মিরপুর-১২ নম্বর ডি-ব্লক ঈদগাহ মাঠ
রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে বেহাল
মিরপুর (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীর মিরপুরে বেশিরভাগ ওয়ার্ডে খেলার মাঠ নেই। হাতেগোনা যে কয়টি আছে, সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বেহাল হয়ে পড়েছে। মিরপুর-১২ নম্বর ডি-ব্লকের একমাত্র ঈদগাহ মাঠটি পরিচর্যার অভাবে খেলার উপযোগিতা হারিয়েছে। অথচ রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার করা হলে এটি হতে পারে এখানকার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ ও খেলার মাঠ।
জানা গেছে, মিরপুর-১২ নম্বরের প্রতিটি ব্লকে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ করা জায়গায় ঈদগাহ ও খেলার মাঠ রয়েছে। ডি-ব্লকের ঈদগাহ মাঠটি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন, এটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নয়। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জায়গা হলেও মাঠটি সংস্কারের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ নেই। মাঠ পরিচালনা কমিটি নিজস্ব উদ্যোগে এটি সংস্কার করে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডিএনসিসির আওতায় মাঠটি না থাকায় সংস্কারের জন্য কোনো বাজেট বরাদ্দ হচ্ছে না। তাই এটি সংস্কার হচ্ছে না। আবার রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারির অভাবে মাঠটি দিন দিন বেহাল হয়ে পড়ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, মাঠের বেশিরভাগ অংশই খানাখন্দে ভরা ও কর্দমাক্ত। রয়েছে বড় বড় গর্ত। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি জমে থাকে। মাঠের চারদিকে সীমানা প্রাচীর নেই। সীমানা প্রাচীর না থাকায় মাঠ নাকি পরিত্যক্ত জায়গা, তা দেখে বোঝার উপায় নেই। অনেক সময় বিনা বাধায় যানবাহন চলাচল করে মাঠের মাঝ দিয়ে। পুরো মাঠে কোথাও ঘাস নেই। অধিকাংশ জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা। মাঠের এককোণে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। ঈদগাহে নির্মিত মিনারটি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। এর চারপাশ ময়লা-আবর্জনায় ভরা ও স্যাঁতসেঁতে। সন্ধ্যা নামলেই মাঠের চারপাশ ছিন্নমূল ব্যবসায়ীদের দখলে চলে যায়। এ সময় কিশোর গ্যাং ও মাদকসেবীদের আনাগোনাও বাড়ে।
মাঠ ঘুরে আরও দেখা যায়, মাঠের চারপাশে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাঠটি কেন্দ্র করেই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। মাঠে এত সমস্যা থাকলেও প্রতিদিন অনেক শিশু-কিশোর খেলাধুলা করতে ও অনেকে প্রাতঃভ্রমণে আসেন।
মাঠের পাশে অবস্থিত আল কোরআন একাডেমি ও মুনলাইট স্কুলের শিক্ষার্থী লিজা, লিপি, আয়াত, মারুফ, আয়ান, আফরাজসহ আরও অনেকে বলেন, মাঠে খেলাধুলার পরিবেশ নেই। গরমের সময় সারাক্ষণ ধুলাবালি ওড়ে। ছোট ছোট ইট, পাথর ও সুরকি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় তারা গোল্লাছুট, ফুটবল ও ক্রিকেট খেলতে পারে না। জোরে দৌড় দিলে পায়ে ব্যথা লাগে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও গ্রিন ঢাকা ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি এসএম জহির বলেন, পরিকল্পিত উদ্যোগ নিলে এ মাঠে আয়োজন করা যেতে পারে এলাকার সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত। কারণ বিশাল এ মাঠে অনেক লোক ধারণক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া ময়লা-আবর্জনা অপসারণ, ছিন্নমূল দোকান উঠিয়ে চারপাশে গ্যালারি ও বেঞ্চ নির্মাণ, ক্লাব গঠন, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, ডিজিটাল লাইট স্থাপন ও সীমানা প্রাচীর দিয়ে রাখতে পারলে, এটি হতে পারে এ এলাকার বিনোদনের সেরা স্থান। ডি-ব্লক ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাবুল বক্স বলেন, মাঠটি সংস্কারের ব্যাপারে গত সপ্তাহে মিটিং হয়েছে। ফান্ড পেলে অচিরেই কাজ শুরু হবে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডিএনসিসির সাবেক ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মাঠ পরিচালনা কমিটির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মাঠটি সিটি করপোরেশনের আওতায় নয়। যখন যারা কমিটিতে থাকেন, তারাই মাঠটি সংস্কার করেন। বলতে পারেন, যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তারাই মাঠের দায়িত্ব নেয়। আমিও মাঠ পরিচালনা কমিটির একজন মেম্বার। মাঠটি এলাকাবাসীর জন্য উন্মুক্ত। ছোট ছোট বাচ্চারা এখানে খেলাধুলা করে। সীমানা প্রাচীরসহ এটি সংস্কারের ব্যাপারে আলোচনা চলছে।
