কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে ভয়াবহ টর্নেডোর উৎপত্তি হয়েছে। এ সময় নদীর পানি হঠাৎ আকাশের দিকে উঠে যায়। কয়েক মিনিট পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। পদ্মা নদীর পানি আকাশে ওঠার বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালের দিকে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের কোলদিয়া এলাকায় পদ্মা নদীতে এ ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, হঠাৎ করে পদ্মা নদীর পানি আকাশের দিকে উঠে যাচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী। তিনি বলেন, পদ্মা নদীতে হাটখোলা এলাকা থেকে টর্নেডো ভেড়ামারার দিকে অগ্রসর হয়। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঘটনার পর স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে যায়। প্রায় ১০ মিনিট ধরে এ দৃশ্য দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, বিকালের দিকে হঠাৎ করে পদ্মা নদীর পানি আকাশে উঠে যাওয়ায় আমরা ভয় পাই। স্থানীয়রা মোবাইল দিয়ে সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার ও ঈশ্বরদী আবহাওয়া কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, ফেসবুকের ভিডিও থেকে বিষয়টি জানতে পেরেছি। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, পদ্মা নদীর মাঝ থেকে পানি আকাশের দিকে উঠে যাচ্ছে। অনেকটা ফানেলের আকার ধারণ করেছে। ওই দৃশ্য দেখে কয়েকজন দৌড়ে দূরে সরে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে কয়েক মিনিটের মধ্যে পানির স্তম্ভ অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।

কুমারখালী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের অপারেটর হারুন আর রশীদ বলেন, আমিও ফেসবুকে ভিডিওটি দেখেছি। তবে আবহাওয়া অফিসে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই। একইভাবে ঈশ্বরদী আবহাওয়া কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দীন বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে টর্নেডোর খবর পাওয়া গেছে। ভিডিওতে দেখেছি। এছাড়া কোনো তথ্য নেই।

আবহাওয়াবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাধারণত কোনো স্থানে নিম্নচাপ বা লঘুচাপ সৃষ্টি হলে ওই স্থানের উষ্ণ বাতাস ওপরের দিকে উঠে যায় ও তখন ওই শূন্য জায়গা পূরণের জন্য চারদিকের শীতল বাতাস দ্রুত বেগে ধাবিত হয়। এভাবেই টর্নেডোর উৎপত্তি হয়। অল্প সময়ের জন্য তৈরি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড় গতিপথে যা পড়ে, সবকিছু নিজের ভেতর টেনে নিতে থাকে ও ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকে। স্থলে হলে বা পানি ও ভূমি মিলে টর্নেডো তৈরি হলে সেটা অনেক সময় শক্তিশালী হয়ে ওঠে। শুধু পানির ওপরে টর্নেডো তৈরি হলে সেটা ততটা শক্তিশালী হয় না।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই টর্নেডো দেখতে সরু ফানেলের মতো হয়, যার চিকন অংশটি ভূমি স্পর্শ করে। যদিও টর্নেডো বিভিন্ন আকার কিংবা আকৃতির হতে পারে। টর্নেডো পানি টেনে নিয়ে ওপরে তুলে মেঘ তৈরি করে। পরে সেটাই আবার বৃষ্টি হয়ে নেমে আসে। অনেক সময় আকাশে পানি তুলে সেটা আবার ছেড়ে দেয়।