উচ্চশিক্ষায় ভর্তি
মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরি
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরপরই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মেধাবীরা। এর কারণ হলো, ভালো ফলধারী শিক্ষার্থীর তুলনায় মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সেগুলোর আসন সংখ্যা সীমিত। দেশে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার মতো সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানে আসন রয়েছে ১২ লাখের মতো। আর প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নামিদামি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন রয়েছে ৬০ হাজারের মতো। অন্যদিকে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৯ হাজার ৯৭। অর্থাৎ, মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬০ হাজার আসন পূরণ হওয়ার পরও ৯ হাজারের বেশি জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী এসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবেন না। আর জিপিএ-৫-এর নিচে কিন্তু ৩.৫-এর উপরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ লাখ ৭ হাজার ১৫। তারাও অংশ নেবেন ভর্তিযুদ্ধে। এ অবস্থায় ভর্তিযুদ্ধ যে তীব্র প্রতিযোগিতামূলক হবে, তা বলাই বাহুল্য।
প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে পার্থক্যের কারণে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ভর্তি সংকটের কথাটি সাধারণভাবে মেনে নিলেও এ সত্য অস্বীকার করার উপায় নেই যে, দেশে মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে প্রতিবছর গুটিকয়েক বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘিরে শিক্ষার্থীদের ভিড় লেগে থাকে। এ অবস্থায় দেশে উচ্চশিক্ষার প্রসারের পাশাপাশি ভালো ও মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাব ও ভর্তি সংকটের সুযোগে বেসরকারি ও বিদেশি নামধারী বিশ্ববিদ্যালগুলোর তথাকথিত শাখা বা ক্যাম্পাস গড়ে উঠতে দেখা যায়। প্রাইভেট টিউশনি, কোচিং সেন্টার ইত্যাদির পর শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বাণিজ্যধারায় সর্বশেষ যুক্ত হওয়া দেশের অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। এ অবস্থায় মানসম্মত উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি অভিন্ন পদ্ধতিতে স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
সেই সঙ্গে আরও একটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া দরকার, সেটি হলো কারিগরি শিক্ষা। দেশে কারিগরি শিক্ষাক্ষেত্রে রয়েছে নানা সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ। কারিগরি শিক্ষা নিয়ে নানা নেতিবাচক ধারণাও প্রচলিত আছে। সম্প্রতি শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেছেন, নেতিবাচক ধারণা দূর করে মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থায় কারিগরি শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। আমরা মনে করি, দেশে কারিগরি শিক্ষা অধিকতর মানসম্মত হলে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ভর্তির চাপ কমে আসবে। বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগও। যৌক্তিক কারণেই সমাজে সব ধরনের পেশার প্রয়োজন রয়েছে। এসব বাস্তবতা মাথায় রেখেই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরি করা উচিত।
