যুগান্তরে নিয়োগের নামে প্রতারণা, কারাগারে ২
থানা হেফাজতে দম্ভোক্তি-‘আমাদের কিছুই হবে না’
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে যুগান্তরের নামে পেজ খুলে সাংবাদিক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা করে আসছে একটি চক্র। চটকদার বিজ্ঞাপনে এরা তরুণ প্রজন্মকে সাংবাদিকতায় আকৃষ্ট করে। পরে আগ্রহীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় মোটা অঙ্কের টাকা। দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল এ ধরনের প্রতারণা। অবশেষে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জালে ধরা পড়েছে চক্রের ২ সদস্য। এরা হলো-রানা সরকার ও নীলয় চন্দ্র দে।
বৃহস্পতিবার ভোরে নেত্রকোনা সদরের নাগড়া গ্রামের মল্লিকা রানীর বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের রাজধানীর ভাটারা থানায় হস্তান্তর করা হয়। এরপর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার ইলিয়াস জিকো যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। যুগান্তরের ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) মোর্শেদ আলম জানান, ‘যুগান্তর কনসার্ন ডিপার্টমেন্ট’ নামের পেজ খুলে চক্রের সদস্যরা অনেকদিন ধরেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছিল। তারা যুগান্তরে সাংবাদিক নিয়োগসহ বিভিন্ন পদে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। এ ধরনের পেজের সঙ্গে যুগান্তরের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি বলেন, প্রতারণার বিষয়টি যুগান্তর কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পর ৫ মে ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। প্রতারিত একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর ২১ মে ভাটারা থানায় মামলা করা হয়। মামলার পরই অভিযান চালিয়ে দুই আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই নাসির উদ্দিন বলেন, গ্রেফতার আসামিরা প্রতারণার জন্য নেত্রকোনার জনৈক মল্লিকা রানীর বাসা ভাড়া নিয়েছিল। ওই বাসার দোতলা থেকেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। মূলত ওই বাসায় বসেই তারা নানা প্রতারণার ছক করত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতারণামূলক পোস্ট দিত এবং মোবাইল ফোনে কথা বলত। তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন এবং প্রতারণাসংশ্লিষ্ট তথ্য আদান-প্রদানের অনেক স্ক্রিনশট উদ্ধার করা হয়েছে।
এসআই নাসির বলেন, বৃহস্পতিবার আসামিদের আদালতে তোলা হয়েছে। সময় স্বল্পতার কারণে এদিন রিমান্ডে নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে উল্লেখ করে ফরোয়ার্ডিং দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আসামিরা আপাতত কারাগারে আছে। রোববার তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করে। থানা হেফাজতে তারা দম্ভোক্তি করে বলেছে-আমাদের কিছুই হবে না, আইনজীবী ঠিক করা আছে, তারাই জামিন করিয়ে দেবেন।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতার দুই প্রতারকের বাড়ি নেত্রকোনায়। রানা সরকার জেলার মোহনগঞ্জ থানার ভল্লবপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম সুনীল সরকার। নীলয় চন্দ্র দের বাড়ি কেন্দুয়া থানার আশুজিয়াতে। তার বাবার নাম রিপন চন্দ্র দে। পুলিশ আরও জানায়, কয়েক হাজার লোকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে চক্রের সদস্যরা। ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে যার কাছ থেকে যেমন পেরেছে টাকা নিয়েছে।
