লুটের টাকায় আলাদা তহবিল
পাচারের অর্থ ফেরাতে জোরালো পদক্ষেপ নিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বিগত সরকারের শাসনামলে নানা কৌশলে পর্বতপ্রমাণ অর্থ লুটপাট করা হয়েছে এবং লাখো কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। লুটের সেই অর্থ আদায় প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, যারা লুটপাটের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, তাদের কাছ থেকে জব্দ করা অর্থ ও শেয়ার দিয়ে একটি তহবিল গঠন করবে সরকার। লুটপাটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলো এ তহবিল থেকে অর্থ ফেরত পাবে। তিনি আরও বলেছেন, ব্যাংকঋণের বাইরে অবৈধ উপায়ে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ উদ্ধার করে তা দরিদ্রদের কল্যাণে ব্যয় করা হবে। সোমবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব তথ্য জানান। উল্লেখ্য, দেশের বড় ১০টি ব্যবসায়ী গ্রুপ ও শেখ হাসিনার পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে ১১টি টিম। ওই অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেছেন, জব্দ করা অর্থ ও সম্পদ এরই মধ্যে সরকারের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই এ তহবিলের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে। সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র কমিটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলের ১৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি ২০২৪ সালে এক গবেষণায় জানিয়েছিল, ৫০ বছরে বাংলাদেশে থেকে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ১১ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্ট্রিগ্রিটি বলেছে, ২০১১ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ৯০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। আমাদের দেশে থেকে অর্থ যেসব দেশে পাচার হয়েছে, তা ওইসব দেশের সম্পদে পরিণত হয়েছে। বস্তুত পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা কঠিন। কাজেই এ কাজে সফল হতে হলে কর্তৃপক্ষকে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে। এগমন্ট গ্রুপের সদস্য হিসাবে বাংলাদেশ এ গ্রুপের অন্য সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ পাচারবিষয়ক সব তথ্য পাওয়ার অধিকার রাখে। এ সুবিধা নেওয়া হলে আশা করা যায় সুফল পাওয়া যাবে। মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্টের মাধ্যমেও পাচারের অর্থ ফেরত আনা যায়। অনেক দেশ আইনগত জটিলতার কারণে তথ্য গোপন করে। ফলে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার কাজটি কঠিন হয়ে পড়ে। যেহেতু পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার কাজটি কঠিন, সেহেতু এ ব্যাপারে জোরালো তৎপরতা চালাতে হবে।
