Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হোক

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে সোমবার শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে তার দ্বিতীয় মেয়াদের যাত্রা শুরু হলো। ২০১৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে এক মেয়াদ দায়িত্ব পালনের পর ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হন। আবার ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি বীরদর্পে ফিরে এলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য আমরা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানাই।

শপথ গ্রহণের পরপরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে আমেরিকার সরে আসা, ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গার দায়ে অভিযুক্ত দেড় হাজার সমর্থককে ক্ষমা করে দেওয়া এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে সরে আসার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে জন্মালেই মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার সংবিধানস্বীকৃত আইনে পরিবর্তন আনতে চান ট্রাম্প। এ বিষয়ে তিনি একটি প্রশাসনিক নির্দেশে সই করেছেন। অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়েছেন তিনি। বস্তুত ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসীবিরোধী বলে পরিচিত।

তিনি দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মুসলিম, কৃষ্ণাঙ্গ, মেক্সিকানসহ অভিবাসী জনগোষ্ঠী স্বভাবতই উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৩০ লাখ বাংলাদেশি বৈধ বা অবৈধভাবে বসবাস করেন। অবৈধরা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। আমরা আশা করব, যুক্তরাষ্ট্র যে কার্যত একটি অভিবাসীর দেশ এবং তাদের অবদানেই দেশটি আজকের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে, এ সত্য অনুধাবন করবেন ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন সব জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মাবলম্বীর মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

বিশ্বব্যাপী মার্কিন নীতির প্রভাব সর্বজনবিদিত। দেশটির ক্ষমতার পালাবদলে পররাষ্ট্রনীতিতে কী পরিবর্তন আসবে, ট্রাম্পের নেতৃত্বে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কেমন হবে, এটা এক বড় প্রশ্ন। তবে অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে রাতারাতি বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম।

দেশটির পররাষ্ট্রনীতি প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি পররাষ্ট্র বিভাগ, পেন্টাগন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কাউন্সিল, সর্বোপরি কংগ্রেসের ভূমিকার ওপর নির্ভরশীল। এটি এক মিশ্র প্রক্রিয়া। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় এবার বিশেষত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে মার্কিন নীতিতে বড় পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। সেটি যদি এ যুদ্ধ বন্ধে সহায়ক হয়, তাহলে তা বিশ্বশান্তির অনুকূলে কাজ করবে বলা যেতে পারে। মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষত ফিলিস্তিন ইস্যুতেও মার্কিন নীতির পরিবর্তন দেখতে চায় বিশ্ববাসী। আমরা আশা করব, এ ইস্যুতে দুই রাষ্ট্র সমাধানের ওপর জোর দেবে নতুন মার্কিন প্রশাসন। একমাত্র দুই রাষ্ট্র সমাধানই শান্তি আনতে পারে ফিলিস্তিনে, তথা মধ্যপ্রাচ্যে।

নতুন মার্কিন নেতৃত্বের এশিয়া, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়া নীতি কী হবে, আমরা তা দেখার অপেক্ষায় থাকব। আমরা বিশেষভাবে দেখার অপেক্ষায় আছি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনদিকে গড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ রক্ষাই হবে মূলনীতি। আমরা চাইব, ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি বিশ্বশান্তির অনুকূলে ভূমিকা রাখবে। ক্ষমতার চেয়ার ব্যক্তিকে দায়িত্বশীল করে তোলে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বাকি বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সচেষ্ট হবেন, এটাই আমরা আশা করি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম