে অঞ্চল অফিসে ঢুকলেই দালালের দৌরাত্মে জিম্মি হয়ে পড়েন সেবাপ্রত্যাশীরা। কারণ নিজে নিজে চেষ্টা করলে কাজের কাজ কিছুই হয় না। অভিযোগ রয়েছে, আগে কাউন্সিলররা থাকা অবস্থায় এসব সনদ ও প্রত্যয়নপত্র পেতে একদিনের বেশি সময় লাগত না, কিন্তু ডিএসসিসির বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ওইসব সেবা পেতে অন্তত ৫ থেকে ৩০-৩৫ দিন সময় লাগে। এদিকে ঊর্ধ্বতনদের নজরদারি না থাকায় বর্তমানে এসব নাগরিকসেবা টাকার বিনিময় ছাড়া চিন্তাও করা যায় না। আর আবেদনে যদি কোনো প্রমাণপত্র কম থাকে তাহলে অধিক টাকা গুনতে হয় সেবাপ্রত্যাশীদের।

আরও অভিযোগ রয়েছে, জনবল কম নিয়োগ করায় ডিএসসিসির অধিকাংশ ওয়ার্ডে এখন সরাসরি সচিবদের সেবা মিলছে না। এক্ষেত্রে কোনো কোনো সচিব দুই ওয়ার্ডের দায়িত্বে রয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই তাদের পছন্দমতো ওয়ার্ডে বসে অন্য ওয়ার্ডবাসীকে সেবা দিচ্ছেন। আবার অনেক ওয়ার্ডে কাউন্সিলর অফিস না থাকায় সচিবদের বসানো হচ্ছে ডিএসসিসির কোনো কোনো কমিউনিটি সেন্টার বা অফিসে। এতে একেক ওয়ার্ডের অধিবাসীদের সেবা নিতে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে হয়। অথচ আগে নিজের ওয়ার্ডে বসেই কাউন্সিলের অফিস থেকে সহজে সেবা নিতে পারতেন অধিবাসীরা। এদিকে কাউন্সিলর না থাকায় প্রতিটি ওয়ার্ডে শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়েছে। আগে ওয়ার্ডবাসীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও জটিলতা সালিশির বৈঠকের মাধ্যমে সহজেই সমাধান করতেন কাউন্সিলররা; যা এখন পুরোপুরি বন্ধ। এ বিষয়ে ডিএসসিসির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সচিব সৈয়দ ফজলুল করিম ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সচিব ওসমান গনি যুগান্তরকে বলেন, তাদের ওয়ার্ডে কাউন্সিলর অফিস না থাকার কারণে ডিএসসিসির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসাবো কমিউনিটি সেন্টারে বসে ওয়ার্ডবাসীদের সেবা দিতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে ওই দুটি ওয়ার্ড থেকে চার নম্বর ওয়ার্ডের দূরত্ব ও যাতায়াতে সমস্যা অনেক। তারপরও তারা যথাসাধ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ওয়ার্ডবাসীদের। এখানে বসে আরেকটি সুবিধাও রয়েছে, কারণ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার খুব কাছেই আমরা দায়িত্ব পালন করছি বলে সহজে সেবাও দিতে পারছি।

এদিকে প্রতিটি ওয়ার্ডে টিসিবির পণ্য সংগ্রহের ত্রুটিপূর্ণ কার্ড সংশোধনের সুযোগ থাকা পরও কতিপয় ওয়ার্ড সচিবের খামখেয়ালিপনায় হাজার হাজার কার্ড বাতিল হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ওয়ার্ডভিত্তিক আগের জমা পাঁচ থেকে ছয় হাজার আবেদনের অনুমোদন না দিয়ে টাকার বিনিময়ে নতুন করে আবেদন নেওয়া হচ্ছে। এদিকে বাতিল হওয়া টিসিবির ডিজিটাল কার্ডধারীরা নতুন করে আবেদন করছেন নতুন টিসিবির কার্ড পেতে। এ বিষয়ে ডিএসসিসির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সচিব আনজুম আরা সরকার রজনী যুগান্তরকে বলেন, আগের কাউন্সিলরদের মতো আমরা সেবা দিতে পারি না। কারণ কারও সঙ্গে আমাদের পূর্বপরিচয় নেই। ডিএসসিসির ৭৪ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব ইব্রাহিম খলিল যুগান্তরকে বলেন, ওয়ার্ডবাসীর সঙ্গে পূর্বপরিচয় না থাকার কারণে আমাদের সবাইকে একটি কঠোর নিয়মের মধ্যে সব সেবামূলক কার্যক্রমের সমাধান করতে হচ্ছে। ডিএসসির ৬৮ নম্বর ওয়ার্ড সচিব সাইফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, আমার ওয়ার্ডে অনেক টিসিবির ত্রুটপূর্ণ কার্ড বাতিল হয়েছে। এ বিষয়ে ডিএসসিসির অঞ্চল-২ আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম ও অঞ্চল-৬ আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুজাউদ্দৌলাকে খুদে বার্তাসহ, ফোন করে পাওয়া যায়নি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম