কিশোরগঞ্জ-১ ও ৫ আসন
বিএনপির মনোনয়ন স্থগিতে দুই আসনে তীব্র অসন্তোষ
এটিএম নিজাম, কিশোরগঞ্জ
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনের মধ্যে চারটিতে বিএনপির দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও কিশোরগঞ্জ-১ ও কিশোরগঞ্জ-৫ আসন স্থগিত রাখা হয়েছে। এতে দুটি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অবিলম্বে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন নিশ্চিতের দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই এ দুই আসনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করছেন সমর্থকরা।
জানা যায়, জেলার ছয়টি নির্বাচনি আসনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া)-এ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দীনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে প্রার্থী করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. এম ওসমান ফারুককে। এছাড়া কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম)-এ পদ স্থগিত বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান এবং কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব ও কুলিয়ারচর)-এ কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। স্থগিত রাখা হয় কিশোরগঞ্জ-১ (সদর ও হোসেনপুর) ও কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর ও নিকলী)। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ-১ থেকে ২০০৭ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া ঢাকা বিভাগীয় স্পেশাল জজ ও জাজেজ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম খান চুন্নু। আর কিশোরগঞ্জ-৫ থেকে ২০১৮ সালের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এবার কিশোরগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ৯ জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত আলোচনায় রয়েছেন-জেলা বিএনপির সহসভাপতি রেজাউল করিম খান চুন্নু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম, জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্মসাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা ব্যারিস্টার আতিকুর রহমান ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা আ ঈ ম ওয়ালী উল্লাহ রাব্বানী। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ-৫ মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল। সম্প্রতি বিএনপি ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে এ দুই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। তারা দুই আসনে দ্রুত প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ মিছিল ও সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছেন। তাদের দাবি, ত্যাগী ও যোগ্য প্রার্থীকে যেন অল্প সময়ের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির অর্থবিষয়ক সম্পাদক গুরুদয়াল সরকারি কলেজের সাবেক এজিএস মো. দেলোয়ার হোসেন দিলু বলেন, আমাদের লোকজন এ আসনে (কিশোরগঞ্জ-১) দলীয় প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে পছন্দের নেতার পক্ষে মিছিল-সমাবেশ, শোডাউন করছে। আমাদের দাবি, বিগত স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের আমলে যারা হামলা-মামলা, নিপীড়ন-নির্যাতন উপেক্ষা করে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন, এমন ত্যাগী নেতাদের মধ্য থেকে যোগ্য ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থীকে অবিলম্বে প্রার্থী ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় দলীয় বিরোধ-বিভক্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন বলেন, চরম দুর্দিনে যে বিএনপি নেতা দলের আদেশ মেনে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পাশে ছিলেন, তেমন ব্যক্তিকে দলীয় প্রার্থী করতে হবে। তিনি বলেন, আসনটি শরিক দলের কাউকে দেওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। তাই দলীয় প্রার্থীর দাবিতে এখানে বিক্ষোভ-সমাবেশ, এমনকি রেলপথ অবরোধ করে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেতাকর্মীরা।
