অচল নগর ভবন
গ্রাহক সেবা ও কুরবানির বর্জ্যরে কী হবে?
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি : যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঢাকা সিটি দক্ষিণ করপোরেশনে এখন চলছে অচলাবস্থা। দীর্ঘ ১৮ দিন ধরে এর প্রধান কার্যালয়সহ ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় বন্ধ থাকায় ভেঙে পড়েছে নগর সেবা কার্যক্রম। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসাবে শপথ পড়ানোর দাবিতে নগর ভবন তলাবদ্ধ করে দিয়েছেন তার সমর্থকরা।
১৫ মে আঞ্চলিক কার্যালয়সহ নগরভবন বন্ধ থাকায় সড়কে বাতি প্রজ্বালন, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন, মশার ওষুধ ছিটানোসহ প্রায় ৩০ ধরনের সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কার্যালয়গুলো বন্ধ থাকায় জন্ম-মৃত্যু ও তালাক নিবন্ধন, হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। ওদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো তুলতে পারছেন না বিল। অথচ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর বিল তুলতে না পারলে টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত যাবে এবং সেক্ষেত্রে তৈরি হবে জটিলতা।
সবচেয়ে বড় যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা হলো আসন্ন ঈদুল আজহার কুরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি থাকা দরকার, তা নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। কুরবানির হাট ব্যবস্থাপনা দেখভাল করারও একটা প্রয়োজন রয়েছে। কুরবানি-পরবর্তী রাজধানীর অর্ধেক অংশজুড়ে বর্জ্যজনিত যে দূষিত অবস্থা বিরাজ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সিটি করপোরেশনের কার্যালয়গুলো সচল করা না গেলে এ অঞ্চলের নাগরিকদের ভোগান্তির সীমা থাকবে না।
কথা হচ্ছে, কোনো দাবিতে আন্দোলন করা সাংবিধানিক অধিকার বটে। আন্দোলনের স্বার্থে কোনো বিশেষ প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম সাময়িককালের জন্য বন্ধও রাখা যেতে পারে। কিন্তু দিনের পর দিন রাজধানীর নাগরিকদের সেবা প্রদান করে থাকে যে সংস্থা, তার কার্যক্রম বন্ধ করে রাখা কোনোভাবেই সুনাগরিকাতার পরিচয় বহন করে না। সুতরাং আন্দোলন যদি করতে হয়, তাহলে আন্দোলনকারীদের বিকল্প উপায় বেছে নিতে হবে। গ্রাহকদের সেবাবঞ্চিত করে রাখা রাজনৈতিক দায়িত্বের মধ্যেও পড়ে না। তাই নগর ভবন ও অন্যান্য আঞ্চলিক কার্যালয়কে সচল রেখে কীভাবে আন্দোলন করা যায়, ইশরাক হোসেনের সমর্থকদের তা ভাবতে হবে। ইশরাক হোসেন বিএনপির অন্যতম জনপ্রিয় নেতা বলে তাকে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিতে হবে বৈকি। কর্মীরা নেতার নির্দেশেই কর্মসূচি পালন করে থাকেন। সুতরাং ঢাকার দক্ষিণাঞ্চলের নাগরিকদের সেবা ও কুরবানি-পরবর্তী পরিচ্ছন্ন ঢাকা উপহার দেওয়ার দায়িত্বটা তাকেই নিতে হবে। চলমান আন্দোলনের একটি ইতিবাচক পরিবর্তন হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।
