Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

আদালতের নির্দেশ উপেক্ষিত

রাজশাহীতে ভরাট হচ্ছে একের পর এক পুকুর

ভরাটকাণ্ডে এবার যুক্ত তেরখাদিয়া বড় পুকুর * জড়িত ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যক্তি ও কতিপয় কাউন্সিলর

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পুকুর ডোবা জলাশয় ভরাট ও নির্বিচার বৃক্ষ নিধনের কারণে প্রকৃতির চরম বৈরী আচরণের শিকার হচ্ছে রাজশাহী মহানগরী। তার ওপর রয়েছে বায়ু দূষণের খড়গ। নগরীতে জলাশয় ভরাট বন্ধে উচ্চ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও কোনো ভাবেই থামছে না পুকুর-ডোবা ভরাট। এতে দিনে দিনে রাজশাহী নগরী জলাশয় শূন্য হতে চলেছে।

জানা গেছে, জলাশয় ভরাটের সঙ্গে নগরীর ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যেমন আছেন, তেমনি সিটি করপোরেশনের কতিপয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরও বড় ভূমিকা পালন করছেন। সম্প্রতি নগরীর তেরখাদিয়ায় একটি বড় পুকুর ভরাট কাজে সিটি করপোরেশনের হুইললোডার গাড়ি ব্যবহারের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে তেরখাদিয়া এলাকার বড় এই পুকুরটি ভরাটের সঙ্গে রাসিকের ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন সরাসরি জড়িত। আর এই ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রভাব খাটিয়ে সিটি করপোরেশনের হুইললোডার এনে ভরাটের কাজ করছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, জমির রেকর্ডে পুকুরটি পুকুর হিসাবে থাকলেও সম্প্রতি জেলা প্রশাসন থেকে শ্রেণি পরিবর্তন করে ভিটা করা হয়েছে। পুকুরের শ্রেণি হঠাৎ করেই কীভাবে কাগজ-কলমে ভিটা হয়ে গেল তা নিয়ে এখনো এলাকাবাসীর ধন্ধ কাটছে না। অভিযোগ রয়েছে, নগরীতে পুকুর-ডোবা জলাশয়কে ভরাটের পর প্রভাব খাটিয়ে ভিটা শ্রেণিতে পরিণত করা হয়েছে। আবার ভরাটের আগেও আস্ত পুকুরকে ভিটা করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ আছে, মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন থেকে পুকুর জলাশয়ের শ্রেণি বদল করার কাজটি হয়ে আসছে গত কয়েক বছর ধরে। ফলে প্রভাবশালীরা পুকুর ভরাটের পর তা ভিটা হিসাবে চড়া মূল্যে প্লট আকারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিছুদিন পরেই পুকুরের জায়গায় গড়ে উঠছে বহুতল ভবন। রাজশাহী নগরীতে ভরাট করা পুকুরের ওপর শত শত বহুতল ভবন দাঁড়িয়ে আছে।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল হোসেন বলেন, পুকুরটি এখন আর পুকুর নেই। সেটিকে ভিটা শ্রেণি করা হয়েছে। ফলে পুকুর ভরাটে কোনো সমস্যা নেই। সিটি করপোরেশনের হুইললোডার ভাড়া নিয়ে ভরাট কাজ হচ্ছে বলে দাবি করেন রাসিক কাউন্সিলর। তার আরও দাবি, সিটি করপোরেশনের অনুমতিও আছে।

সর্বশেষ ২০২২ সালের ৮ আগস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ মহানগরীতে ৯৫২টি পুকুর সংরক্ষণে সিটি করপোরেশন, পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। কিন্তু এই নির্দেশের পরও নগরীতে থাকা কয়েকশ পুকুর-ডোবা জলাশয় ইতোমধ্যে ভরাট করা হয়েছে। এর আগে একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো রাজশাহীতে পুকুর ভরাট বন্ধে রুল জারি করেছিল হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। কিন্তু কোনো আদেশেই পুকুর ভরাট বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি নির্দেশপ্রাপ্ত পক্ষগুলো।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম