আট মাস পর মায়ের কোলে শিশু হোসাইন
এখনো আইসিইউতে নানি
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মায়ের সঙ্গে বাবাকে খুঁজতে গিয়ে নিখোঁজ হয় চার বছরের শিশু হোসাইন। অবশেষে আট মাস পর বুধবার মায়ের কোলে ফিরেছে সে। তাকে ফিরে পেতে পরিবারকে পাড়ি দিতে হয়েছে বড় বিপদ। হোসাইনের মা এসব বিপদ পাড়ি দিলেও হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি নানি মনোয়ারা বেগম।
হোসাইন মা জরিনার সঙ্গে মামার বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উড়িরচর গ্রামে থাকেন। বাবা আলমীর হোসেন কাজের সুবাদে থাকেন চট্টগ্রামে। কিন্তু হঠাৎ করেই মা ও ছেলের খোঁজখবর নেওয়া বন্ধ করে দেন আলমগীর। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামে স্বামীকে খুঁজতে যান জরিনা। সেখানে স্বামীকে খুঁজে না পেয়ে ট্রেনে বাড়িতে রওয়ানা হন। কিন্তু ভুল করে ঢাকার ট্রেনে উঠে পড়েন তারা। কুমিল্লার লাকসামে এসে তিন অপহরণকারী হোসাইনকে নিয়ে নেমে পড়ে ট্রেন থেকে। জরিনা ছেলেকে খুঁজতে খুঁজতে চলে যান ঢাকায়।
লাকসাম স্টেশনে হোসাইন কান্না শুরু করলে অপহরণকারীরা তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর দেবিদ্বার সরকারি শিশু পরিবারের আশ্রয়ে দিয়ে যায়। সেখানে তার কাটে আট মাস। ১ আগস্ট স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় হোসাইনের পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়। রোববার হোসাইনের মা জরিনা, নানি মনোয়ারা ও মামা অলিউল্লাহ দেবিদ্বার শিশু পরিবারের উদ্দেশে যাত্রা করেন। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কংশনগরে এসে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন তিনজনই। এ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দেবিদ্বার উপজেলা যুগান্তর প্রতিনিধি মো. আক্তার হোসেনের নেতৃত্বে একদল সাংবাদিক গিয়ে তাদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাত ২টায় মনোয়ারার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু পথে তার অবস্থা আরও অবনতি হলে মাতুয়াইলে একটি প্রাইভেট হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চার দিন অজ্ঞান থাকার পর বুধবার সকালে তার জ্ঞান ফিরেছে। একই দিনে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জরিনা ছাড়া পান। পরে তিনি দেবিদ্বার শিশু পরিবারে এসে হোসাইনকে নিতে আবেদন করেন। বুধবার দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাসনাত খান হোসাইনকে তার মায়ের কোলে তুলে দেন।
দেবিদ্বার উপজেলা যুগান্তর প্রতিনিধি মো. আক্তার হোসেন বলেন, হোসাইনের পরিবারের সন্ধ্যান পেতে কাজ শুরু করি স্থানীয় কয়েজন সাংবাদিককে সঙ্গে নিয়ে। যুগান্তারে সংবাদ প্রকাশসহ সামাজিক মাধ্যমে প্রচার শুরু করেন তারা।
দেবিদ্বার সরকারি শিশু পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক বরুন চন্দ্র দে বলেন, হোসাইন আমাদের শিশু পরিবারে প্রায় আট মাস ধরে ছিল। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর তাকে লাকসাম পুলিশ দিয়ে যায়।
