Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

পাঁচ সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন

কুমিল্লায় পালটে যেতে পারে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ

Icon

আবুল খায়ের, কুমিল্লা

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কুমিল্লার ৫টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসির প্রকাশিত খসড়া অনুযায়ী, জেলার ১১টি আসনের মধ্যে ৫টির সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। বাকি ৬টির সীমানা অপরিবর্তিত রয়েছে। হঠাৎ এমন পরিবর্তনে ক্ষোভ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার সম্ভাব্য প্রার্থী ও রাজনীতিবিদরা। এতে পালটে যেতে পারে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ। তাই আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন ওইসব এলাকার রাজনৈতিক নেতারা। এদিকে কুমিল্লা-১০ নির্বাচনি আসনে ব্যাপক পরিবর্তনের প্রতিবাদে মশাল মিছিল হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে সদর দক্ষিণ এলাকায় এ মশাল মিছিল বের করা হয়।

কুমিল্লা-১। আগে এ আসনে ছিল দাউদকান্দি ও তিতাস উপজেলা। নতুন খসড়া অনুযায়ী আসনটি গঠিত হয়েছে দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলা নিয়ে। তিতাস বাদ দিয়ে যুক্ত করা হয়েছে মেঘনা।

কুমিল্লা-২। গেল সংসদ নির্বাচনেও এ আসনে মেঘনা ও হোমনা উপজেলা ছিল। এখন হোমনা রেখে মেঘনাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন আসনটি গঠিত হয়েছে হোমনা ও তিতাস উপজেলা নিয়ে।

কুমিল্লা-৯। এ আসনটি সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের। লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা নিয়ে আসনটি ছিল। এবার মনোহরগঞ্জকে বাদ দিয়ে যুক্ত করা হয়েছে লালমাই উপজেলাকে।

কুমিল্লা-১০। এ আসনটি সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের। এ আসনের ৩টি উপজেলা ভাগ করে ৩টি আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

আগে আসনটি গঠিত ছিল সদর দক্ষিণ, লালমাই ও নাঙ্গলকোট উপজেলা নিয়ে। এখন সদর দক্ষিণ ও লালমাই বাদ দিয়ে নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা নিয়ে আসনটি গঠন করা হয়েছে।

কুমিল্লা-১১ আসন ছিল একমাত্র চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নিয়ে। এখন তাতে যুক্ত হয়েছে সদর দক্ষিণ উপজেলা। নতুন ভাবে গঠিত হয়েছে চৌদ্দগ্রাম ও সদর দক্ষিণ উপজেলা নিয়ে। অথচ সদর দক্ষিণ উপজেলা থেকে ফেনী সীমান্তবর্তী চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে।

এদিকে সীমানা অপরিবর্তিত রয়েছে-কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর), কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার), কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া), কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর, কুমিল্লা সিটি করর্পোরেশন ও সেনানিবাস), কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) ও কুমিল্লা-৮ (বরুড়া)।

যা বললেন রাজনীতিবিদরা : নতুন এই আসন বিন্যাসের খসড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সাবেক সংসদ-সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী। তিনি কুমিল্লা ১০ আসন থেকে নির্বাচন করার কথা ছিল। এখন আসন বিন্যাসের কারণে তার সংসদীয় আসন কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম)। তিনি বলেন, যে নির্বাচনি এলাকার কারণে উপজেলা (সদর দক্ষিণ) হয়েছে, এটাকে তৃতীয়বারের মতো ষড়যন্ত্রকারীরা তিন ভাগ করল। এটা জনগণের প্রতি জুলুম হয়েছে। তাই আইনি লড়াইয়ে যাবেন বলেও জানান তিনি।

কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি মেঘনা) আসন বিন্যাস নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেন বলেন, দাউদকান্দি, তিতাস, মেঘনা, হোমনা-এ চার উপজেলার মানুষের কল্যাণে যেটা হয়, যেভাবে করলে মানুষের উপকার হবে, সব সেবা পাবে, সেটাকে চিন্তা করেই ইলেকশন কমিশন ফাইনালি সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলেই বিশ্বাস করি। আমি মনে করি, জনগণের পক্ষেই শেষ সিদ্ধান্ত যাবে।

কুমিল্লা-১ আসন নিয়ে অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্ত এলাকার সর্বস্তরের লোকজন প্রত্যাখান করেছে। এটা ভুল সিদ্ধান্ত। আমরা লিখিতভাবে বিষয়টি কমিশনকে জানাব। আগামি ৮ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের সামনে মানববন্ধন করব। কমিশন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে উচ্চ আদালতে আপিল করব।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম