শিশু অপহরণ ও হত্যা: অপরাধীদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করুন
প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মৃত্যু অবধারিত। অমোঘ। এ অমোঘ নিয়তি এড়ানোর ক্ষমতা কোনো জীবের নেই। জন্মিলে মরিতে হবে- অমর কে কোথা ভবে! তবে দিনশেষে অস্তাচলগামী সূর্যের অস্ত যাওয়া নিয়ে যেমন আমাদের মনে কোনো প্রশ্ন থাকে না, তেমনি পরিণত বয়সে জীবের মৃত্যু আমাদের ব্যথিত করলেও তা নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকে না।
কিন্তু যে জীবন কেবল মুকুলসম, ফুল হয়ে এখনও প্রস্ফুটিত হয়নি; তা যদি বৃন্তচ্যুত হয়ে ধুলায় লুটায়- তাহলে তার বেদনা অপরিসীম। এ অপরিসীম বেদনাভারই বয়ে বেড়াতে হচ্ছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ এলাকার পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম মাহমুদের মা-বাবা ও স্বজনদের।
জানা গেছে, জমি নিয়ে সিয়ামের বাবা শাহজাহান গাজীর সঙ্গে তার চাচাতো ভাইদের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ রোষানলেই খুন হয়েছে সিয়াম। প্রাথমিকভাবে পুলিশও মনে করছে, পূর্বশত্রুতার জের ধরেই প্রতিপক্ষের লোকজনের দ্বারা ঘটেছে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড।
দেশে শিশু অপহরণ ও হত্যার ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে। অতি তুচ্ছ ঘটনা থেকে শুরু করে নানাবিধ কারণে অসহায় শিশুরা যেভাবে ঘাতকের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে, তা সত্যিই উদ্বেগজনক।
সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্র, প্রতারক, প্রবঞ্চক ও দুর্বৃত্তদল, নিকটাত্মীয়, এমনকি গর্ভধারিণী মায়ের হাতেও নিষ্পাপ-নিরপরাধ শিশুরা এখন আর নিরাপদ নয়। দুশ্চিন্তার বিষয় হল, দেশে কেবল শিশু অপহরণ ও হত্যা নয়, আরও নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
এক্ষেত্রে পারিবারিক কলহের জের ধরে গাজীপুরের শ্রীপুরে গার্মেন্ট কর্মী স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে আঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে।
পারিবারিক জীবনে এ ধরনের নৃশংসতা কেন ঘটছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ দেশের সমাজবিজ্ঞানীদের তার কারণ উদ্ঘাটন ও প্রতিকারের উপায় খুঁজে বের করা উচিত বলে আমরা মনে করি।
দুঃখজনক হল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যই আজকাল নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হচ্ছে, যা অপরাধীদের ভুল বার্তা দিচ্ছে। এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার। এমনিতেই দেশে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই। কোনো নিরপরাধ শিশু বা অন্য কেউ যদি নৃশংস খুনের শিকার হয়, তাহলে তা মেনে নেয়া কষ্টকর। মর্মান্তিক এ পরিস্থিতি এড়াতে বাবা-মাসহ পরিবারের অন্যদের সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
পারিবারিক সচেতনতা অনেক অনভিপ্রেত দুর্ঘটনার হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। পরিবারের পাশাপাশি রাষ্ট্রকেও নির্ধারিত ভূমিকা পালন করতে হবে। শিশু অপহরণ ও হত্যাসহ অন্য সব খুনের ঘটনা যারা ঘটায়, তারা কোনো অনুকম্পা পাওয়ার যোগ্য নয়- এ বার্তাটি সবার কাছে পৌঁছে দিতে হলে অপরাধীদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।
