মানহীন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দেশে উচ্চশিক্ষা স্তরে পর্যাপ্ত আসন থাকলেও প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটতে থাকেন। আবার অনেকে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান বিদেশে। পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে না পেরে অনেকে লেখাপড়া ছেড়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। এ বাস্তবতায় দেশের সব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে দেশে অনেক বেসরকারি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান কী করে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করা যায়, সেদিকে কর্তৃপক্ষকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।
দেশে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার মতো সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানে আসন আছে প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ। এর মধ্যে সাধারণত বুয়েট, মেডিকেল, বড় সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে সাকুল্যে ৯০ হাজারের মতো আসনের প্রতি ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চোখ থাকে।
২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১০ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ভর্তির শর্ত পূরণ করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা সোয়া আট লাখের বেশি। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৬ হাজারেরও বেশি। উল্লিখিত ৯০ হাজার আসনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী এ সোয়া আট লাখ শিক্ষার্থী। বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলমান ভর্তিযুদ্ধে লড়াইটা হচ্ছে এসব শিক্ষার্থীর মধ্যেই।
বর্তমান বাস্তবতায় উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষার সব স্তরে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে এ অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা দরকার। কোনো কোনো দেশে কিছু বেসরকারি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান এতটাই বেড়েছে যে, সেসব প্রতিষ্ঠানের সুনাম সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা যায়, বিদেশি ওইসব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থীরাও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আর্থিক অনুদান সংগ্রহে জোরালো ভূমিকা রেখে চলেছেন। আমাদেরও উচিত সেই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা। বস্তুত শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই যতই আন্তরিক হোন না কেন, পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকলে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পই মাঝপথে থেমে যেতে পারে।
দেশে সীমিত ও স্বল্প আয়ের বহু মানুষ রয়েছেন যারা বাড়তি খরচের কথা বিবেচনা করে সন্তানকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে নিরুৎসাহিত করেন। এ অবস্থায় প্রত্যেক শিক্ষার্থী যাতে নিজ বাড়ি বা এলাকায় অবস্থান করে জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে মানসম্মত উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। কেউ যাতে শিক্ষাকে পণ্যে পরিণত করতে না পারে এদিকেও কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি দিতে হবে। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলার জন্য দেশে সর্বস্তরে শিক্ষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মান বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
