Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

বঞ্চনার শিকার প্রতিবন্ধীরা : তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ দিতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বঞ্চনার শিকার প্রতিবন্ধীরা : তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ দিতে হবে

ফাইল ছবি

স্টিফেন হকিং দেখিয়েছন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনো সমস্যা নয়। হকিং প্রমাণ করেছেন, হুইলচেয়ারে বসেই চিন্তার জগতে বিপ্লব আনা সম্ভব। অধ্যাপক হকিংয়ের ছাত্র অধ্যাপক পল শেরার্ড মনে করেন, তিনি অন্য যে কারও চেয়ে বেশিকিছু করে দেখিয়েছেন। স্টিফেন হকিংয়ের মতো আরও অনেকেই শারীরিক সীমাবদ্ধতা নিয়েই ব্যতিক্রমী সাফল্য অর্জন করেছেন। এসব দৃষ্টান্ত সত্ত্বেও সমাজে প্রতিবন্ধীদের বোঝা মনে করা হয়। এটা দুঃখজনক। জানা যায়, দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ দৃষ্টিহীন ঘরে-বাইরে বঞ্চনার শিকার। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ প্রতিবন্ধী। এর মধ্যে ৫ লাখের বেশি শতভাগ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও খেলাধুলার সুযোগ নামেমাত্র। প্রতিবন্ধীদের জন্য মাসিক কিংবা এককালীন ভাতা বাড়ানোর দাবি উঠলেও তার বাস্তবায়ন নেই। এমন বাস্তবতার মধ্য দিয়েই প্রতিবছরের মতো এবারও ‘বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস’ পালিত হলো গতকাল।

আমাদের সমাজে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী নানা ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার। এর পেছনে রয়েছে মানুষের সচেতনতার অভাব। এ বিষয়ে সমাজে নানা কুসংস্কারও রয়েছে। সচেতন মানুষকে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধিতার শিকার। কাজেই প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের দেশে সাধরণত সচ্ছল পরিবারের প্রতিবন্ধীরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। দরিদ্র পরিবারের প্রতিবন্ধীরা সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারে না। অনেক পরিবারে প্রতিবন্ধীদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়। অথচ যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হলে তারাও মূলধারার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন।

প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে তাদের উপযোগী পাঠদানের পদ্ধতি ও কৌশল খুঁজে বের করতে হবে। এসব বিষয় শিক্ষক প্রশিক্ষণে যুক্ত করা দরকার। সহপাঠীরা যাতে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভালো আচরণ করে, এ জন্য শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। উপজেলা সদরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকায়ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা দরকার।

সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কথা বিবেচনায় রেখে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরিতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। যারা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগ দিচ্ছেন, তাদের অন্য কর্মীদের মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিমালার বড় রকমের পরিবর্তন দরকার। প্রতিবন্ধীদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের জন্য সুদবিহীন ঋণের ব্যবস্থাও করা প্রয়োজন। প্রতিবন্ধীরা যাতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম