Logo
Logo
×

রাজধানীর খবর

উত্তরা কমিউনিটি সেন্টার

বুকিং নেই, খালি পড়ে আছে

কমিউনিটি সেন্টারের হালচাল

Icon

উত্তরা পশ্চিম ও পূর্ব (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বুকিংয়ের অভাবে খালি পড়ে আছে উত্তরা কমিউনিটি সেন্টার। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশাল হলরুম ও পার্কিং স্পেস থাকলেও তেমন একটা আয়োজন কিংবা নেই কোনো শোরগোলের বালাই। মাসে আশানুরূপ বুকিং না থাকায় বছরের বেশির ভাগ সময়ই খালি পড়ে থাকে উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারের হলগুলো। এতে আশানুরূপ রাজস্ব পাচ্ছে না সিটি করপোরেশন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রচারণা না থাকায় ও উত্তরার এক প্রান্তে অবস্থান হওয়ায় বুকিংয়ে তেমন একটা সাড়া নেই। সেই সঙ্গে হল ভাড়া অধিক হওয়ায় আগ্রহীরা সাশ্রয়ী খরচে বিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্টকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।

উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারটি তিন তলাবিশিষ্ট ভবনে পরিচালিত হচ্ছে। নিচ তলা গাড়ি পার্কিং এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ৭ হাজার বর্গফুট আয়তনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলরুম রয়েছে। পর্যাপ্ত চেয়ার-টেবিল, টয়লেট, ডেকোরেশনসহ প্রায় এক হাজারেরও বেশি লোক ধারণের ব্যবস্থা থাকলেও মাসে হল বুকিংয়ের পরিমাণ খুবই কম। অপরদিকে, কমিউনিটি সেন্টারটি দেখভাল ও তদারকিতে ৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও অবহেলায় সময় পার করছেন কেউ কেউ।

উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের ১৩/ডি নং রোডে অবস্থিত উত্তরা কমিউনিটি সেন্টার সরেজমিন দেখা যায়, কমিউনিটি সেন্টারের সামনে রাস্তার ওপর সারিবদ্ধভাবে পার্কিং করে রাখা হয়েছে কয়েকটি প্রাইভেটকার। ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পার্কিং করা আরও দুটি গাড়ি। নিচের উত্তর পূর্বকোণের অফিস রুমে গিয়ে হল বুকিং কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে সিটি করপোরেশনের নিযুক্ত ম্যানেজার থাকার কথা থাকলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ সময় কথা হয় ডেকোরেশন ব্যবসায়ী সহকারী মাসুদ রানার সঙ্গে। যুগান্তরকে তিনি বলেন, উনারা (দায়িত্বপ্রাপ্তরা) বাইরে গেছেন। এ সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ফজলুল হককে সঙ্গে নিয়ে কমিউনিটি সেন্টারের ২য় ও ৩য় তলার হলগুলো ঘুরে এলেও ম্যানেজার বা দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি।

পরে মুঠোফোনে উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারের ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা আলী হোসেনের কাছে মাসে হল বুকিংয়ের ন্যূনতম সংখ্যা জানতে চাইলে যুগান্তরকে তিনি বলেন, কোনো মাসে ১৮, কোনো মাসে ২০-এরকম বুকিং থাকেই। এ নিয়ে চলতি মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত কয়দিন বুকিং ছিল জানতে চাইলে তিনি সে তথ্য জানাতে চাননি। তবে সূত্র জানায়, মাসে সর্বোচ্চ ৬/৭ দিন বুকিং থাকে। অন্য সময়গুলো হল খালিই পড়ে থাকে। অপরদিকে, উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে হল বুকিংয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের তথ্যও এসেছে যুগান্তরের হাতে। এ বছরের ১৭ এপ্রিল, হালনাগাদ করা সিটি করপোরেশনের ওয়েবসাইটে উল্লিখিত উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারের ২য় তলার ভাড়া দিনে ২৭ হাজার ৩৫ টাকা, রাতে ৩০ হাজার ১২৫ টাকা, ৩য় তলার হল ভাড়া দিনে ৩১ হাজার ৬০৫ টাকা ও রাতে ৩৫ হাজার ৭২৫ টাকা ভাড়ার কথা উল্লেখ থাকলেও প্রতি শিফটে অতিরিক্ত প্রায় ৫০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি ভাড়ার চার্ট ওই কমিউনিটি সেন্টারের বুকিং অফিসের টেবিলের গ্লাসের নিচে প্রদর্শন করা হয়েছে। যেখানে দুপুরে ২য় তলার ভাড়া ২৭ হাজার ৫০০ ও রাতে ৩০ হাজার ৫০০ এবং ৩য় তলা হলরুমের দুপুরের ভাড়া ৩২ হাজার ও রাতে ৩৬ হাজার ২০০ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। যা সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ভাড়ার তুলনায় প্রতি শিফটে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বেশি নেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট।

সিটি করপোরেশনের ওয়েবসাইটে নির্ধারিত হল ভাড়ার তুলনায় প্রতি শিফটে এমন বাড়তি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজার আলী হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ভাই আপনি আসেন। কোন ওয়েবসাইটে ভাড়া দেওয়া আছে আপনি এসে আমাকে দেখান। এ সময় ফোনে এত কথা বলা যাবে না জানিয়ে বিষয়টি নিয়ে আর কথা বলতে চাননি তিনি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা নাছিমা খানম যুগান্তরকে বলেন, ওরা (কমিউনিটি সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা) তো বলে যে মানুষ নাকি টাকা দিতে চায় না। প্রচারণার অভাবে সারা বছর হল খালি থাকছে কিনা? বিষয়টি জানতে চাইলে মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকার কথা বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম