মধু ফাঁদের প্রতারণা
সাবধানতাই রক্ষাকবচ
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আধুনিক প্রযুক্তি আমাদের জীবন সহজ করেছে শুধু নয়, এর অপপ্রয়োগ মানুষের দুর্ভোগেরও কারণ ঘটাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির অকল্পনীয় উৎকর্ষ এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সভ্যতার। ঘটছে বিচিত্র সব অপরাধ। এসব অপরাধের একটি হলো, মধু ফাঁদ পেতে শিকারদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা। মধু ফাঁদে যৌনতার আহ্বান থাকে আর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেককে গচ্চা দিতে হয় লাখ লাখ টাকা।
যুগান্তরকে একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, চক্রের সুন্দরী তরুণীরা টার্গেটেড ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব পেরিয়ে গড়ে তোলে প্রেমের সম্পর্ক। প্রথমে ইন্টারনেটে ভিডিও কলে খোলামেলা আলাপচারিতার কথাগুলো রেকর্ড করা হয়। এরপর টার্গেটকে জিম্মি করে ফেলে। আবার অনেক ক্ষেত্রে সম্পর্ক আরও গভীর করে রুমডেটের লোভ দেখিয়ে বাসাবাড়িতে ডেকে এনে জিম্মি করে টাকা আদায় করে।
জানা গেছে, ভিডিও কলে উলঙ্গ অবস্থায় যারা আহ্বান জানায়, তাদের অনেকে দেশের বাইরে অবস্থান করছে। তারা টার্গেট ব্যক্তির ফেসবুকের অনেককে বন্ধু তালিকায় যুক্ত করে। কখনো কখনো তার স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গেও ফেসবুকে যুক্ত হয়। পরে টার্গেট ব্যক্তির কাছ থেকে দাবিকৃত টাকা না পেলে রেকর্ডকৃত কথা ও ছবি স্বজনদের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। এভাবে হাতিয়ে নেওয়া টাকার একটা অংশ অপরাধ চক্রের বাংলাদেশি সদস্যরা হুন্ডি ও ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে বিদেশে থাকা তরুণী সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
মধু ফাঁদের এ চক্রান্ত থেকে কীভাবে মুক্ত থাকা যাবে? আমরা মনে করি, প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতনতা ও সাবধানতার কোনো বিকল্প নেই। মামলার মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা খুব সহজ নয়। সাইবার ক্রাইম এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কাউন্টার টেকনোলজি ব্যবহার করে সেই ক্রাইম দূর করা কঠিন। তাই ইন্টারনেট ব্যবহকারীদের অবশ্যই সাবধান থাকতে হবে, তারা যেন কোনো চক্রান্তের ফাঁদে পা না দেন।
প্রথমত, নারীর কোনো ভিডিও কলেই সাড়া দেওয়া উচিত নয়। অডিও কলও। পরিচিত নারী ছাড়া অন্য যে কোনো নারীর সঙ্গে যোগাযোগ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারলে আর কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সাইবার ক্রাইম নিয়ে কাজ করছে যেসব সরকারি সংস্থা, উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে মধু ফাঁদ কীভাবে ভেঙে ফেলা যায়, তা উদ্ভাবনের চেষ্টা করতে হবে তাদের। তবে সচেতনতাই আত্মরক্ষার সবচেয়ে ভালো উপায়।
