Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

প্রতিবন্ধী আত্ম-উন্নয়ন সংস্থা

প্রতিবন্ধী নারীদের তৈরি পণ্য যাচ্ছে ১২ দেশে

Icon

আতাউল করিম খোকন, ময়মনসিংহ

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রতিবন্ধী নারীদের তৈরি পণ্য যাচ্ছে ১২ দেশে

ময়মনসিংহে প্রতিবন্ধী নারীদের হাতে তৈরি কার্পেট ও শতরঞ্চি ১২টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এসব পণ্য তৈরি করছেন নগরীর কাচিঝুলি এলাকার প্রতিবন্ধী আত্ম-উন্নয়ন সংস্থার সদস্যরা। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শেফালী আক্তারের তত্ত্বাবধানে চলছে পুরো কার্যক্রম। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ২৫০ নারী প্রতিবন্ধী হস্তশিল্পের কাজ করেন। এতে ভাগ্য বদলেছে তাদের। প্রতিষ্ঠানটিতে কার্পেট ও শতরঞ্চি ছাড়াও তৈরি হচ্ছে ওয়ালমেট, কুশন কভার, লেডিস ব্যাগ, ল্যাপটপ ব্যাগ, পাপোশসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী। যেগুলো চলে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, বেলজিয়াম, জার্মানির মতো দেশে।

জানা যায়, ২০০৪ সালে ময়মনসিংহ নগরীর প্রতিবন্ধী কমিউনিটি সেন্টার থেকে কার্পেট ও শতরঞ্চি তৈরির প্রশিক্ষণ নেন শেফালী আক্তার। তিনি নগরীর কিসমত এলাকার ইদ্রিস আলির মেয়ে। ২০২০ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে প্রতিবন্ধী আত্ম-উন্নয়ন সংস্থার নিবন্ধন নেওয়া হয়। ২০২২ সাল থেকে শেফালী আক্তারের হাত ধরে ৬ জন নারী নিয়ে পথচলা শুরু হয় প্রতিষ্ঠানটির। প্রতিবন্ধীদের সেলাই, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে সংস্থাটি।

এছাড়া প্রজাপতি ক্রাফট নামে রয়েছে তাদের নিজস্ব শোরুম। সেখানে বিক্রি হয় হাতে তৈরি পুতুল, কার্পেট, মোমবাতিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। এখানে মানভেদে একেকটি কার্পেট ২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়াও পুতুল, আঁকা ছবি, পাটের তৈরি ব্যাগের দাম ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা।

ময়মনসিংহ সদরের কিসমত, তারাগায়, মির্জাপুর, আহমদপুর, বেগুনবাড়ি এলাকায় আরও পাঁচটি শাখা চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এখানকার প্রতিবন্ধী সাবিনা আক্তার, রহিমা বেগম, বাবলি আক্তার, রোকসানা, সেতু, রিতা, নমিতাসহ সব সদস্য জীবনের কষ্ট পেরিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার সংগ্রামে আছেন।

ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১৫ সালে ফ্রান্স সরকার উদ্যোক্তা শেফালীকে বিশ্ব প্রতিবন্ধী ফোরামে নিয়ে যায়। প্রতিবন্ধী নারীদের উন্নয়নে কাজ করার স্বীকৃতি হিসাবে প্রতিবন্ধী দিবসে তাকে জাতীয়ভাবে সম্মাননা দেওয়া হয়।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মী নেত্রকোনার নেপালি চাম্বু গং জানান, জন্মের পরই পোলিও আক্রান্ত হয়ে দুটি পা অচল হয়ে যায়। সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে বাঁচতে এ সংস্থায় কাজ করে যেতে চাই। শেফালী আক্তার জানান, অনলাইনের মাধ্যমে নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে পণ্যের বিভিন্ন ডিজাইনের ক্যাটালগ পাঠানো হয় বায়ারদের কাছে। বায়ারদের পছন্দ হলে অর্ডার কনফার্ম করে। আমাদের এখানে ২৫০ জন সদস্যের সবাই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষ।

প্রতিবন্ধী আত্ম-উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি আতাউর রহমান জুয়েল বলেন, এখানকার প্রতিবন্ধী নারীরা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের উপার্জিত আয় দিয়ে চলছে সংসার, পাশাপাশি পরিবারকেও আর্থিক সহায়তা করতে পারছেন। ময়মনসিংহ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাজু আহমেদ জানান, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উৎসাহিত করতে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। তাদের জন্য বিভিন্ন মেলায় পণ্য বিক্রি করতে স্টলের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও বছরে একবার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম