কেসিসি নির্বাচন
কাউন্সিলর প্রার্থীদের ২৩ ভাগের মাথায় ঋণের বোঝা
নূর ইসলাম রকি, খুলনা
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৫ প্রার্থী। তাদের মধ্যে প্রায় ৪০ জনের মাথায় রয়েছে ঋণের বোঝা। যা শতকরা প্রায় ২৩ ভাগ। এ ঋণের তথ্য হলফনামায় উল্লেখ করেছেন প্রার্থীরা। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ রয়েছে ২২নং সাধারণ ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর কাজী আবুল কালাম আজাদ বিকু এবং সংরক্ষিত-৬ আসনের প্রার্থী শেখ আমেনা হালিম বেবীর। এছাড়া ব্যবসায়িক ঋণের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ঋণও রয়েছে প্রার্থীদের। একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী যুগান্তরকে জানান, ব্যবসায়িক এবং পারিবারিকভাবে অনেকেই ঋণ নিয়েছেন।
সাধারণ ওয়ার্ডের ঋণগ্রস্ত প্রার্থীদের মধ্যে ১নং ওয়ার্ডের মনিরুজ্জামান খান খোকনের সোনালী ব্যাংকে ৫ কোটি ১ লাখ টাকার ঋণসহ যৌথভাবে ঋণ রয়েছে ২৯ লাখ টাকা। একই ওয়ার্ডের শেখ আব্দুর রাজ্জাকের ঋণ ৮ লাখ টাকা, মফিজুর রহমানের ঋণ ৩ লাখ টাকা। ৪নং ওয়ার্ডের কবির হোসেন কবু মোল্যা ইসলামী ব্যাংক দৌলতপুর শাখায় ২০ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে। ৫নং ওয়ার্ডের শেখ মোহাম্মাদ আলী ইসলামী ব্যাংকের দৌলতপুর শাখায় ১০ লাখ টাকা ঋণী। ৬নং ওয়ার্ডের শেখ শামসুদ্দিন আহম্মেদের প্রাইম ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক থেকে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ঋণ স্থিতি রয়েছে। ৬নং ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান তরফদার বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকা ঋণ নেওয়া আছে। ৭নং ওয়ার্ডের সুলতান মাহামুদ ৮টি ব্যাংকে ৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ঋণী আছেন। ১০নং ওয়ার্ডের প্রার্থী এএসএম সায়েম মিয়া ওয়ান ব্যাংকে ৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা দেনা। একই ওয়ার্ডের শরিফুল ইসলামের দেনা ৪১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। ১২নং ওয়ার্ডের তাহিদুল ইসলামের প্রাইম ব্যাংক বসুন্ধরা শাখায় ঋণ রয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। একই ওয়ার্ডের মো. মুনিরুজ্জামানের ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও জুবায়েল হোসেনের পূবালী ব্যাংক নড়াইল শাখায় ২৩ লাখ টাকা ঋণ আছে। ১৩নং ওয়ার্ডের এসএম খুরশিদ আহম্মেদের দুটি ব্যাংকে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে। ১৪নং ওয়ার্ডের খান মো. আলী সিদ্দিকী কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণগ্রস্ত। একই ওয়ার্ডের শেখ মফিজুর রহমান পলাশ সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকে ১০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ঋণী। ১৫নং ওয়ার্ডের প্রার্থী মো. আমিনুল ইসলাম মুন্না নিজ মেয়ের কাছে ঋণী ৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। এছাড়া একই ওয়ার্ডের মাহাবুবুর রহমান শামীমের ব্যক্তিগত ঋণ আছে ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ১৬নং ওয়ার্ডের আনিছুর রহমান বিশ্বাসের সাড়ে ৩ কোটি টাকা ঋণ আছে। ১৮নং ওয়ার্ডের এসএম রাজুল হাসান রাজু ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ঋণী। ১৯নং ওয়ার্ডের জামায়াতপন্থি প্রার্থী মনিরুল ইসলাম ইসলামী ব্যাংকে ৪০ লাখ টাকা ঋণী এবং একই ওয়ার্ডের প্রার্থী জাকির হোসেন বিপ্লব ৪৫ লাখ টাকা এবং সেখ বদিউজ্জামান লিটু সাড়ে ৪ লাখ টাকা ঋণী। ২০নং ওয়ার্ডের শেখ মো. গাউসুল আজমের নিজ নামে ব্যাংক ঋণ আছে সাড়ে ৫ কোটি, স্ত্রীর নামে ২ কোটি টাকা। ২২নং ওয়ার্ডের মাহবুব কায়সার ১ কোটি টাকা ঋণী। এছাড়া ২২নং ওয়ার্ডের কাজী আবুল কালাম আজাদ বিকু ৪৩ কোটি টাকা অগ্রণী ব্যাংকের কাছে ঋণী আছেন। একই ওয়ার্ডের অহিদুল ইসলামের এসবিএসি ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ২৪নং ওয়ার্ডের জেডএ মাহমুদের সাড়ে ৭ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে। ২৫নং ওয়ার্ডের মো. আলী আকবরের মধুমতি ব্যাংকে ১৮ লাখ টাকা ঋণ। ২৮নং ওয়ার্ডের মোহাম্মাদ জিয়াউল আহসানের ১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা ঋণ এবং একই ওয়ার্ডের আজমল আহমেদের ঋণ ৪২ লাখ টাকা। ৩০নং ওয়ার্ডের লোকমান হাকিমের ৫০ লাখ টাকা ঋণ এবং শিহাব উদ্দিন জোয়াদ্দারের ৫ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে। ৩১নং ওয়ার্ডের পিটু মোল্লার ৩টি ব্যাংকে ৩১ লাখ টাকা ঋণ এবং রফিকুল আলমের ঋণ ২৫ লাখ টাকা।
অন্যদিকে সংরক্ষিত-৬ আসনের প্রার্থী শেখ আমেনা হালিম বেবীর ৫ লাখ টাকা ঋণ আছে অগ্রণী ব্যাংক খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল শাখায়। একই আসনের মৌসুমী আক্তার বর্নার যৌথ নামে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কেডিএ বাস টার্মিনাল শাখায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ আছে।একাধিক ভোটার এ প্রতিবেদককে জানান, সাধারণভাবে মানুষ ঋণগ্রস্তদের পজিটিভভাবে দেখে না। তবে ব্যবসার প্রয়োজনে অনেক সময় ঋণ নেওয়া লাগে সেটাও বুঝি। যে প্রার্থী অতীতে ভালো কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতে করবেন বলে মনে হয় মানুষ তাদেরই ভোট দেবে।
