দশমিনায় কিশোরীকে গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা
দশমিনা ও দক্ষিণ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পটুয়াখালীর দশমিনায় পারিবারিক কলহের জেরে এক কিশোরীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে। নিহত কিশোরীর নাম হাফসা বেগম (১৯)। উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মা লুৎফুরন্নেছা বেগম দশমিনা থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। নিহত হাফসা উপজেলার আলীপুরা ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের শাজাহান মৃধার মেয়ে ও আলীপুরা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সে মানসিক রোগে ভুগছিল।
সূত্রে জানা যায়, মানসিক রোগী হাফসা প্রায়ই তার ভাবি আয়শা বেগম নিপাকে জ্বালাতন করত। এ নিয়ে ভাবি নিপার সঙ্গে তার ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত। বিষয়টি নিয়ে নিপার মা রাশিদা বেগম হাফসার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। ২১ জানুয়ারি রাতে লুৎফুরন্নেছা তার মেয়ে হাফসাকে নিয়ে ছেলে রিয়াজ মৃধার শ্বশুরবাড়ি দশমিনা সদর ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে বেড়াতে যান। সেখানে গেলে ওই পরিবারের লোকজন রাতেই হাফসাকে রেখে মা লুৎফুরন্নেছাকে কৌশলে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরে ওই রাতেই হাফসার মানসিক রোগের চিকিৎসার কথা বলে নুর জাহান বেগম নামে এক কবিরাজকে ডেকে আনা হয়। পূর্বপরিকল্পিতভাবে হাফসাকে কবিরাজি চিকিৎসার নামে পাশের কৃষি জমিতে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। দগ্ধ হাফসাকে উদ্ধার করে প্রথমে দশমিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে পরদিন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানকার চিকিৎসকরা হাফসার অবস্থার আরও অবনতি দেখে তাকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার করেন। ২৭ জানুয়ারি রাতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যায়। এ ঘটনায় হাফসার মা লুৎফুরন্নেছা বেগম কবিরাজ নুর জাহান বেগমকে প্রধান অভিযুক্ত করে ৩ জনের বিরুদ্ধে দশমিনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অপর অভিযুক্তরা হলেন-হাফসার মাওই রাশিদা বেগম ও তার ছেলে পারভেজ।
অভিযোগের বিষয়ে কবিরাজ নুর জাহান বেগমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার স্বামী মো. মনির সরদার যুগান্তরকে বলেন, এ ঘটনার পর তার স্ত্রী পলাতক রয়েছেন। তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় তিনি দশমিনা সদরে ছিলেন, তাই কিছুই জানেন না। তবে দশমিনা হাসপাতালে গিয়ে হাফসাকে ওষুধ কিনে দিয়েছেন বলে জানান। দশমিনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মেহেদী হাসান অভিযোগ পেয়েছেন নিশ্চিত করে যুগান্তরকে বলেন, তদন্ত চলছে। সত্যতা পেলে অভিযোগটি মামলা হিসাবে গ্রহণ করা হবে।
