পতেঙ্গা সৈকতে ব্রাশফায়ার
সন্ত্রাসী আকবরসহ গুলিবিদ্ধ ২
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে শত শত দর্শনার্থীর সামনে প্রকাশ্যে ব্রাশফায়ারে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী আকবর আলী ওরফে ঢাকাইয়া আকবরসহ ২ জন। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সৈকতের পশ্চিম পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ অপরজন হচ্ছেন মোহাম্মদ মাহাদি। গুলিবিদ্ধ আকবর নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী পূর্ব মসজিদ জব্বার সওদাগর বাড়ির মোহাম্মদ মঞ্জুরের ছেলে। পুলিশের ধারণা, হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষের লোকজন ঢাকাইয়া আকবরকে লক্ষ্য করে গুলি করেছে। এ ঘটনায় সৈকতে ঘুরতে যাওয়া লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আহত দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। পুলিশ কাউকে গ্রেফতারও করতে পারেনি। তবে পতেঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল আলম জানিয়েছেন ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকাইয়া আকবর একজন নারী ও চারজন ছেলেসহ পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে যান। সৈকতের পশ্চিম পয়েন্টের ২৮ নম্বর দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন তারা। এ সময় কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মোটরসাইকেলে চার যুবক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তাদের একজন ঢাকাইয়া আকবরকে লক্ষ্য করে ভারী অস্ত্র দিয়ে ব্রাশফায়ার করতে থাকে। এ সময় আকবর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তার বুকে ৪-৫টি গুলি লেগেছে। তার পাশে থাকা মাহাদি নামে এক দর্শনার্থীও গুলিবিদ্ধ হন। তিনি সৈকতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তিনি ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে চাকরি করেন বলে জানা গেছে। সৈকতে হঠাৎ গুলির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘুরতে যাওয়া দর্শনার্থীরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করেন।
সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ : রাতে প্রকাশ্যে গোলাগুলির ঘটনার পর সিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পাশাপাশি পতেঙ্গা থানার কয়েকটি টিমও পুরো ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ শুরু করে। পুলিশ ঘটনার পরপরই আশপাশে থাকা একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। এসব ফুটেজ পর্যালোচনা করে আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কারাবন্দি ছোট সাজ্জাদ ও ঢাকাইয়া আকবর অপরাধ জগতে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। ঢাকাইয়া আকবর বিদেশে পালিয়ে থাকা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খানের অনুসারী ছিলেন। তার নামে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি করতেন। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গুলি কিংবা পেট্রোলবোমা ছুড়ে মারতেন। কয়েক বছর আগে সাজ্জাদের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়। ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সাজ্জাদের ভাই ওসমান আলীর কাছে চাঁদা দাবি করেন আকবর। চাঁদা না দেওয়ায় তার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক মাস ধরে টিকটকে সাজ্জাদ আলীর অনুসারী ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্না শারমিনকে নিয়ে কটূক্তি করে নিজের ফেসবুক আইডিতে প্রায়ই ভিডিও দিতেন ঢাকাইয়া আকবর। পাশাপাশি সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্নাও আকবরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে নানা ভিডিও দিতেন। এসব বিষয় নিয়ে ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে আকবরের বিরোধ রয়েছে। এছাড়া সাজ্জাদকে ঢাকা থেকে পুলিশে দেওয়ার পেছনেও ঢাকাইয়া আকবরের হাত রয়েছে এমন ধারণা সাজ্জাদের। সেই ক্ষোভ থেকেই আকবরকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও পুলিশ এখনো হামলাকারী কারা সে বিষয় স্পষ্ট করতে পারেনি।
