উপবৃত্তি প্রকল্প
একীভূত করতে হবে দ্রুত
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
উপবৃত্তি প্রকল্পগুলো একীভূত না হওয়ায় অর্থ সংকটে পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড।
উল্লেখ্য, দেশে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাদের বৃত্তি দিতে সাত বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় এ ফান্ড গঠন করা হয়।
ফান্ডটি গঠনের আরও উদ্দেশ্য উপকারভোগী নির্বাচন ও বণ্টনে অনিয়ম-দুর্নীতি এবং একই শিক্ষার্থীকে একাধিকবার সুবিধা দেয়ার মতো সমস্যাগুলো দূর করা।
ফান্ড গঠনকালে পরিকল্পনা ছিল সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উৎস থেকেও অর্থের সংস্থান করা হবে। কথা ছিল, যখন যে উপবৃত্তি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে, তখনই তা এ ফান্ডের মধ্যে একীভূত হবে।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক, গত সাত বছরেও উপবৃত্তি প্রকল্পগুলো এক ছাতার নিচে আনা সম্ভব হয়নি। কয়েকটি উপবৃত্তি প্রকল্পে অর্থায়ন করে থাকে বিদেশি দাতাগোষ্ঠী।
প্রকল্পগুলো একীভূত না হওয়ায় বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট চলছে কেবল সরকারের বরাদ্দ দেয়া সিডমানি থেকে পাওয়া লাভের অর্থে। এ অর্থে চাহিদা পুরোপুরি পূরণ হয় না।
এ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী থোক বরাদ্দ দিয়ে উপবৃত্তি কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছেন। অথচ ট্রাস্ট আইন অনুযায়ী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সিএসআরের (ব্যবসায়িক সামাজিক দায়বদ্ধতা) অর্থ সংগ্রহ করা গেলে এ সংকট তৈরি হতো না।
প্রশ্ন হল, উপবৃত্তি প্রকল্পগুলো ট্রাস্ট ফান্ডে একীভূত করা হচ্ছে না কেন? জানা গেছে, এ ক্ষেত্রে প্রধান বাধা শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা ক্যাডারের একশ্রেণীর কর্মকর্তা।
তারা যুক্তি দেখাচ্ছেন, যেসব উপবৃত্তি প্রকল্পে বিদেশি দাতাগোষ্ঠী অর্থায়ন করে থাকে, সেগুলো ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে নেয়া হলে দাতারা আর অর্থ দেবে না। এ ধরনের যুক্তি কতটা যথার্থ তা খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া দরকার।
নয়তো ফান্ডে অর্থ সংকট না কাটলে এ ট্রাস্ট গঠনের উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে। উপবৃত্তি প্রকল্পগুলো দরিদ্র শিক্ষার্থীদের, বিশেষত নারী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড থেকে সম্প্রতি এমফিল-পিএইচডির মতো উচ্চতর শিক্ষা কার্যক্রমেও আর্থিক সহায়তা দেয়া শুরু হয়েছে। কাজেই এ ফান্ডের অর্থ সংকট দূর করতে হবে দ্রুত। সেক্ষেত্রে উপবৃত্তি প্রকল্পগুলো ট্রাস্ট ফান্ডে একীভূত করার ব্যাপারে কোনো জটিলতা থেকে থাকলে তা নিরসনে নিতে হবে পদক্ষেপ।
