বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য (ভিসি) ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে আজ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ অচলের ডাক দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার একাডেমিক শাটডাউনের মধ্যে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-সমাবেশের পর শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। আন্দোলনের ২৮তম দিনে এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে চূড়ান্ত কর্মসূচি দিল শিক্ষার্থীরা। আজ দুপুর ২টার মধ্যে উপাচার্য পদত্যাগ না করলে দক্ষিণবঙ্গ অচলের হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থী সুজয় শুভ।

এদিকে সোমবার শিক্ষার্থীদের ডাকা একাডেমিক ও প্রশাসনিক শাটডাউনে ববিতে অচলাবস্থা দেখা দেয়। দিনভর ২৫টি বিভাগের পরীক্ষা চললেও শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে দেখা যায়নি। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘোরাফেরা করে সময় কাটিয়েছেন। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিবৃতি ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিক্ষকরা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহমত পোষণ করেছেন। সরেজমিন দেখা যায়, ২৫টি বিভাগের বেশির ভাগ ক্লাসরুমই শূন্য। কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছেন। তবে বিভাগের সামনে করিডরে শিক্ষার্থীদের ভিড় নেই। লাইব্রেরির রিডিং রুম, মেডিকেল সেবা ও পরিবহণ সেবা সচল।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে মেনে নিয়ে উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কথায় কোনো কর্ণপাত করেনি। তাই মঙ্গলবার (আজ) দুপুর ২টার মধ্যে উপাচার্য যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে আমরা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেব।

আরেক শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, দাবি মেনে না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা একসঙ্গে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দ্রুত আমাদের দাবি মেনে না নিলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউই ভালো নেই। বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান উন্মেষ রায় বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানাই। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান থাকবে, যাকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেউই চান না, তাকে অবিলম্বে অপসারণ করে সংকটের সমাধান করুন। এ বিষয়ে ববি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন ও প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ক্যাম্পাসসহ ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে মশাল মিছিল, মহাসড়ক অবরোধ, ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি, উপাচার্যের বাসভবনে তালা, সংবাদ সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।