Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

কাদেরের গানম্যান থেকে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজা

মিথ্যা তথ্য দিয়ে ২৫ বছর চাকরি

তানজিমুল হক

তানজিমুল হক

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মিথ্যা তথ্য দিয়ে ২৫ বছর চাকরি

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গানম্যান (দেহরক্ষী) ছিলেন সঈদ আলী রেজা। ১৯৯৬ সালে ওবায়দুল কাদের যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। পুলিশ কনস্টেবল হিসাবে রেজা এ সময় কাদেরের গানম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

ওই সময়েই কাদেরের ঘনিষ্ঠ হিসাবে ক্ষমতার দাপট আর প্রভাবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের একটি নিয়োগে বিভাগীয় কোটা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার মিথ্যা তথ্য দিয়ে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার চাকরিটি বাগিয়ে নেন রেজা।

রেজা পুলিশে চাকরিরত অবস্থায় বিধিবিধান লঙ্ঘন করে যুব উন্নয়নে চাকরি নেওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ হয়েছে। কিন্তু তিনি গত ২৫ বছর থেকে বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘ চাকরি জীবনে অনিয়ম এবং দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে।

এসব অভিযোগের তদন্তও হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রেজার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। রেজার ভুয়া বিভাগীয় কোটা ও শিক্ষা সনদের মিথ্যা তথ্যের বেশকিছু নথি যুগান্তরের হাতে এসেছে। রেজার বিরুদ্ধে গত বছরের ৩০ অক্টোবর তদন্তের জন্য রাজশাহীতে আসেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর মহাপরিচালকের (ডিজি) কার্যালয়ের তৎকালীন উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) হামিদুর রহমান।

তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘আমি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা-এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই বলতে পারবেন।’

বিষয়টি নিয়ে মহাপরিচালকের কার্যালয়ের বর্তমান উপপরিচালক (প্রশাসন-১) সেলিমুল ইসলামকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এ পোস্টে নতুন জয়েন করেছি। মহাপরিচালক অধিদপ্তরের প্রধান। তার সঙ্গে কথা বলেন।’ অনুসন্ধানে জানা গেছে, সঈদ আলী রেজা বর্তমানে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। রেজা ১৯৮৬ সালে চাঁদপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন।

এরপর ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে যোগ দেন। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ওই পদে চাকরি করেন। সব অভিযোগ অস্বীকার করে সঈদ আলী রেজা বলেন, ‘সব বিধিবিধান মেনেই আমি চাকরি পেয়েছি। শিক্ষাগত সনদ নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেইনি। ওবায়দুল কাদেরের নাম ভাঙিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগটি ভিত্তিহীন। আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও সঠিক না।’

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর রাজশাহীর উপপরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি গত মাসের ২৬ তারিখে রাজশাহীতে জয়েন করেছি। সঈদ আলী রেজার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সম্পর্কে জানা নেই। যদি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত করে থাকেন, তাহলে আমার এ বিষয়ে কথা বলার সুযোগ নেই।’

এক বছর আগে তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দেওয়ার পরে রেজার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে-জানতে চাইলে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার স্পেসেফিক মনে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম