কর্মস্থলে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি
দায়িত্বে অবহেলায় শাস্তি হওয়াই কাম্য
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক চিকিৎসক রাজধানী ও বড় শহরের বাইরে কাজ করতে চান না- এ অভিযোগ বেশ পুরনো। অনেক চিকিৎসক আছেন যারা নানারকম প্রভাব খাটিয়ে বছরের পর বছর রাজধানীতে কাজ করছেন।
এই চিকিৎসকদের রাজধানীর বাইরে বদলি করা হলে নতুন কর্মস্থলে কিছুদিন কাজ করার পরই কী উপায়ে রাজধানী কিংবা এর আশপাশের জেলায় বদলি হওয়া যায়, তা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তারা।
যেসব চিকিসক রাজধানীর বাইরের কর্মস্থলে যোগদান করেই রাজধানীতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন, তারা কর্মস্থলে কতটা মনোযোগী হতে পারেন- এটা এক বড় প্রশ্ন। চিকিৎসকের পেশাটি অন্য দশটি পেশা থেকে ভিন্ন।
এ পেশায় সামান্যতম অমনোযোগী হলে কোনো রোগীর জীবন বিপন্ন হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
সোমবার রাজধানীসহ দেশের আট জেলার ১১টি সরকারি হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ৪০ শতাংশ চিকিৎসকের কর্মস্থলে অনুপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন ঢাকার তিন হাসপাতালে ১১ শতাংশ চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকলেও ঢাকার বাইরের সাত হাসপাতালে ৬২ শতাংশ চিকিৎসক অনুপস্থিত ছিলেন। দুদকের অভিযানে প্রাপ্ত তথ্য থেকেই স্পষ্ট- দেশের উল্লেখযোগ্যসংখক চিকিৎসক দায়িত্বের প্রতি কতটা অবহেলা প্রদর্শন করছেন।
এ রকম অভিযান অব্যাহত থাকলে আরও স্পষ্ট হবে কোন কোন চিকিৎসক দায়িত্বে অবহেলা করে প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিয়ে ব্যস্ত আছেন। সরকারি চাকরিরত কর্মচারী-কর্মকর্তাদের একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর বদলি করা হবে, এটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু কোনো কোনো চিকিৎসক একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করছেন। এসব কর্মচারী-কর্মকর্তা কী কৌশলে বদলি ঠেকাতে সক্ষম হন, সে রহস্য উদ্ঘাটন করা দরকার।
যেসব চিকিৎসক প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চান, তারা চাকরি ছেড়ে দিয়ে যেখানে খুশি থাকতে পারেন। চাকরি বহাল রেখেই তারা কী কৌশলে সব দিক রক্ষা করে চলেন, তা উদ্ঘাটন করা দরকার।
এ ক্ষেত্রে অবৈধ লেনদেন হয় কিনা, তাও খতিয়ে দেখা উচিত। অবৈধ লেনদেনের বিষয় থাকলে কারা এসব লেনদেনের সঙ্গে জড়িত, তাদের খুঁজে বের করা জরুরি। বিভিন্ন অজুহাতে যারা দায়িত্বে অবহেলা করেন, তাদের চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
