ডিএনসিসি ৫০ নম্বর ওয়ার্ড
অধিকাংশ সড়কবাতি নষ্ট অন্ধকারে পথচলা
সন্ধ্যা হলেই ভূতুড়ে পরিবেশ * চুরি-ডাকাতি ও নারীদের নিরাপত্তাহীনতা বেড়েই চলেছে
মানিক খান, দক্ষিণখান (ঢাকা)
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের অধিকাংশ সড়কবাতি নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বাসিন্দাদের অন্ধকারে পথ চলতে হচ্ছে। সন্ধ্যা এলেই এলাকাটি পরিণত হয় ভূতুড়ে পরিবেশ। নেই পর্যাপ্ত সড়কবাতি, নেই কোনো কার্যকর বিকল্প আলো ব্যবস্থা। এতে চুরি-ডাকাতি ও নারীদের নিরাপত্তাহীনতা বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিন দেখা যায়, জয়নাল মার্কেট থেকে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী রোড’ ধরে মেম্বার বাড়ি রেলগেট পার হয়ে বেশ কিছু দূর পর্যন্ত সড়ক বাতির কোনো ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় বিভিন্ন দোকান থেকে যতটুকু আলো রাস্তায় পড়ছে তা দিয়ে কোনোরকম চলছে মানুষ। খাঁনপাড়া এলাকার স্থানীয় রাস্তায় অল্প কিছু সড়কবাতি নজরে এলেও আশপাশের রাস্তাসহ ছোট-বড় অলিগলিগুলো ঘুটঘুটে অন্ধকার। এ এলাকার জরাজীর্ণ সরু রাস্তাগুলো সন্ধ্যা শেষে রাতের আঁধারে ভয়ংকর রূপ নেয়। এসব রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে প্রতিদিন ঘটে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জয়নাল মার্কেট সংলগ্ন খাঁনপাড়া ও আশপাশের রাস্তাসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দীর্ঘদিন ধরে সড়ক বাতি নেই। অথচ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রতি বছর বাজেটে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করা হয় সড়ক বাতির জন্য। স্থানীয় এক বাসিন্দা মো. খোকন বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বাচ্চারা স্কুল বা কোচিং থেকে বাসায় ফেরার পথে অন্ধকারাচ্ছন্ন রাস্তায় বেওয়ারিশ কুকুর দেখে ভয় নিয়ে ঘরে ফিরে। এ ছাড়া বিভিন্ন অন্ধকার গলিতে নারীরা চলাচলের সময় প্রায়ই যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অপরদিকে এই এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে পথচলার সময় ঘটছে দুর্ঘটনা।
ডিএনসিসির অঞ্চল-৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মো. খয়বর রহমানকে রাস্তায় সড়ক বাতি স্থাপনের আবেদন কোথায় করতে হবে? জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তার অফিস কক্ষে সরাসরি জমা দেওয়ার পরামর্শ দেন। কথা অনুযায়ী আবেদনসহ হাজির হলে তিনি আবেদনটি গ্রহণ ও স্বাক্ষর করে তার অধীনস্থ অপর এক কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। কতদিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানতে চাইলে জানানো হয়, চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ সড়ক বাতি শেষ হয়েছে। ২০-২৫ দিন সময় লাগতে পারে। সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত শাহিন সাদাত সিদ্দিকি বলেন, চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ সড়কবাতি ইতোমধ্যে ব্যবহার হয়ে গেছে। নতুন বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, ওয়ার্ডভিত্তিক চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ ছিল চার ভাগের এক ভাগ। যেখানে প্রতিটি ওয়ার্ডে ১০০০ সড়ক বাতির প্রয়োজন সেখানে মাত্র ২২৫টি সড়ক বাতি বরাদ্দ করা হয়। তিনি বলেন, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর যেসব রাস্তায় সড়ক বাতি স্থাপনের জন্য বলেছিলেন সেগুলোতে সড়কবাতি স্থাপন করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, কিছু এলাকায় অপ্রয়োজনীয়ভাবে অতিরিক্ত বাতি বসানো হয়েছে, অপরদিকে বহু এলাকা রয়ে গেছে অন্ধকারে। এতে করে সমন্বয়ের অভাব ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন নাগরিকরা।
