পাঁচ মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে
যশোর সদর আসনে বেশি সরব এনসিপি নেতারা
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ (সদর) আসেন ব্যাপক তৎপর জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা। এ আসনে অন্তত পাঁচজন এই দলের মনোনয়ন কিনেছেন। জেলার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ আসনটিতে কে হবেন এনসিপির কাণ্ডারি, তা দেখার অপেক্ষায় ভোটাররা। কারণ মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তিকে বিএনপি-জামায়াতের হেভিওয়েট প্রার্থীদের সঙ্গে লড়তে হবে। তাই এ আসনে প্রার্থী বাছাইয়ে সতর্ক দলটি। বাকি পাঁচটি আসনে দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী নতুন কেউ কেউ থাকলেও তারা আলোচনায় নেই। সদর আসন ঘিরেই বেশি সরব কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা।
এনসিপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) সাকিব শাহরিয়ার, কেন্দ্রীয় সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহ জুয়েল, যশোর জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী মো. নুরুজ্জামান, সিনিয়র যুগ্ম প্রধান সমন্বয়কারী মনিরুজ্জামান আজাদ ও ব্যবসায়ী এইচএম সাইদুর রহমান।
যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া বাদে ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে যশোর-৩ (সদর) আসন গঠিত। এখানে ভোটার সংখ্যা ছয় লাখের বেশি। বিগত ১২টি সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। এই আসনে সংসদ-সদস্য ছিলেন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের রওশন আলীর মতো সজ্জন ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদরা। জেলার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে লড়বেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ছেলে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত এবং জামায়াত মনোনীত প্রার্থী সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও ব্যবসায়ী আবদুল কাদের। তাদের সঙ্গে লড়াইয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির দলীয় মনোনীত প্রার্থী কে হবেন সেটি নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ।
দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, যশোর-৩ (সদর) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে শুরু থেকেই জেলার রাজনীতিতে সক্রিয় এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহ জুয়েল। প্রশাসনিক, সামাজিক ও দলীয় নানা কর্মসূচিতে দলের প্রতিনিধি হিসাবে মাঠে আছেন। নিয়মিত গণসংযোগ করছেন।
আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী যশোরের সন্তান জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) সাকিব শাহরিয়ার কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে বেশি সক্রিয় আছেন। সম্প্রতি সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে পোস্টার লাগিয়েছেন তিনি। কিনেছেন দলীয় মনোনয়ন ফরমও।
যশোর জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রধান সমন্বয়কারী মো. নুরুজ্জামান ও সিনিয়র যুগ্ম প্রধান সমন্বয়কারী মনিরুজ্জামান আজাদ মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসাবে মাঠে রয়েছেন। তারাও দলীয় মনোনয়নের জন্য ফরম কিনে জমা দিয়েছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও মনোনয়ন কিনেছেন এইচএম সাইদুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি এনসিপির রাজনীতিতে নতুন মুখ। মনোনয়ন বিক্রি চলমান রয়েছে। ফলে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানতে চাইলে এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাকিব শাহরিয়ার বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনীতিকে জনতার দুয়ারে নিয়ে যেতে চায়। যারা ইতিবাচক রাজনীতি করতে চান, তাদের মনোনয়ন ফরম দেওয়া হয়েছে। যে কেউ ইচ্ছা করলে মনোনয়নপত্র কিনতে পারবেন। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনছেন। দল যাচাই বাছাই করে প্রার্থী চূড়ান্ত করবে। আমি যশোর-৩ (সদর) আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী। আমার মতো আরও কয়েকজন প্রার্থী আছেন। দল যাকে যোগ্য মনে করবে, তাকেই প্রার্থী ঘোষণা করবে। আমরা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। জোটের হিসাব-নিকাশ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
খালেদ সাইফুল্লাহ জুয়েল বলেন, রাজনৈতিক দল হিসাবে এনসিপির আত্মপ্রকাশের পর থেকেই যশোরের মানুষের মাঝে এনসিপির বার্তা পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত সাংগঠনিকভাবে সব উপজেলায় এনসিপির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে যশোর-৩ আসনে এনসিপি সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। দল যদি যোগ্যতা, দক্ষতা, জনপ্রিয়তা ও ডেডিকেশন দেখে আমাকে মূল্যায়ন করে, তবে এনসিপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আসন হবে এটি। তিনি বলেন, অনেকেরই ধারণা এখানে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। সেটিকে সামনে রেখেই আমরা আমাদের সাংগঠনিক ও নির্বাচনি কৌশল গ্রহণ করছি। জনগণের মধ্যে যেহেতু নতুন রাজনীতির প্রতি আগ্রহ রয়েছে, আশা করি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পেলে জনগণ তরুণ নেতৃত্ব বেছে নেবে।


