বই উৎসব
ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জন্য নববর্ষের শ্রেষ্ঠ উপহার
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শিশুদের বই উৎসব। ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সোমবার নতুন বছরের প্রথম দিনটি উদ্ভাসিত হয়েছিল ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের হাসির আলোয়। প্রথম থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করা হয় এদিন। এবার সারা দেশে ৪ কোটি ৩৭ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রায় সাড়ে ৩৫ কোটি নতুন বই। বছরের শুরুতেই এ কাজটি সাফল্যের সঙ্গে করতে পারার জন্য শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কৃতিত্ব দাবি করতে পারে। অবশ্য ৩০ ডিসেম্বরই প্রধানমন্ত্রী গণভবনে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
নতুন শ্রেণীতে নতুন বই পাওয়ার আনন্দই অন্যরকম। সে বই যদি বিনামূল্যে পাওয়া যায় তাহলে তো কথাই নেই। এর মধ্যে এক ধরনের সার্বজনীনতাও রয়েছে। কেননা দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের অনেকেরই নতুন বই কেনার সামর্থ্য থাকে না। তারা আগে পুরনো বই দিয়েই বছর পার করত। এখন সবার হাতেই নতুন বই। তাই উৎসবমুখর পরিবেশে সর্বস্তরের শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা বছরের প্রথমদিনে পাঠ্যপুস্তক উৎসবে শামিল হয়েছিল।
টানা নয় বছর ধরে বিনামূল্যে পাঠ্যবই প্রদানের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রণালয়- শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এটি সরকারের অন্যতম ভালো কাজ নিঃসন্দেহে। কোনো কোনো বছর বই প্রকাশে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বটে, তবে উদ্যোগটি যে মহৎ এতে কোনো সন্দেহ নেই। বিতরণকৃত কিছু বইয়ের বিষয়ে মুদ্রণ বিভ্রাট, পাতা এলোমেলো থাকা, ছাপার মান খারাপ হওয়া ইত্যাদি অভিযোগ এসেছে। এত বিশাল কর্মযজ্ঞে কিছু ভুলত্রুটি থাকতেই পারে, আসতে পারে বিভিন্ন স্তরে বাধা। কখনও কখনও সংশ্লিষ্টরা ব্যর্থতা ও দুর্নীতিরও পরিচয় দিয়ে থাকে। মনে রাখতে হবে, মুষ্টিমেয় কিছু লোকের ব্যর্থতা অথবা দুর্নীতির কারণে একটি মহতী উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে না। এ কার্যক্রমের ভুলত্রুটিগুলো শুধরে কীভাবে একে সর্বাঙ্গীণ সফল করা যায় সেদিকেই এখন সরকারের দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। পাঠ্যপুস্তক উৎসব দিবস উপলক্ষে সোমবার রাজধানীতে আলাদা দুটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠানটি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানটি হয় আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল ও কলেজ মাঠে। উভয় অনুষ্ঠানই যথাসম্ভব শিশুবান্ধব করে তোলার চেষ্টা করা হয়। আমরা চাই, এমন একটি অনুষ্ঠান যেন সবসময় সুন্দর ও সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়।
বিনামূল্যের বই বিশেষত গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র অভিভাবকদের জন্য এক বড় ধরনের স্বস্তি। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ সহায়তায় তাদের আর্থিক কষ্টের বোঝা অনেকটাই লাঘব হবে নিঃসন্দেহে। আমাদের বিশ্বাস, শুধু বিনামূল্যের বই নয়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও অনেক কিছু করার আছে। শিক্ষার্থীদের ঝরেপড়াসহ প্রাথমিক শিক্ষার অন্য সমস্যাগুলোর যদি প্রতিকার করা যায়, তাহলে এ দেশের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার ভিতটি শক্তভাবে গড়ে উঠতে পারবে, যা একটি জাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
