Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

টাকা পাচারের অন্যতম রহস্য

অবৈধ টাকার মালিক নির্বাচনকে ভয় পায়

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

টাকা পাচারের অন্যতম রহস্য

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ২০২৪ সালে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার পাহাড় জমেছে। বলা বাহুল্য, ওই বছরেরই শুরুতে ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রহসনের এই নির্বাচন শুধু নয়, গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি, সুইস ব্যাংক ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে পাওয়া যায়, রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় এবং জাতীয় নির্বাচন এলেই বাংলাদেশ থেকে বিদেশে টাকা পাচার বেড়ে যায়। টাকার মালিকদের তখন ভয় থাকে, যদি তাদের পছন্দনীয় দল ক্ষমতায় না আসতে পারে, তাহলে দেশে তাদের টাকা অনিরাপদ হয়ে পড়বে। ফলে তারা বিদেশি ব্যাংকগুলোর দ্বারস্থ হয়। শুধু ২০২৪ নয়, ২০০৭, ২০১৪ ও ২০১৮, এই তিন বছর জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অর্থ পাচার বেড়ে গিয়েছিল। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪, এই তিন নির্বাচন এক কথায় ছিল কালো টাকার মালিকদের জন্য এক ভয়াবহ আতঙ্ক। তারা ভেবেছিল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হলে এবং সেই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে তাদের সর্বনাশ হয়ে যাবে। অবৈধ অর্থ তখন সামলানো যাবে কীভাবে? রাজনৈতিক অসৎ আমলা ও সরকারের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীরা তাই এই সময়গুলোয় বিদেশে টাকা পাঠিয়েছিল দেদারসে।

শুধু নির্বাচনের বছর নয়, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণেও অবৈধ টাকার মালিকরা দেশে টাকা রাখতে চান না। কখন কী হয়ে যায়, এটাই তাদের ভয়। বস্তুত দেশে যদি সুস্থ গণতান্ত্রিক ধারার চর্চা হতো, অবৈধ উপার্জনের পথ রুদ্ধ করা করা যেত, তাহলে টাকা পাচারের প্রশ্নই উঠত না। টাকা বৈধ হলে সরকারে কে থাকল বা না থাকল, এটা কারও মাথাব্যথার কারণ হতো না। আমরা মনে করি, গণতন্ত্রের সুষ্ঠু চর্চা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত করাই বর্তমান ও আগামী দিনের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর অন্যতম দায়িত্ব হওয়া উচিত। তা যতদিন না দেখা যাবে, ততদিন বিদেশে টাকা পাচারের সব ছিদ্র বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে নির্বাচনের বছরগুলোয় বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সদাসতর্ক থেকে টাকা পাচার রোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম