Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী গড়তে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় কয়েকটি প্রস্তাব রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্ব রক্ষায় যুদ্ধে ব্যবহৃত অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় ব্যয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।

সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ন্যাশনাল অ্যাডাপ্টেশন প্ল্যান (ন্যাপ) এক্সপো-২০২৪’ এবং ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (বিসিডিপি)’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে চাই। এজন্য প্রয়োজন অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি, সহিষ্ণুতা শক্তিশালী করা এবং ঝুঁকি হ্রাসে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া।

বস্তুত জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক প্রতিটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হলেও পরে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি লক্ষ করা যায় না। এ ধারার পরিবর্তন দরকার। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি ও ক্ষতি মোকাবিলা করা বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পক্ষে সম্ভব নয়। যেহেতু শিল্পোন্নত দেশগুলোর কারণেই এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে, তাই দায় স্বীকারের পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলা ও ক্ষতিপূরণ প্রদানেও তাদের কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। তাদের জীবনমানের পরিবর্তনে বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ জনগোষ্ঠীর বংশপরম্পরায় প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। তাই তাদের জীবনমানের পরিবর্তনে শিল্পোন্নত দেশগুলোকে নিতে হবে বিশেষ উদ্যোগ। পরিবেশের আরও অবনতি রোধে প্যারিস চুক্তির সব ধারাসহ প্রাসঙ্গিক সব বৈশ্বিক চুক্তি ও প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে বিশ্বাবাসীকে আন্তরিক হতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এরই মধ্যে সমগ্র বিশ্বে পড়তে শুরু করেছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বিশ্বে নানামুখী সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলের কয়েক কোটি মানুষ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে লবণাক্ত পানি উপকূলের আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করছে। উপকূলীয় এলাকায় কর্মসংস্থান না হওয়ায় দলে দলে মানুষ রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে চলে যাচ্ছে। শহরমুখী এ জনস্রোতের কারণে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে নানামুখী সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ঠেকাতে বিশ্ববাসী একমত হলেও এ সংকট দিনদিন আরও তীব্র আকার ধারণ করছে। এর ফলে আমাদের দেশ কতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা দেশের সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য মূলত শিল্পোন্নত দেশগুলো দায়ী। এ দায় তারা স্বীকারও করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শিল্পোন্নত দেশগুলো যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে, সেসব বাস্তবায়নে তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এমনকি এক্ষেত্রে এসব দেশের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। উন্নত দেশগুলোর উচিত বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর পাশে থাকা।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলো এককভাবে কোনো দেশের পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এ সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা। এ সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিপুল অর্থ বরাদ্দ করাই যথেষ্ট নয়। সংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলবে না।

জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম